আমি একজন অতি সাধারন মানুষ। সুন্দরের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই জলে স্থলে অন্তরীক্ষে। এই ব্লগে প্রচারিত ধারাবাহিক উপন্যাস এবং কবিতা আমার নিজ ব্লগ নীল নক্ষত্রে প্রচার করছি।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই বোনেরা, একটি অনাকাঙ্খিত বিভ্রাট ঘটে যাওয়ায় ১০ নম্বর পর্বের পরের পোস্টিং দিতে দেরী হয়ে গেল। হঠাত্ এক দিন দেখা গেল আমি কিছুতেই লগ ইন করতে পারছি না।
ভাবলাম কাল হবে, কাল হবে এই ভাবে প্রায় মাসাধিক পার হয়ে যাবার পর কিছু হচ্ছে না দেখে কর্তৃপক্ষের কাছে জানালাম। তার পর ঠিক হয়েছে। আশা করি অনিচ্ছাকৃত এই বিলম্বের বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নক্ষত্রের গোধূলি-১১
দেশে ফিরে এসে কোলকাতার ডাক্তারের দেয়া ঠিকানা খুঁজে ডাক্তারের সাথে দেখা করে প্রেসক্রিপশন আর তার চিঠি দেখালেন। ডাক্তার হিসেব করে তারিখ দিয়ে বলে দিলেন সেদিন নিয়ে আসার জন্য, এখানেই কেমোথেরাপি দেয়া যাবে।
সব ভাই বোন, বৌ, জামাই, মেয়েদের ডেকে একত্র করে সবাইকে কঠিন মর্মান্তিক সংবাদটা জানিয়ে বলে দিলেন তোমরা মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকো। যে যে ভাবে পার তার সেবা করার চেষ্টা কর আর সে যেন ঘুণাক্ষরেও কিছু বুঝতে না পারে এরকম অভিনয় করে যেও। বিলাতে ফোন করে ভাইকেও জানিয়ে দিল।
কয়েকদিন পর স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে এসে সেও শেষ দেখা দেখে গেল। কেমোথেরাপি শেষ হলে চলল রেডিও থেরাপি।
এক সময় এটাও শেষ হবার পর কি যেন কি একটা দামী ওষধ দেয়া হল। আত্মীয় স্বজনেরা নানা রকম খাবার এনে খাইয়ে দিয়ে শেষ দেখা করে গেল। বডি স্ক্যানের ছবিতে দেখেছে শরীরের প্রায় সব হাড় ঝাজড়া হয়ে গেছে। মায়ের ব্যাথা আর যন্ত্রণা যতটা সম্ভব চেপে রাখতে চাইতেন কিন্তু রাশেদ সাহেব তার মুখ দেখেই বুঝতে পারতেন কি যন্ত্রণা মা সহ্য করছেন। সারাক্ষণ বাড়িতে মায়ের কাছেই থাকতেন আর ভাবতেন হায়রে অর্থ! তুমি আমাকে ধরা দিলে না, আমি কি এতই ঘৃণ্য?তোমার জন্যই আমার মায়ের এই যন্ত্রণা আমাকে নিরূপায় হয়ে দেখতে হচ্ছে।
বাড়িতে সারাক্ষণ ভীড় লেগেই আছে।
স্থানিয় ডাক্তারের দেয়া সব ধরনের চিকিৎসা শেষ হবার পর কোলকাতার সেই ডাক্তারের কাছে ফোন করে জানতে চাইল এখন কি করতে হবে। উনি সব শুনে বলে দিলেন সবই তো হয়ে গেছে এখন দেবার মত আর কিছু নেই।
