খেলতে ভালোবাসি ..... খেলাতেও
হিটলার, সারা বিশ্বে এক পরিচিত নাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষ শক্তির নেতৃত্বদানকারী এই রাষ্ট্রনায়ক একই সাথে সম্ভবত সারা বিশ্বে সবচেয়ে ঘৃনিত ব্যক্তি হিসেবেও পরিচিত। তিনি যেমন ঘৃণিত তেমনি তার পার্টি নাৎসি পার্টিও প্রবল ঘৃণার পাত্র ইউরোপসহ সারা বিশ্বেই।
হিটলারের স্বপ্ন ছিল সারা বিশ্ব শাসন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত জার্মানিকে বিশ্বের বুকে একমাত্র ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে দেখাটাই ছিল তার স্বপ্ন।
উচ্চাভিলাষী শব্দটা কম হয়ে যায় হিটলারের জন্য। হিটলার গোটা জার্মান জাতিকে একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী জাতি হিসেবে প্রস্তুত করার চেষ্টা করে এবং অনেকাংশে সফলও হয়। ব্লু ব্লাড বা নিজেদে আর্য মনে করার এই সকল প্রবনতা তা ফ্যাসীবাদ নামেই অধিক পরিচিত।
আজকের পোস্ট মূলত না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে না নাৎসিবাদ নিয়ে এমনকি হিটলারকে নিয়েও না। এটা মূলত হিটলারের হারিয়ে যাওয়া একটি টয়লেট নিয়ে।
টয়লেটটা পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ফ্লোরেন্স শহরে। অনেক জল্পনা-কল্পনা ও যাচাই বাছাইয়ের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে টয়লেটটা আছে এই ফ্লোরেন্স শহরের এক অটোশপে।
কিভাবে এই টয়লেট সেখানে গেল তা জানার আগে জানা দরকার এটা যে আসলেই হিটলারের টয়লেট তার নিশ্চয়তা কি ? প্রশ্ন ওঠে যদিও বা সেটা হিটলারের টয়লেট হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির এক অখ্যাত শহরের অখ্যাত অটোশপে সেটা কিভাবে গেল !
শতভাগ নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারেনি। কারণ এই টয়লেট হিটলারকে কেউ ব্যবফার করতে দেখেনি। এ ধরনের কোন ছবিও পাওয়া যায়নি।
টয়লেটের মালিকের ভাষ্যমতে টয়লেটটি এসেছে হিটলারের মালিকানাধীন সমসাময়িককালের সর্ব বৃহৎ ইয়ট AVISO GRILLE থেকে।
প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ফুটের মাঝামাঝি দৈর্ঘ্যের এই জাহাজ সেই সময়কালের সর্ব বৃহৎ ইয়ট ছিল। হিটলার চেয়েছিলেন দখলের পর এই ইয়টে করে লন্ডনের টেমস নদী পারি দেবেন এবং সেই পথে উইন্ডসর প্রাসাদে বসবাসের জন্যে পৌছাবেন। যদিও তার এই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।
এই জাহাজটির আরেকটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব হচ্ছে এই জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে হিটলারের গ্রান্ড এডমিরাল কার্ল ডোনিটজ জার্মান ফুয়েরার হিটলারের জীবনাবসানের সংবাদ দেন এবং জারমানির নেতৃত্ব গ্রহন করেন।
বিশ্বযুদ্ধ যখন শেষ হয়ে যায় তখন এই ইয়ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ে যাওয়া হয় এবং নানা হাত ঘুরে এটি গিয়ে পৌছায় শিপইয়ার্ড মালিক হ্যারি ডনের নিকট। হ্যারি এই জাহাজটিকে যাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন। পচিশ সেন্ট দর্শনীর বিনিময়ে তিনি সর্বকালের কুখ্যাত এই নেতার স্মৃতিচিহ্ন জনসম্মুখে প্রদর্শন করেন।
যদিও তার উপরি উপার্জনে বাগরা বাধায় ফেডারেল সরকার, তারা হিটলারের এই স্মৃতিচিহ্ন যা কি না মানুষকে হিটলারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলতে পারে বলে তারা ধারনা করেছিল, ধ্বংস করে ফেলার নির্দেশ দেয়। ১৯৫০ সালে ইয়টটি ধ্বংস করে ফেলা হয়।
যদিও এ সময় ইয়টের নানা উপাদান তার নির্মাণ শৈলী এবং সৌন্দর্যের কারনে সংরক্ষন করেন হ্যারি। জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে পরে আরেকটি জাহাজ তৈরী হলেও এর কিছু অংশ অব্যবহৃত রয়ে যায়। এছারাও এটা যখন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসে তখনই এর নানা খন্ড নানাজনকে দিয়েও দেয়া হয়।
জাহাজের টয়লেটটি নানা হাত ঘুরে এসে পৌছায় ফ্লোরেন্স অধিবাসী অটো মেকানিক গ্রেগ কোফেল্ডের কাছে। টয়লেটের নানা বৈশিষ্ট্য থেকেই সনাক্ত করা গেছে এটা সেই ইয়টেরই।
বর্তমানে এটি একটি বিখ্যাত স্থানে পরিণত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন ট্রাভেল গাইডে এটিকে রোডসাইড মিউজিয়াম হিসেবে চিহ্নিত করা আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।