আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইরান থেকে ফেরার অপেক্ষায় হারিছ চৌধুরী

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা আবুল হারিছ চৌধুরী সরকার পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থায় অনেক রাজনীতিকের মতো তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর অনেকে দেশে ফিরলেও ফেরেননি হারিছ চৌধুরী। পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, পাঁচ বছর থেকে আত্মগোপনে থাকা হারিছ চৌধুরী বর্তমানে ইরানে রয়েছেন। এর মাঝে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে পড়ায় এ সরকারের আমলে তিনি দেশে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

হারিছ চৌধুরী বর্তমানে ইরানে তার ছোট ভাই ডা. আবদুল মুকিত চৌধুরীর আশ্রয়ে আছেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইরান থেকে তিনি দেশে ফিরবেন বলে পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে। দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে। ওই মামলাসহ আরও কয়েকটি মামলায় সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর।

সর্বশেষ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, হারিছ চৌধুরী বর্তমানে ইরানের সরকারি হাসপাতালে কর্মরত তার ছোট ভাই ডা. আবদুল মুকিতের আশ্রয়ে আছেন। ৭ ডিসেম্বর হারিছ চৌধুরীর অপর ছোট ভাই সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আবুল হাসনাত চৌধুরী ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার দাফন সম্পন্ন হয় গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর গ্রামে। লাশ গ্রামের বাড়ি আসার পর থেকে দাফন পর্যন্ত হারিছ চৌধুরী ও আবদুল মুকিত চৌধুরী ইরান থেকে ফোনের মাধ্যমে কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে।

এ সময় ফোনে হারিছ চৌধুরী কান্নাকাটিও করেন। ঘনিষ্ঠ সূত্র আরও জানায়, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হারিছ চৌধুরী গত বছর চিকিৎসার জন্য একবার লন্ডনে এসেছিলেন। ওই সময় তার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ থাকায় দেশ থেকে কয়েকজন আত্মীয়স্বজন লন্ডনে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় যুক্তরাজ্যের একটি তেল কোম্পানিতে কর্মরত ছেলে ও আইন পেশায় নিযুক্ত মেয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়। লন্ডনে অবস্থানকালীন হারিছ চৌধুরী তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু তারেক রহমান দেখা দেননি। এর আগে ২০০২ সালের দিকে হারিছ চৌধুরী আমেরিকায় গিয়ে একবার রক্ত পরিবর্তন করেন। ওই সময় চিকিৎসকরা ১০ বছর পর আবারও রক্ত পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন হারিছ : ২০১০ সালের ঈদুল আজহার পর দেশে ফিরে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হারিছ চৌধুরী। আত্মসমর্পণের জন্য দেশের শীর্ষ এক আইনজীবীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগও করেন।

কিন্তু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে তাকে আসামি করায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে হারিছ চৌধুরীর দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণের পরিকল্পনা রয়েছে। হারিছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যেভাবে দেশ ছাড়েন হারিছ চৌধুরী : ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির সপ্তাহখানেক পর স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসেন হারিছ চৌধুরী। ওইদিন বাড়ির পাশের জকিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারে ইছামতি টাইটেল মাদরাসায় বক্তব্য রেখে তিনি বাড়ি ফিরে যান।

রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসায় যৌথবাহিনীর অভিযানের কথা জানান। এ খবর পেয়ে হারিছ চৌধুরী স্ত্রীকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন। এর কয়েক ঘণ্টা পর যৌথবাহিনী তার বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে পায়নি। এরপর কয়েক দিন সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ভারতের কাছাড়ে নানাবাড়ি চলে যান তিনি। সেখান থেকে পরে পাকিস্তান হয়ে ইরানে ভাইয়ের কাছে পেঁৗছেন।

হারিছ চৌধুরীর বর্তমান অবস্থান নিয়ে সিলেটে নানা জল্পনা-কল্পনা থাকলেও এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তার চাচাত ভাই কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আত্মগোপনে যাওয়ার পর থেকে হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে কারও কোনো যোগাযোগ নেই। Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.