এর দিন দুয়েক পরেই মায়ের অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। এই অবস্থায়ও নামাজ ছাড়েননি।
সেদিন মাগরিবের নামাজের পর থেকেই শ্বাস কষ্ট দেখা দিল, বড় মেয়ে প্রেসার মেপে দেখল অসম্ভব রকম লো প্রেসার দেখা যাচ্ছে। ডাক্তারের সাথে ফোনে কথা বলে মনির শ্বাস কষ্টের ওষুধ নেয়ার মেশিন নেবুলাইজার দিয়ে ওষুধ দিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিয়রে বসা মনির কাছে পানি চাইলেন। কে যেন এক গ্লাস পানি মনির হাতে এগিয়ে দিলে মনি এক হাতে মাথাটা একটু উচু করে ধরে পানি খাইয়ে দিল। পানি খেয়ে মনিকে জোরে চেপে ধরে তার কোলে মাথা রেখে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে চোখ বন্ধ করলেন।
প্রান বায়ু উড়ে গেল, নির্বাক রাশেদ সাহেব পলকহীন চোখে তাকিয়ে দেখলেন।
মনি রাশেদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে হাতের পাখা নামিয়ে নিশ্চল পাথরের মত মার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। ঘরে ফুল স্পিডে ফ্যান চলছিলো এ ফ্যানের বাতাস মায়ের যন্ত্রণা মুছে দিয়ে বা উড়িয়ে না নিয়ে প্রান বায়ু টাই উড়িয়ে নিয়ে গেল। বাবা, মনি সবাই হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছিল। রাশেদ সাহেব বাবাকে বললেন ‘আব্বা হয়েছে আর বাতাস করতে হবে না’ বলেই হাত থেকে পাখাটি নিয়ে পাশে রেখে মায়ের মুখ চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন।
বাবা জিজ্ঞেস করলেন কি করছিস?
মনি অনেক কষ্ট করে শুধু এটুকুই বলতে পারলো তার আর বাতাসের প্রয়োজন নেই আব্বা।
ঘর ভর্তি আত্মীয় স্বজনদের কেউ কেউ ডুকরে কেঁদে ফেললেন।
রাশেদ সাহেব বাবাকে বললেন আমি একটা অন্যায় করেছি আব্বা আমাকে ক্ষমা করবেন, সব কিছু আমি জানতাম, সবাইকে বলেছি কিন্তু আপনাকে বলতে পারিনি। বাবা বললেন আমি বুঝতে পেরেছিলাম। সেঝ ভাই অফিসে, ছোট ভাই বাইরে গেছে।
তাদের সবাইকে ফোন করে তারা তারি আসতে বললেন। বোনকে ফোনে জানালেন ওরা সবাই যেন যত তারা তারি সম্ভব এখানে চলে আসে। টেলি ফোন এক্সচেঞ্জের অপারেটরকে মৃত্যু সংবাদ দেয়ার কথা বলে জরুরী ভাবে কল বুক করলেন, প্রায় সাথে সাথেই লাইন পাওয়া গেলে বিলাতে মেঝ ভাইকে বললেন তোরা এখন কোথায় কি করছিস?
শুনে বললো আম্মা তো আর নেই।
কখন?
