কথায় বলে পুরুষ যেন মেয়েদের না কাঁদায় স্বয়ং ঈশ্বর রাখেন তাদের চোখের জলের হিসাব । ঈশ্বরের কি খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই ! জন্মের সময়ই তো মানূষ কাঁদতে কাঁদতে পৃথিবীতে আসে । মেয়েরা হাসেও বেশী, কাদেও বেশী । তাদের হাসির হিসাব রাখবে কে ! যিনি হাসি দেন, তিনিই কান্না দেন । তবে এক একটি মেয়ে আছে, যে হাসলে চারপাশ পবিত্র মনে হয় ।
প্রতিটা মেয়েকে ঈশ্বর তিনটি সম্পদ দেন- প্রথমটি হচ্ছে চোখ, দ্বিতীয়টি হচ্ছে- কন্ঠস্বর । নারী বুঝতে চায় না, ঠিক দুপুরবেলা মাথার ছায়া পায়ের তলায় থাকে- খুঁজে পাওয়া মুশকিল । আমাদের সমাজে বেশীর ভাগ পুরুষই জানোয়ার । পুরুষের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশী সাদাসিধে, তারও মন একটা বাঘের মনের চেয়ে অনেক বেশী প্যাঁচানো । এই রকম মানূষদের উপর আমি চিরকাল রেগে থাকি ।
গোলাপ যখন ফোটে দেখতে ভালো লাগে কিন্তু সেই গোলাপের সব পাপড়ি যখন একে একে খসে পড়ে তখন কি সেই ভালো লাগাটা আকড়ে ধরে রাখতে হয় ? আমি চারিদিকে খুব মন দিয়ে দেখি-শুনি আর বুঝতে চেষ্টা করি !
মানুষের মন ! মানুষে মানুষে হৃদয়ে হৃদয়ে রোজ কত টক্কর কত ঠক্কর, একটু দেখা, একটু কথা, একটুখানি হাসি বিনিময়, লম্বা দীর্ঘশ্বাস, হাতে হাত, চোখে চোখ ! আরও কত কি ! "আমায় আপনার চেয়ে আপন যেজন/ খুঁজি তারে আমি আপনায়/ আমি শুনি যেন তার চরনের ধ্বনি/ আমারি তিয়াষী বাসনায় । " আজ থেকে অনেক বছর আগে প্রেম ছিল এই রকম- একটু দূর থেকে দেখা, আলতো হাসি এবং খুব সাহসী হলে চিঠি লেখা । পুরুষদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, তারা স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে না-অস্পষ্টতা রয়ে যায় । তার প্রধান কারন তারা নিজেদের কাছে স্বচ্ছ নয় । নারীর মানসিকতা কোমল, আত্মকেন্দ্রিক এবং শান্তি প্রিয় ।
যদিও একটু আধটু ঝগড়া করে । ইদানিং নারীরা নিজেদেরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শুরু করেছে । আমি মনে করি মানূষের সবচেয়ে বড় দু্র্বলতাটিই আসলে সবচেয়ে বড় শক্তি ।
আমাদের দেশে অনেক সমস্যা । খাদ্য সমস্যা, বিদ্যুৎ নেই, যানজট, দুর্নীতি, কুসংস্কার, অফিসে- পার্কে -বাড়িতে এমনকি হাসপাতালেও শান্তি নেই ।
প্রত্যেক মানুষের মন নিজ নিজ কামনা বাসনার আঁধারে সজ্জিত । উপাদানে যদিও এক কিন্তু কামনা-নাসনায় মানুষ বিচিত্র । বিভিন্ন কামনার প্রলেপ লেগে প্রত্যেক মানূষই স্বতন্ত্র এবং আলাদা । শরৎ শেষে হেমন্ত আসে । মেলা বসে শহরে গ্রামে ।
