আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিরে পাওয়া ভালবাসা (শেষ খন্ড)

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! ১ম খন্ড “হোয়াট” ? কথাটা সবাই একসাথে বলল । “কোথায় ?” “ কদিন আগে আমাদের অফিসে যে নতুন ১০ জন জয়ে জয়েন করেছে । মেয়েটা তার মধ্যে আছে” । “তো আপনি কি করলেন?” “কি করবো আমি? প্রথমে ভেবেছিলাম মেয়েটা আমাকে চিনতে পারবে না । কিন্তু সে আমাকে চিনেছে ।

এবং আগের মতই আমাকে দেখলে তার চোখমুখ শক্ত হয়ে যায় । তারমানে সে আমাকে এখানে ঠিক নিতে পারছে না। আমাকে দেখলে তার অস্বস্তি শুরু হয়। তাকে দেখলে আমিও সুস্থির থাকতে পারি না । তাই আমি ঠিক করেছি আর চাকরি করবো না।

“ রফিক ভাই বলল “চাকরি কেন ছাড়বে? তুমি তাকে বল তোমার কথা গুলো । তোমার ফিলিংস গুলো তাকে বোঝাও। “ “ না । সে আমাকে ঠিক পছন্দ করে না । বলে লাভ হবে না ।

সে বিব্রতই হবে কেবল। “ “ অপু ভাই” লিনা বলল “আপনি যদি আমার জন্য এরকম ভাবে দাড়িয়ে থাকতেন তাহলে আমি কবে আপনার গলায় ঝুলে পড়তাম । ঐ মেয়েটা আসলেই একটা ইডিয়েট । আচ্ছা মেয়েটার নাম তো আপনি এখন জানেন?” “ হু জানি। “ “আমাকে নামটা বলেন কানে ধরে ঐ ইডিয়েট মেয়েটাকে নিয়ে আসবো আপনার কাছে।

“ আমি হাসি । সাথে সবাই হেসে ওঠা । আড্ডা শেষ হয় । কি সেই দিন গুলো ছিল । আমার মনের মাঝে এখনও জলজল করে ।

সব কিছু শয়ে যাচ্ছিল তখনই দেখা হল আবার । আমার এখনও ঠিক বিশ্বাসই হয় না তনুকে আমি আবার দেখতে পাবো । আমার অফিসে আমার আন্ডারেই সে জয়েন করবে । তনু কি আমাকে পছন্দই করে না ! তাহলে এতো বিব্রত থাকে কেন আমার সামনে এলে । ঠিক ওকে আর বিব্রত করবো না ।

কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে দেব । পরদিন অফিসছুটির পর লিনা আমার কাছে এলো । ওর মুখটা কেমন হাসি হাসি । “কিছু বলবে?” “হু” । ও হাসল ।

“আপনার সেই ইডিয়েট মেয়ের খোজ পেয়েছি” । আমি চমকালাম । “কিভাবে”? লিনা আবার হাসল । “সে নিজেই বলেছে । আপনি চাকরি ছেড়ে দিবেন শুনে খুব আপসেট ।

আপনার সাথে কথা বলতে চায়” । আমি খানিকটা অবাক হলাম । আমি আনন্দিত হলাম খুব । লিনার সাথেই অফিস ক্যান্টিনে গেলাম । তনু বসে ছিল ।

খানিকটা মাথা নিচু করে । লিনা চলে গেল আমাদের রেখে । কিছুক্ষন কোউ ই কোন কথা বললাম না । আসলে কি বলবো বুঝতেই পাচ্ছিলাম না । তনুই আগে কথা বলল ।

“আপনি প্লিজ চাকরিটা ছাড়বেন না। আমার কারনে কেউ চাকরি ছেড়ে দেবে এটা ভাবতে আমার খুব খারাপ লাগছে” । “কি করবো বলুন ? পরিবেশটাই তো এমন হয়ে গেছে । আমার কারনে আপনি অস্বস্তিতে পড়ছেন । এটা ভাবতেও তো আমার ভাল লাগছে না” ।

