রোদ ভেঙ্গেছে আজ। তরুণ লেখক প্রকল্প :-বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা থেকেই জাতীয় আশা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে ঐতিহ্যভিত্তিক একটি নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরি এবং বাংলা সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করে আসছে। ‘তরুণ লেখক প্রকল্প’ সে ধরনেরই একটি উদ্যোগ। অনূর্ধ্ব ৩৫ বছরের তরুণ লেখকদের আত্মপ্রকাশের সুযোগ প্রদান, বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি বিশ্ব সাহিত্যের সমকালীন ও চিরায়ত সাহিত্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, তাঁদের মানসিক দিগন্ত প্রসারিত ও সুস্থ সাহিত্য সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা, আধুনিক মুদ্রণ প্রযুক্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনসহ সাহিত্যচর্চাকে শৌখিনতার পর্যায় থেকে সার্বক্ষণিক ও গুরুত্বপূর্ণ পেশায় উন্নীত করার লক্ষ্যে তরুণ লেখকদের আত্মিক বিকাশ, রচনা শৈলীর উৎকর্ষ সাধন এবং গ্রন্থ প্রকাশই ছিল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকূল্যে, জুলাই ’৯৫ থেকে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে একজন প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে এই প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।
জুলাই ’৯৫ থেকে জুন ’৯৭ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের দু’টি অর্থবছরে মোট ১৬০জন (প্রতি ব্যাচে ৪০ জন ৬ মাস মেয়াদী) তরুণ লেখককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রথম পর্যায়ের ৪টি ব্যাচের প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ছিল মোট ১৩৯টি। গ্রন্থগুলোর মধ্যে কাব্যগ্রন্থ ৫০টি, ছড়া ১১টি, ছোটগল্প ২৩টি, উপন্যাস ২২টি, নাটক ১২টি এবং প্রবগ্রন্থ ২১টি। তরুণ লেখক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয় জুলাই ’৯৭ থেকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রথম ব্যাচে ৪০ জন তরুণ লেখককে এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
তথ্যসূত্র - বাংলা একাডেমি
অপেক্ষাকৃত তরুণ লেখকের বই প্রায় সময় ই বাংলা একাডেমি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করে না । তাছাড়া,আমাদের সমাজে তরুণ লেখকের প্রতিভা বিকাশের অনুকূল পরিবেশ ও নেই । এ ধরনের পরিস্থিতিতে একজন তরুণ লেখকের আত্ন প্রকাশের সুযোগ খুব ই সীমিত । তাই বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক মনসুর মুসা তরুণ সাহিত্যিকদের মেধা বিকাশের জন্য 'তরুণ লেখক প্রকল্প' নামে একটি মান উন্নয়নমূলক ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । আর এই তরুণ লেখ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা ।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য কাউকে শিখিয়ে-পড়িয়ে,প্রশিক্ষণ দিয়ে লেখক বানানো-এটা ভাবলে ভুল হবে ।
যাদের স্বভাবজাত প্রতিভা আছে এবং যারা সাহিত্যচর্চা করা শুরু করেছেন তাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা ই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য । প্রকল্পের প্রতি টি ব্যাচের মেয়াদ ৬মাস এবং এতে অংশগ্রহণকারী লেখকের সংখ্যা ৪০। এই প্রকল্পে সাহিত্যের আঙ্গিক ও কলাকৌশল সম্পর্কে সচেতনতা,বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের সাহিত্য পরিস্থিতির পরিচিতি,তরুণ ও প্রবীণ সাহিত্য কর্মীর অভিজ্ঞতা বিনিময়,প্রশিক্ষণার্থী সাহিত্যিকদের মধ্যে নিবিড় পাঠের আগ্রহ সণ্ঞার ইত্যাদির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী তরুণদের প্রতিভার লালন ও বিকাশের পথ সুগম করা হয় । সাহিত্য প্রকাশের প্রক্রিয়া এবং আধুনিক মুদ্রণ প্রযুক্তি সম্পর্কে ও তাদের কে অবহিত করা হয় ।
তাছাড়া,সাহিত্য কে শৌখিনতা থেকে সিরিয়াস পেশায় নিয়ে আসার সম্ভাবনা ও যাচাই করা হয় ।
প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্পে অংশ গ্রহণকারী প্রত্যেক তরুণ লেখকের একটি করে বই প্রকাশ করা হবে বাংলা একাডেমী থেকে । কবি শৈবাল আদিত্যের 'বিনিময় হোক বিনিদ্র ডাহুক' কাব্যগ্রন্থটি সেই নীতির ই বাস্তবায়ন । বই প্রকাশকাল-আশাঢ় ১৪০৩/জুন১৯৯৬ ।
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন কাইয়ুম চৌধুরী এবং প্রচ্ছদচিত্র করেছেন মামুন কায়সার ।
কবি বইটি তাঁর মা বেগম রাশিদা খাতুন এবং বাবা এস,এম,ওয়াজেদ আলী মিরাজ কে উৎসর্গ করেছেন ।
বইটির প্রস্তুতি পাঠ -
পদ্মাপাড় থেকে উঠে এসে অনিবার্য ইস্টিশনে
অথবা সম্ভাবনার নিকটবর্তী কোনও গ্রামে
রেখেছি আঙুল । দরজায় বসে ছিল যেসব অসুখ আর
সংশয়ের জঙ্গল তাদের সাথে ভিজতে পারি নি বলেই
যতটা সম্ভব শূণ্যতর থেকেছি ; উদ্বাহু,নিপুণ প্রলেপে ।
অপেক্ষার গিঁট খুলে উঠে এসে সৌখিন অপরাধী পুরুষ
ছুঁড়েছি প্রতিবিম্বের প্রতি ক্লেদ । তাই অবমুক্ত
হয় নি কোনপ্রকার স্মারক-সন্যাস, আয়োজনে ।
সায়ন্তন দৃশ্যাবলীর প্রতিবাদে শিশু হয়ে গিয়েছিলাম ।
প্রতিঙ্গায় কেটে দিয়েছি সহজ কিস্তিতে প্রাপ্ত সকল বাঁধ
আর ক্রমাগত অন্ধকারে ছুঁড়েছি অনুভবের অপবাদ ।
স্বয়মাগতা দেখিনি তাই,নিদেনপক্ষে কোনও মায়া টায়া ।
বিষোদগার করে হয়তো সহজে সমাধা হত
ইচ্ছেকৃত পাপে তবু করে গেছি মোহন-জোচ্চুরী ।
হাসতে চাই নি ।
ভাসতে চাই নি । ডুবে ডুবে ভাসতে চাই নি ।
বরাবর যা চেয়েছি ; তাই জানতে পারে নি জলজ শব্দেরা ।
আপাতত যা-ই মনে হোক, সেই সব বাক্স-বাড়ি আর ঢেউ
কাউকে কিছু না বলে পাথর হচ্ছে ; দ্বি - খন্ড শিলা, সুতরাং -
বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখানোর চেষ্টা করা যেতে পারে ।
- শৈবাল আদিত্য ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।