এইতো চার পাচ মিনিট আগে।
ও আচ্ছা তাহলে আপনারা সব ব্যবস্থা করে ফেলেন, আমি এখনই টিকেট বুকিং দিচ্ছি, পেলে সাথে সাথেই আসছি, তবে আমার জন্য দেরী করবেন না।
আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সবাইকে ফোনে জানিয়ে দিলেন। ছোট ভাইদের বন্ধুরা সবাই এলো, তারাই সব ব্যবস্থা করে ফেললো। সবাইকে ভাগাভাগি করে কোরান খতম করার কথা বলে দিলেন। পরদিন মিরপুর বুদ্ধি জীবি গোরস্তানে রেখে আসার আগ পর্যন্ত রাশেদ সাহেব অবিচল ছিলেন। যা যা করতে হবে তা যাকে দিয়ে যা করা যায় সবই ঠিক ভাবে করেছেন।
যাকে যাকে সংবাদ দেবার তা তিনি নিজেই দিয়েছেন। গোরস্তান থেকে ফিরে এসে সবার অলক্ষ্যে গ্যারেজের এক কোণায় গিয়ে একা বসে পরলেন। হঠাত্ করেই কান্না, সে কি কান্না, কোন পুরুষ মানুষ এভাবে কাঁদতে পারে এ এক বিস্ময়।
হঠাত্ ছোট মেয়ে দেখতে পেয়ে মাকে ডেকে নিয়ে এলো। মনি এসে মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দিয়ে কোন ভাবে ওখান থেকে ঘরে নিয়ে এলো।
মায়ের মৃত্যুর পরেই শুরু হোল রাশেদ সাহেবের অনন্ত পতন, একেবারে পৃথিবীর অতলে তলিয়ে যাবার যাত্রা আরম্ভ হোল তার।
সিনেমা আর কতক্ষণ চলতো জানিনা, হৃদয়হীন কোচটি ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ডে এসে থেমে গেল। কোচের সুপারভাইজার শেখানো তোতা পাখির মত মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের সাথে ভ্রমণ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাজধানী ঢাকা শহরে এসে তাদের যাত্রা পথের সমাপ্তি ঘোষনা করল। যাত্রীরা সবাই একে একে নেমে গেল রাশেদ সাহেবও তার ব্যাগটা খুঁজে নিয়ে কাধে ঝুলিয়ে কোচ থেকে নেমে গাবতলী গামী একটা লোকাল বাসে কল্যাণপুর নেমে ভোর হবার বেশ অনেক আগে রিকশা না পেয়ে হাটতে হাটতে তার বাবার তৈরী বাড়িতে যেখানে তাকে তার স্ত্রী সহ সন্তানদের আশ্রয় দিয়েছে, যেখানে তার মনি সহ তিন মেয়ে রয়েছে সেই বাড়ির সামনে এসে দেখলো এখনো কেউ ওঠেনি।
কলিং বেলের সুইচ টিপে খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতেই কলাপসিবল গেটের ফাকে মনির সদ্য ঘুম ভাঙ্গা হাসিতে উজ্জ্বল মুখটা দেখতে পেল।
চাবি নিয়ে এসে গেটটি খুলে দিলে রাশেদ সাহেব ভিতরে ঢুকতেই মনিরা রাশেদ সাহেবকে জড়িয়ে ধরল, যেন কত যুগ ধরে সঞ্চিত কত বিরহের অবসান হয়ে মহা মিলন হোল।
কি করছ? চল ভিতরে যেয়ে নিই, মানুষে দেখবে তো।
দেখুক।
এই তো মাত্র দুই রাত আর এক দিন গেছে এর মধ্যেই এতো!
হু, আমার মনে হচ্ছে কতকাল তোমাকে দেখি না, কেমন আছ তুমি?
কাল সন্ধ্যায় না কথা হোল, ভালো না হলে রাত জেগে এলাম কি করে, তুমি তোমার মেয়েরা কেমন আছ?
সবাই ভাল। চল তুমি কাপড় বদলে নাও আমি গোসলের পানি গরম দিয়ে আসছি, তারপরে তুমি গোসল কর আর আমি নাশতা বানাই।
(চলবে)
[প্রথম অধ্যায় সমাপ্ত]
নক্ষত্রের গোধুলি-১২
[দ্বিতীয় অধ্যায়]
চিটাগাং থেকে ফিরে আসার পর কি করবেন ভেবে কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলেন না। এমন সময় একদিন ছোট ভাই বলল
দাদা, আপনি যদি লন্ডন যেতে চান তাহলে চলে যান। আজ মেঝ ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে, আপনি ওখানে যেতে চাইলে যেতে বলেছেন। তবে কথা হচ্ছে উনি যে শহরে থাকে সেখানে থাকতে পারবেন না এবং যাবার ভাড়া আপনাকে ব্যবস্থা করতে হবে। আর আমি বলছি যদি যান তাহলে অন্তত চার বছর থাকবেন এমন মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন।
এখন ভেবে দেখেন কি করবেন, চার বছর কিন্তু একেবারে কম না। যাওয়া হলে এখানে এখন যেমন রেখে যাবেন এসে তেমন পাবেন না। হয়ত এসে দেখবেন আপনার অবর্তমানে ই মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে, ছোট মেয়ে স্কুল কলেজ সেরে ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে বা আরো কত পরিবর্তন হতে পারে যা এখন ভাবা যাচ্ছে না। এর আগে যেমন গিয়েছিলাম এবার কিন্তু তেমন নয়। যদিও এক বার ভিসা পেলে পরের বার ভিসার জন্য সমস্যা হয় না।
ভেবে দেখেন কি করবেন।
মনি পাশেই বসে ছিল।
রাশেদ সাহেব মনির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন।
মনি বলল তাই কর, অনেকেই এমন কত প্রয়োজনে কত কি করছে কত জায়গায় যাচ্ছে, চেষ্টা তো কম করা হোল না।
যেতে বলছ কিন্তু যাবার ভাড়ার টাকা পাব কোথায়?
