কে্উ তো এক বারও বলেনি,কেউতো একবারও ভাবেনি
হিটলারের শারীরিক অবস্থা বেশ নাজুক ছিল। তার শরীরে ৮২ ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হতো। আর বান্ধবী ইভা ব্রাউনের সঙ্গে কাটানো দিনগুলোতে ভায়াগ্রার আদি ধরণ- টেস্টোস্টেরন নির্যাসও ব্যবহার করতেন তিনি। সম্প্রতি ইতিহাসবিদ হেনরিক এবারলে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক হ্যানস-জোয়াচিম নিউম্যান জানিয়েয়েছেন নতুন এই তথ্য।
এই দুই গবেষক সম্প্রতি যৌথভাবে লেখা ‘ওয়াজ হিটলার ইল?’ নামে বইতে বলেছেন, হিটলারের পৈশাচিক ব্যবহারের জন্য কমবেশি দায়ী ছিল নাজুক শারীরিক অবস্থা।
হিটলারের চিকিৎসাবিষয়ক কাগজপত্র এবং তৎকালীন সেনাবাহিনীর দলিলপত্র ঘেঁটে গবেষকদ্বয় এ দাবি হাজির করেছেন। হিটলারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. থেওদোর মোরেলের কাগজপত্রও খতিয়ে দেখেছেন লেখকদ্বয়। ডা. মোরেল উচ্চ শ্রেনীর নাৎসীদের অনেকের কাছে বিশেষ পাত্তা না পেলেও হিটলার তাঁকে বিশ্বাস করতেন। তিনি প্রায়ই মোরেলের শরণাপন্ন হতেন। বইতে বলা হয়েছে, ডা. মোরেলের দলিলপত্র সাক্ষ্য দিচ্ছে, বড়ি খেতে হিটলারের ভীতি ছিল।
তাই বেশিরভাগ ওষুধই হিটলারকে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করতেন ডা. মোরেল। গবেষকরা লেখেন, ১৯৪৪ সালে হিটলারকে ইনজেকশনের মাধ্যমে টেস্টোস্টেরন ও এক ধরনের মিশ্রণ দেওয়া শুরু করেন ডা. মোরেল। কয়েকটি ষাঁড়ের প্রোস্টেট গ্রন্থি ও বীর্য থেকে ওই মিশ্রণটি তৈরি করা হয়। হিটলার বিশ্বাস করতেন, এর মাধ্যমে তিনি সজীব থাকবেন এবং তাঁর চেয়ে অনেক কম বয়সী ইভাকে সঙ্গ দিতে পারবেন। তবে হিটলার এ বিশ্বাস নিয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকেননি।
তার পরের বছরই বার্লিনে একটি বাঙ্কারের মধ্যে এক সঙ্গে আত্দহত্যা করেন হিটলার এবং ইভা।
গবেষকরা বলেছেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় ছিল হিটলারের মনে। তিনি উচ্চ রক্তচাপসহ পেশী-সংকোচন ও মাথা ব্যাথায় ভুগতেন। তাঁর কণ্ঠনালী থেকে বেশ কয়েকবার পলিপস (অতিরিক্ত মাংসপেশী) কেঁটে ফেলা হয়। নতুন এ গবেষণা বলছে, হিটলার মারাত্দক পেটের গ্যাসেও ভুগতেন।
এর জন্য তিনি ‘প্রচুর’ পরিমাণে অ্যান্টি-ফ্লাচুলেনস ওষুধ খেতেন। এর মধ্যে স্ট্রাইচনাইনের মতো প্রাণঘাতী উপাদানও থাকতো কিছু পরিমাণ। ডা. মোরেল অল্প পরিমান অ্যামফেটামাইম দিতেন হিটলারকে। অ্যামফেটামাইম হলো এক ধরনের মাদক এবং এটি মোহাবেশ তৈরি করে। এ ছাড়া গ্লুকোজ, ইনজেকশনের মাধ্যমে মেথামফেটামাইন, বারবিচুরেটস (স্নায়ুর প্রশান্তি বা ঘুমের সহায়ক), ওপিয়েটস (ব্যথা উপশমের জন্য) এবং নানারকম অন্যন্য ওষুধ দেওয়া হতো হিটলারকে।
যুদ্ধের সময় এক পর্যায়ে দিনে ২৮ রকমের ওষুধও নিতেন হিটলার। ওষুধ ব্যবহার বাড়তে বাড়তে একসময় দাড়ায় মোট ৮২ রকমে। বার্লিনের চ্যারিটি ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হ্যানস ও তার সঙ্গী লেখক উপসংহারে বলেছেন, হিটলার পারকিনসন’স অসুখে ভুগতেন। কিন্তু তাঁরা আবার এও বলেছেন, ‘কোনো সময়ই হিটলার বিভ্রমে ভোগেননি। সূত্র: স্কটসম্যান অনলাইন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।