Dream Today,Create Tomorrow........
আজ লিখতে বসে মনে হলো অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি..............
আজ কত মনে প্রানে চাই সে দিন গুলোকে ফিরে পেতে কিন্তু পারছি না পেতে।
খুব কষ্ট লাগে মাঝে মাঝে জীবনটা এমন কেন? বন্ধন কখনোই পুরনো হয় না,ভালোবাসা কখনোই মরে যায় না,তা যেই সম্পর্কই হউক না কেন। যার জন্য-ই আমি আজো স্বপ্ন দেখি। যারা আজ আমার এই স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের কাছে আমি চিরঋণী। সেই দুজনের একজন আমার বাবা।
যিনি হয়তো এই পৃথিবীর মানুষের কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ কেউ না কিন্তু আমার কাছে তিনিই আমার পৃথিবী। তাকে নিয়েই আজ আমার কিছু কথা............................ কিছু স্মৃতি সবার সাথে শেয়ার করা।
ছোটবেলায় যখন গ্রামে থাকতাম,তখন আমার একটা অভ্যাস ছিল ভোরে ঘুম থেক উঠে সাবার জুতা জোড়া সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। আমি ছোটবেলায় হাঁটতে চাইতাম না। কোলে উঠতে চাইতাম।
যদি কোলে না নিতো তখন রাস্তায় বসে থাকতাম। এমনও হইছে বাবা হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে গেছে কিন্তু পিছনে ফিরে দেখে আমি দূরে রাস্তায় বসে আছি। তখন বাবা আবার পিছনে এসে আমায় কোলে নিয়ে বলতো "আর নতুন জুতা কিনে দিবো না কিন্তু" বাবা-মা আজও আমায় যখন সেই কথা বলে চোখের সামনে অস্পষ্টভাবে ভেসে উঠে সেই দিনগুলোর ছবি।
আগে একটা রুটিন ছিল বাবার সাথে ফযরের নামায পড়ে প্রাতভ্রমনে বের হওয়া। আমায় সাথে নিয়ে না গেলে যেনো তার হাঁটার স্বাদ পূর্ণ হয়না।
তাই আমি ঘুম ঘুম চোখে বাবার হাত ধরে যেতাম মসজিদে তারপর ভ্রমনে। এমনও হইছে মসজিদে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি তারপর বাবা আমায় ঘুম থেক উঠিয়েছেন এবং আমায় সাথে নিয়ে গেছেন। প্রাতভ্র্রমন শেষ করে একসাথে নদীতে গোসল করতে যেতাম। শীতকালে আমি সারাক্ষন নদীর পাড়ে বসে থাকতাম ঠান্ডা পানির ভয়ে। বাবা বার বার বলতো আয় তাড়াতাড়ি আমি কিন্তু চলে যাচ্ছি।
যখন দেখতাম বাবার গোসল প্রায় শেষ তখন ঝুপ করে নেমে দুটো ডুব দিয়ে উঠতাম। তখন বাবা আমায় বলতো তোর গোসল তো হয়নি এটা তো কাউয়া গোসল (কাকের মতো যে গোসল আর কি)।
প্রথম যেদিন স্কুলে গেলাম সেদিন বাবা আমায় নিয়ে গেল। পরের দিন বাবা আমায় নিয়ে যাচ্ছে আমিও মহা আনন্দে আগে আগে হাঁটছি কারন আমি তো জানি বাবা আমার পিছনে আছে ই। কিছুক্ষন পর কি মনে করে তাকিয়ে দেখি বাবা নেই।
কোথায় গেল?? খুঁজে না পেয়ে নিজে নিজে স্কুলে চলে গেলাম। পরে বাসায় আসার পর বাবা মা কে বলছে "তোমার ছেলের সাথে আমার আর যাওয়ার দরকার নেই ও একাই যেতে পারে,আজ একা একা গেলো তো"
প্রতি ঈদে বাবা আর আমি একসাথে নামাযে যেতাম। নামায পড়ার পর দু'জন কোলাকুলি করতাম। যদি এই কাজটা না করতে পারতাম তবে মনে হতো ঈদ ই হয়নি। এখন জীবনের প্রয়োজনে ঈদ সবগুলো বাবা-মা'র সাথে করা হয় না।
যখন নামাযের সালাম টা ফিরাই তখন ভীষন অনুভব করি বাবর বুকের উঞ্চ স্পর্শ।
আমার কোন ভাইবোন না থাকায় আমার বন্ধু,অভিভাবক,আদর,শাসনকর্তা বলতে আমার বাবা-মা ই সব। তাদের নিয়ে এতো স্মৃতি তা পর্ব আকারে লিখা যাবে। কিন্তু যে ভালোবাসা আমার রক্তে প্রতি অণুতে মিশে আছে তার বহিঃপ্রকাশ লিখার চেয়ে কর্ম দ্বারই করতে চাই তাই আপনাদের কাছে বলছি যে- তাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে তারা সুস্থ,সুন্দর থাকে। তাদের জন্য যেনো আমিও কিছু করতে পারি যেমনটি তার আমার জন্য করেছিল এবং এখনও করছে।
কোনদিনই পারবো না তাদের ঋণ শোধরাতে কিন্তু নিজের সাধ্যমত সকল চেষ্টা করার মন মানুষিকতা,সামর্থ্য যাতে আল্লাহ সবসময় ই রাখে সে জন্য আমায় দোয়া করবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।