সে দেখা যাবে, তুমি মত দিলেই ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
ঠিক আছে তাহলে ভাড়ার টাকা জোগার করে নিই পরে ভিসার জন্য এপ্লাই করি, এটাই তাহলে ফাইনাল।
রাতে শুয়ে মনিরাকে জড়িয়ে ধরে ভাবছে একা একা এভাবে চারটা বত্সর মনিকে না দেখে থাকবো কি করে আর মনিই বা থাকবে কি করে, সিদ্ধান্ত তো নিয়ে ফেললাম!
সিদ্ধান্ত নেয়া আর তা বাস্তবায়ন করা এক নয়। তাদের বিয়ে হয়েছে আজ ছাব্বিশ বছর, বিয়ের পর থেকে বিগত ছাব্বিশ বত্সরের নানা স্মৃতি ভেসে এলো মাথায়। ঘরে তিন মেয়ে, মেয়েদের স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে যাতায়াত। তাদের পোষাক আশাক, চিকিৎসা, বই পত্র কত কি।
মেয়েদের হাতে কোন রকম দশটা টাকা দিয়ে বলা যায় না যে বাসে করে ঝুলে গিয়ে ক্লাস করে এসো, ঢাকা শহরে বাসে চেপে মেয়েদের স্কুল কলেজে যাতায়াত ভাবাই যায় না।
দেশের জন্য, দশের জন্য বড় কিছু করার স্বপ্ন তার ধুলায় মিলিয়ে কোথায় চলে গেছে এখন বাঁচবে কি করে এই চিন্তায় অস্থির। শেষ পর্যন্ত ভাবল অনেকেই তো নানা রকম অপরাধ করে জেলে বা হাজতে বাস করছে, তাদেরও তো দিন চলে যাচ্ছে, না হয় সে ভেবে নিবে সেও এমন কোন অপরাধ করেছে যার শাস্তি হিসেবে তাকে অজ্ঞাত বাসে বা নির্বাসনে যেতে হবে, সে তো এমনই অপরাধ করেছে।
ওই তো, তার সহকর্মী নির্বাহী প্রকৌশলী শফিক সাহেবের কি হোল?আহা বেচারা নির্দোষী সহজ সরল মানুষটা। অফিস থেকে ট্রেনিং এর জন্য বাইরে পাঠাল আর ফিরে আসতে না আসতেই তেল চুরির অপরাধে চাকরিটাই চলে গেল।
তারও তার মেয়েদের বয়সি তিন মেয়ে। মেয়েগুলোর দিকে তাকান যায় না। বিভাগীয় চুড়ান্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে তা মওকুফের আবেদন নাকচ হবার পর শফিক সাহেব আদালতে মামলা করল, আপীল করল কোন লাভ হোল না। তার স্টোর কিপার পঁয়ত্রিশ লিটার তেলের ইন্ডেন্ট বানিয়ে শফিক সাহেবের স্বাক্ষর নিয়ে সেটাকে তিন শত পঁয়ত্রিশ করে তেল উঠিয়ে বিক্রি করে দিত। যে জাহাজ ডকে রয়েছে তার নামে ভুয়া ইন্ডেন্টে শফিক সাহেবের স্বাক্ষর জাল করে দশ হাজার লিটার ডিজেল উঠিয়ে বিক্রী করে দিত এই ভাবে নানা ফন্দি ফিকির করে টাকা কামিয়ে এক দিনেই তিনটা হিনো বাস কিনে রাস্তায় চালু করে দিয়েছে তার আয় দিয়েই সে চলছে, তারও চাকরী গেছে, কিন্তু সে তো বাসের আয় দিয়ে চলে যাবে।
