ইদানীং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংশ্লিষ্ট জেলা সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলা-উপজেলা প্রশাসন অধিদপ্তরে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্র্যাটগন পুলিশ, র্যাবসহ অন্যন্যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সহায়তায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত অল্টারনেটিভ মেডিসিনে ডিগ্রীধারী চিকিৎসকদের সংগঠন “অল্টারনেটিভ মেডিসিন এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(গভঃ রেজি নং: ঢ-০৭০৪১)”র অন্তর্ভূক্ত সদস্য বিশেষ করে যারা ভারতের “দি ওপেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ফর কমপ্লিমেন্টারী মেডিসিন” এবং “অল্টারনেটিভ মেডিকেল কাউন্সিল কলকাতা” কলকাতা, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত (ওয়েব সাইট ঠিকানা http://www.amccindia.com ) এর অধিভুক্ত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান থেকে চার বছর মেয়াদী “ব্যাচলর অব মেডিসিন এন্ড ব্যাচলর অব সায়েন্স(অল্টারনেটিভ মেডিসিন)” বা এমবিবিএস(এ)/এমবিবিএস(এএম) ডিগ্রীধারী চিকিৎসক তাদের চেম্বার বা কর্মস্থলে অভিযান চালিয়ে সরাসরি তাদেরকে চিকিৎসক হিসাবে “বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল(বিএমডিসি)” এর নিবন্ধন সনদ আছে কিনা জানতে চায় এবং সংগত কারনেই তাদের কাছে বিএমডিসি’র চিকিৎসক নিবন্ধন সনদ নাই মর্মে বলার বা আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ না দিয়েই বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১০(২০, ডিসেম্বর ২০১০-এ প্রকাশিত গেজেট) এর ধারা ২২(১) ও ২৯(১) এর আওতায় উক্ত চিকিৎসকদের নামের আগে ডাঃ(ডাক্তার) পদবী ও নামের পরে তাদের কষ্টার্জিত ডিগ্রী ব্যবহার অপরাধ বলে জেল-জরিমানা করছেন এবং ভুয়া ডাক্তার আখ্যা দিয়ে সামাজিকভাবে জাতির কাছে তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হচ্ছে । যা কিনা আইনের সুনির্দিষ্ট লঙ্গন।
এখানে উল্লেখ্য, তাদের সংগঠনের পক্ষথেকে ইতিপূর্বে বিএমডিসি’র নিবন্ধনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ররাবর আবেদন করেন । আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে জানানো হয়, “এমবিবিএস(এএম/সিএম) ডিগ্রী বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধনযোগ্য চিকিৎসা শিক্ষাগত যোগ্যতা নয় বিধায় এ ডিগ্রীধারী কাউকে বাংলাদেশে চিকিৎসা কার্য পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা গেল না”।
তারপর তারা কষ্টার্জিত ডিগ্রীর বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক তাদেরকে চিকিৎসা কার্য পরিচালনার অনুমতি প্রদানের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য পুনরায় আবেদন করেন ।
কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে তাদের সংগঠনের সভাপতি বাদী হয়ে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও মহা-পুলিশ পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে একটি রিট পিটিশন( মামলা নং ৭৫৭৭/২০০৬) দাখিল করেন। এবং আদালত এই মর্মে রুল জারী করেন যে, "কমপ্লিমেন্টারী এন্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিনের চিকিৎসকদের অর্জিত ডিগ্রী অনুসারে চিকিৎসা কার্য পরিচালনার অনুমতি না দিয়ে সাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিসয়র সহকারী সচিব আলেয়া আক্তার স্বাক্ষরিত(স্মারক নং- স্বাপকম/চিশিজ/বিবিধ-১৩/২০০৫/১০৫, তাং ০৯/০৩/২০০৫) আদেশটি কেন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ দেয়া হয়নি এবং তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা এবং তদুপরি বাদীর সংগঠনের সদস্যদের তথা কমপ্লিমেন্টারী এন্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিনের চিকিৎসকদের তাদের অর্জিত ডিগ্রী অনুযায়ী নিবন্ধিত চিকিৎসক হিসাবে চিকিৎসা কার্য পরিচালনার জন্য অনুমতি কেন দেয়া হবে না_কারণ দর্শানোসহ তা জানাতে তিন সপ্তাহের রুল করেন । " এখনো পর্যন্ত বিবাদীগন উক্ত রুলের কোন জবাব দেননি ।
সংগঠনটির মহাসচিবের দাবি উচ্চ আদালেতের রুলের পর উক্ত সংগঠনের সদস্য তথা কমপ্লিমেন্টারী এন্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিনের চিকিৎসকদের তাদের অর্জিত ডিগ্রী অনুযায়ী চিকিৎসা কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনগতভাবে কোন বাধা নেই । তারই প্রেক্ষিতে সংগঠনের সদস্যাগন তাদের কষ্টার্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম হিসাবে স্ব-স্ব কর্মস্থলে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং এমতাবস্থায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক উক্ত সংগঠনের মহাসচিবসহ কয়েকজন সদস্যাকে আইনের অপব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগের মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্বে উদ্দ্যেশ্যপূর্ন হস্তক্ষেপ ও হয়রানী করা হলে তাদের সংগঠনের মহাসচিব ডা.মুহাম্মদ আবু জাহাঙ্গীর চৌধুরী পাভেল তাদের সার্বিক বিষয় অবহিত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর “পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক কোন ধরনের হয়রানী না করার আবেদন” করেন ।
তার জবাবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন শাখা-২ এর সহকারী সচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা স্বাক্ষরিত(স্মারক নং- স্বম(আইন-২) অভিযোগ-০২/২০০৮(চট্টগ্রাম জেলা)/৩৫০, তাং-২৯/০৮/২০১১) চিটিতে সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মহা-পুলিশ পরিদর্শককে এই বিষয়ে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয় ।
তা স্বত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উক্ত সংগঠনের সদস্যদের পেশাগত দায়িত্বে হস্তক্ষেপ ও হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন সংগঠনের মহাসচিব ডা.মুহাম্মদ আবু জাহাঙ্গীর চৌধুরী পাভেল । তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের দেশে কি আইনের শাসন বলে কিছু আছে? যদি থেকেই থাকে তাহলে সেই আইন কাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য? তারা কি উদ্ভাস্তু? তাদের সাথে এমন আচরণ করার অর্থ কি? তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসাবে সংবিধান কর্তৃক সংরক্ষিত মৌলিক অধিকার ও চাহিদার মধ্যে “শিক্ষা ও চিকিৎসা” অন্যতম আর তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্বও আমাদের তথা সরকারের । সুতরাং অল্টারনেটিভ মেডিসিন এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র সদস্যদেরকে এভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক হয়রানী করার মাধ্যমে দেশের আইন ও বিচার প্রক্রিয়ার কোন তোয়াক্কা না করে তার প্রতি বৃদ্বাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জনগনের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল মহামান্য উচ্চ আদালতকে কলংকিত করা হচ্ছে । সর্বপরি আইনের অপব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগ করে উক্ত সংগঠনের সদস্যদের নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।