এই ব্লগটি নোমান বিন আরমান'র দায়িত্বে প্রবর্তিত। এখানে মাঝেমধ্যে তিনি আসেন। numanbinarmanbd@gmail.com নোমান বিন আরমান : টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। যৌথ সমীা করে সরকার এতে বিনিয়োগ করবে, না হয় ভারত থেকে হিস্যা নিবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীল সদস্য, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের চেয়ে দেশ এখন ভালো আছে।
জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে। সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কৃষি উৎপাদন, জিডিপি বেড়েছে। আগামিতে ৭ শতাংশের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ সব মিথ্যে কথা।
২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নব গঠিত কমিটি আয়োজিত বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এর সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের যৌথ পরিচালনা জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন রেলমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, সংসদ সদস্য এমএ মান্নান, মুহিবুর রহমান মানিক, ইমরান আহমদ, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সৈয়দা জেবুননেছা হক, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানসহ সিলেটে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। সিলেট সিটি পয়েন্টে আয়োজিত বিকেলের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারা দেশেই উন্নয়ন হচ্ছে।
এমন উন্নয়নের নজির আর কোনো সরকার করতে পারেনি। বিএনপি নেত্রী ২ বারে ১০ বছর মতায় ছিলেন, বিদ্যুতের কোনো উন্নয়ন করে যেতে পারেননি। আওয়ামীলীগ এবার মতায় এসে প্রথম তিন বছরে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছে। এই উৎপাদন প্রক্রিয়া আরও বাড়বে। ২০১৪ সালের পর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সঙ্কট থাকবে না।
বিদ্যুতের উন্নয়ন নিশ্চিত করা গেলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। সম্ভব হবে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার।
টিপাইমুখ ইস্যু সম্পর্কে তিনিই প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলেন দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০২ সালে আমিই এই ইস্যুটি নিয়ে আন্দোলন করি। তীব্র প্রতিবাদের মুখে ভারতের প থেকে বলা হয় বাংলাদেশের তি হবে এমন কিছু ভারত বরাক নদীতে করবে না। এবার মতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফলে গেলে মনমোহন সিং তাকে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশের তি হয় এমন কোনো কিছু টিপাইমুখে করা হবে না।
তাই টিপাইমুখ নিয়ে অযথা মাঠ জয়ের চেষ্টা না করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এই বাঁধ নিয়ে য়ৌথ সমীা চালাবো। এরপর এখানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশের প থেকে বিনিয়োগ করবো না হয় হিস্যা নেবো।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নবগঠিত রেলমন্ত্রণালরে মন্ত্রী আওয়ামীলীগের উদষ্টোমন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে বিএনপি মিথ্যা প্রচাণা চালিয়ে সিলেটবাসীর মনজয়ের চেষ্টা করেছে। এ ইস্যুতে সিলেটে ডাকা বিএনপির ১ ডিসেম্বরের হরতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী একদিকে টিপাই ইস্যুতে আপনাদের দিয়ে হরতাল করান, অন্যদিকে তলে তলে এই বয়েসেও তিনি চিঠি লিখেন। হরতাল করে বা লংমার্চ-শর্ট মার্চ করে টিপাইমুখ বাঁধ রা করা যাবে না, যদি যায় তাহলে কোথায় পর্যন্ত মার্চ করলে বাঁধ বন্ধ হবে তা জানাতে তিনি মার্চকারীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এটা সম্ভব হলে আমাদেরও বলুন, আমরাও মার্চে অংশ নেব।
টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরাতা চালানোর আহবান জানিয়ে বলেন, এই বাঁধ হলে সুরমা-কুশিয়ারা, বৃহত্তর সিলেট ও ভাটি অঞ্চলের তি হবে। টিপাইবাঁধ ইস্যুতে সিলেটবাসীর আন্দোলনে আওয়ামীলীগ পাশে থাকবে বলে তিনি অঙ্গিকার করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ বলেন, ৭১-এ পরাজিত শক্তিরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এদের দমাতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের জাগ্রত হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিস্পন্ন হলেই বিজরে আনন্দ যথার্থ হবে। এদের বিচার নিশ্চিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
সিলেটের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা উলেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকে প্রচার করে থাকে সুরমা নদীর কাজিরবাজার ব্রিজ নাকি আওয়ামীলীগ করছে না। এটা ঢাহা মিথ্যাচার দাবি করে তিনি বলেন, এই ব্রিজ বাদ দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু যখন দেখলাম এখানে ২১ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ব্যবহার হয়ে গেছে। অপব্যয় করা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকার। তাই এ প্রকল্প আর বাদ দেওয়ার উদ্যেগ না নিয়ে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এর সাথে আম্বরখানা পর্যন্ত ফাইওভার নির্মাণের প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছে। আগে ব্রিজের কোনো নকশা ও পরিকল্পনা ছাড়াই টাকা খরচ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, নতুন করে ব্রিজের নকশা করা হযেছে এর সাথে যুক্ত রাস্তার উন্নয়ন ও আম্বরখানা ফাইওভার প্রজেক্ট গ্রহণ করায় টোটাল প্রজেক্টের বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শহরের ভেতর থেকে জেলখানা সরিয়ে বাধাঘাটে স্থানান্তর হচ্ছে। বর্তমান জেলখানাকে পার্কে রূপান্তর করে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। যাতে বিনোদন ও মুক্ত স্থানে বাতাস গ্রহণের সুযোগ পান সিলেটবাসী।
গত ১৮ ডিসেম্বর দণি সুরমায় বাসে অগ্নিসংযোগ ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে। মানুষের শান্তির জন্য সংগ্রাম করে। মানুষ মারার রাজনীতি মানুষের কাজ হতে পারে না। এটাকে শতবার ধিক। তিনি বলেন, জ্বালাও-পোড়াও আর ভাঙচুর ও মানুষ হত্যার রাজনীতি আওয়ামীলীগ বিশ্বাস করে না।
আওয়ামীলীগের রাজনীতি, উন্নয়নের রাজনীতি। ২০০৮ এর আগে মানুষ এমন চরম এক ধংসাত্মক পরিবেশে বাস করছিলো। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কাছে শান্তিকামী মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছিলো। একারণে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের মানুষ আওয়ামীলীগকে ১৯টি আসনই উপহার দিয়েছিলো। বিএনপি-জামায়াত এর থেকে কোনো শিা না নিয়ে আবারও হিংসাত্মক রাজনীতি, মানুষ হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে।
তাদের এ অপতৎপরতা বন্ধে আওয়ামীলীগ কর্মীদের ঐক্যবব্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন বলেন, নেত্রীকে বলেছি, আমি প্রথমে সিলেটের মন্ত্রী, তারপর সারা দেশের মন্ত্রী। সিলেটের মানুষের প্রতি দায়বোধ থেকে বলছি, ট্রেনে যাতে ৫-৬ ঘন্টায় ঢাকা পৌঁছতে পারেন তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সিলেটের জন্য আলাদা একটি ট্রেন সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয় হয়েছে। এটির নাম প্রস্তাবানার জন্য তিনি চিন্তাভাবনা করার আহবান জানিয়ে বলেন, কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল ও ভৈরব-আখাউড়া এই ৪ স্থানে স্টপেজ দিয়ে এটি ৫-৬ ঘন্টায় ঢাকা পৌঁছে যাবে।
আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে সিলেটের মানুষ ১৯টি আসনই ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে উপহার দিয়েছে। যুদ্ধাপরাধী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ও সহযোগীদের বিচার করতে আগামি নির্বাচনেও আওয়ামীলীগকে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার আহবান জানান তিনি।
নোমান বিন আরমান : স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক সবুজ সিলেট ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।