মনে হল তনু কথা খুজে পাচ্ছে না যে কি বলবে । কিছুক্ষন পর আমি বললাম “আচ্ছা আপনি সেদিনের পর আর বাসস্ট্যান্ডে আসেন নি কেন? তনু এই প্রথম আমার দিকে তাকাল । “আমরা বাসা বদলেছিলাম । আর কাল আপনি একটা কথা ঠিক বলেন নি” । “কোন কথাটা?” “আমি আপনাকে দেখে বিরক্ত হতাম না” ।

কথাটা বলেই তনু মাথা মানিয়ে ফেলল । যেন খানিকটা বিব্রত হল । কিংবা লজ্জা পেল । আর আমি হলাম বিশ্মিত ! “সত্যি আপনি বিরক্ত হতেন না?” তনু এবার মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিল । বলল “আমি প্রথমে বুঝতেও পারি নি ।

প্রথম প্রথম নিজের কাছেই মনে হত যে আমি বিরক্ত হচ্ছি । মনে হত একটা ছেলে কেন আমার পিছন পিছন প্রতিদিন আসবে । কিন্তু বাসা বদলানোর পর যখন আর আপনাকে দেখলাম না তখন আমার ভুল ভাঙ্গল । তখন মনে হচ্ছিল ঐ ছেলেটা কেন আমার পিছন পিছন আসছে না? কি অদ্ভুদ মানুষের মন ! আমি নিজের আচরনে নিজেই অবাক হচ্ছিলাম” । এইটুকু বলে তনু থামল ।

আমার কিছু বলা উচিত্ । কিন্তু কোন কথাই মনে আসছিল না । তনু আবার বলা আরাম্ভ করল । “তারপর এই অফিসে জয়েন করলাম । নিলা যখন আপনার কেবিনে নিয়ে গেল আমি এতো বড় একটা ধক্কা খেলাম ।

আপনিও বোধহয় অবাক হয়েছিলেন খুব তাই না?” আমি বললাম “আমি কখনও ভাবতে পারি নি আপনার সাথে আবার আমার দেখা হবে । এখানে দেখা হবে” । তনু হাসল । “আমিও কি ভেবেছি । কিন্তু একটা ব্যপারে আমার খারাপ লেগেছে” ।

“কি? কোন ব্যপারে?” “আমি এখানে জয়েন করার পরেও কিন্তু আপনি আমার সাথে একটা কথাও বলেন নি । সবার সাথে আপনি কি সহজ আচরন করতেন কেবল আমি আসলেই আপনার আচরন বদলে যেন । অবাক হতাম । খারাপও লাগতো । একবার সহজ ভাবে কি কথা বলে যেত না??” আমি হাসি বোকার মত ।

তারপর আরকেউ কোন কথা খুজে পাই না । একটু পর তনু উঠতে চাইল । “যেতে হবে সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে” । আমি একটু হাসলাম । ও উঠে গেল ।

যাওয়ার আগে কেবল একটা কথা বলল “আপনি প্লিজ চাকরিটা ছাড়বেন না । প্লিজ” । ও চলে গেল । আমি বসে রইলাম কিছুক্ষন । তারপর কি মনে হল ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে তনুর পিছু নিলাম ।

ঐ তো অফিসের সামনেই ও বাসের জন্য ওয়েট করছে । ওর পাশে গেলাম না । একটু দুরে দাড়াল । আজ বহু দিন পর আবার সেই অনুভুতিটা ফিরে এল । ঠিক আগে যেমনটা হত তনুর পিছু নেবার সময় হত।

তনুর পিছন পিছন বাসে উঠলাম । আগের মতই । কিন্তু আজ একটা পরিবর্তন হল । আগে তনু মহিলা ছিটে বসত । আজও পিছন দিককার একটা ডাবল সিটে বসল ।

আমি পড়লাম দ্বিধায় । কি করবো এখন ? ওর দিকে চোখ পড়তেই ও হাসল । অদ্ভুদ এক চোখে হাসল । আমি আস্তে আস্তে গিয়ে ওর পাশের সিটটাতে বসলাম । জীবনটা হঠাত্ করেই কেন জানি বড় সুন্দর মনে হল ।

(সমাপ্ত) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.