রোদের মধ্যে রোদ হয়ে যাই, জলের মধ্যে জল, বুকেরবন্ধু একটা নিঃশূন্য অঞ্চল!! ১)
ঐ দূরে মাটির প্রদীপের মত জ্বলজ্বল করছে যে ছোট বাড়িটা তার দেউড়িতে একদা পতাকা ঢাকা এক কফিন এসেছিল, আঁধারের রাত্রি শেষে স্বৈরাচারের পতন ঘটে সেই পতাকা ঢাকা কফিনের দামে...
২)
এরপর...
কানাগলির পথে পথে বছরের পর বছরে দেয়ালজুড়ে পাল্টেছে স্লোগানের রং, যদিও স্লোগান ছিল অভিন্ন । স্লোগানকে পুজি করে লুটেরারা লুটেসে ফায়দা পাকিস্তানের তাবেদার একাত্তরের রাজাকারদের মতই যেসব বেজন্মারা মুক্তিযোদ্ধাদের করেছিল হত্যা, অত্যাচার ।
আর শকুনেরাও বারেবারে নানারূপে মেতেছে উল্লাসে, করেছে মাংস খুবলে খাবার উতসব । ত্রিশ লক্ষ শহীদের হাটা পথে চলে গ্যাছে আরো কত শত শত শব । চেতনার পথে পথে শুয়ে থাকে কত কত লাশ ।
যুদ্ধশবেদের উপর পা মাড়িয়ে স্মৃতিসৌধেও পৌছে গ্যাছে শুকরের দল । এদের পরিকল্পিত নৈরাজ্য মায়ের বুক খালি করছে, ঝরাচ্ছে মায়ের অশ্রু জল ।
তালগাছবাদী দলীয় চামচা আর চাটার দলের ক্রমাগত ধর্ষন আর শকুনের আচঁরে ছিন্ন কায়ায় পতাকাটা ভুগছে তীব্র শ্বাষ কষ্টে । নষ্টভ্রষ্ট ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের এই রক্তাত্ব কসাইখানায় কায়েম হয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের ত্রাস । জাতীয়তাবাদের নামে চলছে মৌলবাদের প্রসার ।
মৃত্যুর বন্টন চলছে সুবিধাবাদের কারখানায়, রক্ত-সেচের বাম্পার ফলন ঘরে তুলেছে নব্য জোতদার । দুর্নীতির তুষার-বল গড়াতে গড়াতে সকল ন্যায়-নীতিকে পিষ্ট করে ফেলছে ।
৩)
যে গেরিলারা এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য... সেই গেরিলারা আবার জেগে উঠছে... এবার তারা এসেছে যুদ্ধপোরাধীদের বিচারের চুড়ানত দাবী নিয়ে...
অথচ
যারা আমাদের জন্য লড়ছে আমরা ওদের জন্য কফিন নিয়ে রেডি আছি?
আমরা ফেইসবুকে রাজাউজির মারি খিস্তিখেউড় করি ।
আমারা নতুন পুরাতন সুবিধাবাদী সব থিউরির অবতারনা করি ।
আমারা তোতাপাখির মত নিজেদের এজেন্ডার প্রচার করি ।
রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য দেশকে অস্থিরতার করে তুলছি ।
চিনতে নাকি সোনার ছেলে ক্ষুদিরামকে চিনতে?
রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে মুক্ত বাতাস কিনতে ?
না, এখনো প্রান যায় নাই এই সময়ের ক্ষুদিরাম, রুমিদের । তবে সরকারের ও কপট ভণ্ড মিডিয়ার নির্লিপ্ততায় আর কিছু সময়ের মধ্যেই হয়তো একটা অঘটন ঘটে যাবে ।
আর আমরা? আমরা আঙুলচোসা বাঙালী!!! আমাদের সব শিরা উপশিরা গুলো সংকুচিত হতে হতে এখন বাড়ির পাশের শান্ত পুকুরের মত নির্লিপ্ত । কোন অন্যায় আমাদের ক্রুদ্ধ করে না, রাগিয়ে দেয় না ।
আমাদের অনুভুতির দেয়াল অবশ, আমাদের চেতনা শিহরনহীন । রাগিয়ে দেয়ার যে নার্ভ আছে সেইসব তেজি বাইসন গুলো একদম চুপ হয়ে আছে...অথচ আমাদের চামড়ার নিচে এক সময় ছিল খরস্রোতা পদ্মা মেঘনা যমুনা । তার তীরে অমিত বেগে ছুটে যেত লাল ঘোড়া ।
আমি আক্ষেপে বলি বাহ, চমৎকার যখন দেখি 'যদি তবে কিন্তু কেবলমাত্র অথচ' এইগুলো এতদিন যারা নিজ স্বার্থ প্রটেশশান দিতে ব্যান করসিলো তাদের মুখেই এখন এই সবের জয়জয়কার । থিউরি নিয়া হাজির হুজুর, সাথে সাথেই হাজির 'হুজুরের কথায় অমত কার' ।
দাবী আদায়ের আন্দোলনকে উতসবে রুপ দিয়ার পর উতসবের আড়ালে অন্যায় অবিচার গুলো ঢাকা পড়লো তখন উতসবের প্রয়োজনীয়তা শেষ? তখনই শুরু, নির্বাচনী বৈতরণী পারাপারের ঘৃন্য প্রচেষ্টা । রাজাকারদের মতই এদের গোলামি দেশটাকে করতেছে ছারখার ।
আমি ঘৃনা করি সেই সুশিল, তাঁবেদার, মিডিয়া, দ্বিমুখী ভণ্ড ফেইসবুকিষ্ট, সুবিধাবাদী রাজনৈতিকদের যারা আঁধারের ভিতর থেকে শকুনের মত সোনার ছেলেদের লাসের অপেক্ষায় আছে । ঘৃনা করি চরিত্রবিচ্যুত এই সব গিরগিটির ছলনা, ভ্রষ্টতাকে যারা অপেক্ষায় আছে রং ও ভোল পালটা্নোর ।
৪)
'দেশটা এত নীরস, এমন আনন্দহীন আর এত ডাল যে খালি হাসি পায়, বুঝলেন, ভীষন হাসি পায় ।
আর কাটা মুন্ডু হাস্তে থাকে । উচ্চগ্রামে একটি ভীষন পৈশাচিক হাসিতে সে উচ্চকিত হয় । মুন্ডুটা লাফাতে থাকে । আর পথটা ঢালু ছিল বলে সেটি গড়াতে শুরু করে ।
কাটা মুন্ডুটি
হাসতে হাসতে
গড়াতে
গড়াতে
হাসতে হাসতে
গড়াতে
গড়াতে
...............
কয়েকটা ডুমো ডুমো অতিকায় মাছি তাকে অনুসরন করে ।
'
-সঞ্জীব চৌধুরী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।