পাখি এক্সপ্রেস
ভাষা সৈনিক (!!) অধ্যাপক গোলাম আজম একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি প্রায় ৩বার শহীদ হন এবং একবারতো বেহেশতের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তান সরকার আবার সেখান থেকে ফিরিয়ে আনে। বলা বাহুল্য, সেই যে অলক্ষী ভর করেছে, স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও তিনি বেহেশতে যেতে পারেননি। কিছুদিন হলো তার বেহেশতে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আসুন আমরা সবাই মিলে তার বেহেশত যাত্রা ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করি।
আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি অধ্যাপক গোলাম আজমের ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ভূমিকা। একবার সে ভূমিকায় নজর বুলিয়ে নিই। এটা উনার সামান্য কিছু অমৃত বচন। বেশি কিছু না-
১২ এপ্রিল ১৯৭১, বায়তুল মোকাররম, বাংলাদেশ
গোলাম আজমের নেতৃতের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মিছিল বিরোধী বের হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে থেকে।
মিছিলে বহন করা পোস্টার, ফেস্টুনে লেখা ছিলো "দুষ্কৃতিকারীরা দূর হও" "মুসলিম জাহান এক হও" "পাকিস্তানকে রক্ষা কর"। "পাকিস্তান জিন্দাবাদ, কায়েদে আযম জিন্দাবাদ। " "পাকিস্তানের উৎস কি- লাইলাহা ইল্লাল্লাহ। " "মিথ্যা প্রচার বন্ধ কর। " "ব্রাক্ষ্মবাদ নিন্দাবাদ, সাম্রায্যবাদ মূর্দাবা”।
" মিছিলে পাকিস্তানের জন্য মুনাজাতও করেন গোলাম আজম।
১৮ জুন ১৯৭১, লাহোর, পাকিস্তান
লাহোর বিমানবন্দরে গোলাম আজম বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা এখনো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত।
১৯ জুন ১৯৭১, লাহোর, পাকিস্তান
প্রেসিডেন্ট ইহায়িহা খানের সাথে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, "কেবলমাত্র দেশপ্রেমিক জনগনের সাহায্যে দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহত করা যেতে পারে। (এ দেশপ্রেমিকরাই রাজাকার, আল বদর, আস শামস)
২২ জুন ১৯৭১, করাচী, পাকিস্তান
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দুষ্কৃতিকারী ও রাষ্ট্র বিরোধী হিসেবে আখ্যা দেন।
৪ আগস্ট ১৯৭১, খুলনা, বাংলাদেশ
এক সভায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুষ্কৃতিকারী বিচ্ছিন্নবাদীদের নির্মূল করার আহবান জানান।
১৬ আগস্ট ১৯৭১, লাহোর, পাকিস্তান
গোলাম আজম বলেন, পাকিস্তানের সামনে একটি পথই খোলা আছে। তা হচ্ছে অস্ত্রের মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারীদের জবাব দেয়া।
২৬ আগস্ট ১৯৭১, পেশোয়ার, পাকিস্তান
গোলাম আজম বলেন, দুষ্কৃতিকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের ধ্বংস করার জন্য সশস্ত্রবাহিনীকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগন পূর্ণ সহযোগিতা করছে।
নভেম্বর ৩য়/৪র্থ সপ্তাহ, লাহোর, পাকিস্তান
পূর্ব পাকিস্তানের শান্তি রক্ষার্থে শান্তি কমিটির সদস্য ও রেজাকারদের উন্নত অস্ত্রসস্ত্রে প্রশিক্ষিত ও সজ্জিত করার দাবি জানান।
২৬ নভেম্বর ১৯৭১, রাওয়াল পিন্ডি, পাকিস্তান
রাজাকারদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, যদি তাদের হাতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র তুলে দেয়া হয়, তাহলে তারা দুষ্কৃতিকারীদেরকে নিজেরাই খতম করে দিতে পারবে।
২৭ নভেম্বর ১৯৭১, রাওয়াল পিন্ডি, পাকিস্তান
গোলাম আজম পাকিস্তান সরকারকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা দুষ্কৃতিকারী বিচ্ছিন্নবাদীদের বিরুদ্ধে সরকারের সাথে সহযোগিতা করছি।
১ লা ডিসেম্বর ১৯৭১, রাওয়াল পিন্ডি, পাকিস্তান
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে ৭০ মিনিট বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিবাহিনীকে শত্রুবাহিনী আখ্যায়িত করে গোলাম আজম বলেন, "এদেরকে ধ্বংস করার জন্য রাজাকার বাহিনীই যথেষ্ট। "
অধ্যাপক গোলাম আজম না থাকলে হয়তোবা এদেশে মুক্তির পায়রা উড়তো না। ৩০ লক্ষ শহীদ পেতাম না, ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম ক্ষতবিক্ষত হতো না, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পেতাম না, এমনকি হয়তো বা ১৬ ডিসেম্বরও পেতাম না।
এ মহান ব্যক্তিকে সম্মাননা দেয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, আমরা চাই অতিদ্রুত তা বাস্তবায়িত হোক। বলাতো যায় না, হুজুর কবে আবার পটল তুলে বসেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।