গানের আসর, নাটকের সপ্তাহ, রমনার বটমূলে, টিএসসি'তে, চারুকলায়, পাবলিক লাইব্রেরী, যাদু ঘরের চত্বরে, বই মেলা, একজিবিশন, বৃক্ষমেলা, বা্নিজ্য মেলা, সংসদ উদ্যানে, আর্ট ইন্সটিটিউটের বকুল তলায়- দু'জনে একসঙ্গে যায় সে-সবে । হাত ধরে হাটে । পথের ধারে বসে চটপটি-ফুচকা খায় । আমি ঢাকা শহরের দুষিত বাতাস গায়ে মেখে এই সব দেখি । আমি মাস্তান নই, সমাজ সেবকও নই, কোনো রাজনৈতিক দলের আঞ্চলিক কমিটির সদস্যও নই ।
এ যুগের মেয়েরা খুব স্বার্থপর হয় । তারা শুধু নিজেদের সুখ, নিজেদের ক্ষুদ্রতা, নিজেদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে সব সময় এতই ব্যস্ত যে কখনো অন্যের কথা ভাবে না ।
জন্মদিনে ফুল দেয়, মোবাইলে তোতা পাখির মতন মেনি হ্যাপি রিটার্নস ....বলে, নিউ মা্রকেট থেকে সোয়েটার কিনে নিজের হাতে বোনা বলে প্রেজেন্ট করে, উঁচু কলারওয়ালা জামা কিনে দেয় বয় ফ্রেন্ডদের । কিন্তু ভালোবাসা যে একটা ম্যাকানিকাল উশই করা নয়, জামা নয়, উপহার নয়, ভালোবাসা যে তার চেয়ে অনেক অনেক গভীরতা সম্পন্ন বোধ তা বোঝার মতন মেয়ে বেশী নেই । নেই যে তা নয়, বেশী নেই ।
আবার জীবনে ভালোবাসা পাওয়াটাই সব নয় । শুধু ভালোবাসা পেয়েই মন ভরে না । প্রেমিক- প্রেমিকা'রা বলে, আমি ওর চুল দেখে ভালোবেসেছি বা আমি ওর চোখ দেখে প্রেমে পড়েছি । এ ধরনের সম্পর্ক গুলোর ক্ষেত্রেই জীবনে অনুপ্রবেশ করে ভুল পুরুষ বা নারী ।
"শীতের বাতাস তুমি, যাও বয়ে যাও- অকৃতজ্ঞ নির্দয় মানুষের মত তুমি নও ।
যদি-ও নিঃশ্বাস তব হিমেল বলয়- অদৃশ্য তোমার দন্ত তীক্ষ্ম তত নয়,
মিছে প্রেম বন্ধুত্ব করো না বড়াই- নাও ঈশ্বরের নাম ।
এ জীবন অবিমিশ্র সুখ আর আরাম-
শীতের বাতাস তুমি, যাও বয়ে যাও- তবু কৃতৃঘ্ন বন্ধুর মতো সূচীতীক্ষ্ম নও । "
এখন নিত্যদিন বাইরের বাস্তবতার আঁচ খুব বেশী অনুভব করছি । মানুষের হিংস্রতা, লোভ, কর্কশ ভাব- আগে এমন চোখে পড়েনি । আগেও জানতাম- মানূষের দুঃখ আছে, কষ্ট আছে, এগুলো ব্যক্তিগত ।
তার বাইরে বাতাসের স্রোতের মতন একটা আনন্দের স্রোত আছে, কিন্তু মানূষের যে ইচ্ছা করে অন্যকে কষ্ট দেয়, অন্যের সুখ কেড়ে নিয়ে আনন্দ পায়- সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারনা ছিল না । আসলে আমরা সবাই নিজের অজান্তে সবার সাথে খেলছি । কেউ ভালো খেলছে, কেউ খারাপ খেলছে ।
" তুমি যা করো তাই আমার ভালো লাগে
তুমি প্রচন্ড ঘৃনা নিয়ে যখন তাকাও
তখন সেই ঘৃনাটাকেও মধুর বলে মনে হয় ।
এ আমার এমন অসুখ হলো ?
এই অসুখেই যেন আমার মৃত্যু হয় ।
" ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।