শফিক সাহেবের যে সে উপায় নেই। সে তো চুরি করেনি বা চুরির ভাগও পায় নি। ওহ! কি কষ্টে যে তার দিন যাচ্ছে সে না দেখলে বোঝার উপায় নেই। মেয়েদের মামা বাড়ি থেকে কিছু দেয়, চাচারা কিছু দেয় এই দিয়েই মেয়েদের লেখাপড়া চলছে। কোন ভাবে দিন যাচ্ছে।
কাজেই সন্ধ্যায় নেয়া ছোট ভাইয়ের দেখান সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে আর কি করবে?কিন্তু তার পরেও একটা কাটার খোঁচা তার মনে বিঁধেই রইলো। মনি। মনিকে ছাড়া সে থাকবে কি ভাবে, আর মনিই বা থাকবে কি ভাবে?হঠাৎ একটা বুদ্ধি এলো। আচ্ছা মনিকে যদি সে এবার সাথে নিয়ে যায় তাহলে তো মনি অন্তত বছরে একবার করে যেতে পারলেও এতটা অসহ্য মনে হবে না। ওর সাথে যদি মনির ভিসার জন্য এপ্লাই করে তা হলে কোন সমস্যা নেই, ভিসা পেয়ে যাবে।
হ্যা, তাইতো এই কথাই ঠিক। কিন্তু, এতো টাকা পাবে কোথায়?তার নিজের ভাড়ার টাকার কোন হদিশ নেই, মনির জন্য কোথায় পাবে?তাছাড়া বাড়ির সবাই ভাববে, ভাত জোটে না আবার বুড়ো বয়সে হানিমুন করতে বিলাত যাচ্ছে। কিন্তু কিন্তু করতে করতেই রাশেদ সাহেব ভেবে নিয়েছে, এই করতে হবে। মনি যদি বৎসরে এক বারও যেতে পারে তা হলেও অন্তত এই দীর্ঘ চার বৎসরের বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণা পোয়াতে হবে না। আর একটা কথা হচ্ছে এখন মনে হছে চার বৎসর আসলে যে এর চেয়ে বেশি হবে না তাই বা কে জানে।
মনি, ঘুমিয়েছ?
না, তুমি যেভাবে ধরে রেখেছ তাতে ঘুম আসে?
এই সংলাপ আবার কবে আমদানি করলে, আমি কি এই নতুন ধরে রাখলাম, ধরে তো রয়েছি আজ ছাব্বিশ বছর ধরে।
কিছু বলবে?
হ্যা, বলছিলাম কি, একটু আমতা আমতা করে বলেই ফেললো, তুমিও চলনা আমার সাথে।
মনিরা কিছু না বুঝে বললো সাধে কি আর আমি পাগল বলি?
না সাধে বলবে কেন আমি তো পাগল, আর এজন্য তো তুমিই দায়ী, তুমিই আমাকে পাগল বানিয়েছ। আচ্ছা ঠিক আছে এজন্য যে শাস্তি দিতে চাও কাল দিও এখন ঘুমাও।
বলেই শোয়া থেকে উঠে বিছানায় বসে স্বামীর গায়ে মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে ঘুম পারিয়ে দিল।
সকালে উঠে আবার মনিকে কাছে ডেকে নিয়ে বলল তুমি তো পাগল বলেই খালাস, আমার কথাটা একটু মন দিয়ে শোন।
বল। [চলবে]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।