আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে হাজতি কেনাবেচা!

অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, সিট বাণিজ্য ও মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগার। চলছে হাজতি কেনাবেচা। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ন্ত্রণে চলে কারাগারের আইন কানুন। অনুসন্ধানে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের ভেতরে সব ধরনের মাদক বেচা-বিক্রি হয়। গাঁজা থেকে শুরু করে ফেন্সিডিল, বিয়ার এবং ইয়াবা পাওয়া যায় খুব সহজে।

কারাগারের ভেতরে মোবাইল ফোন ব্যবহার এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বিক্রি হওয়ার মাধ্যমে জেলখানায় প্রবেশ করে। প্রথমে তারা বিক্রি হয় কারারক্ষীদের কাছে। প্রতিটি আসামি গড়ে ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এরপর কারারক্ষীরা প্রত্যেক হাজতিকে ওয়ার্ডের কয়েদিদের কাছে ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি করে দেয়।

কয়েদি ও রাইটার তাদের কাছ থেকে আদায় করে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। হাজতির আর্থিক অবস্থা যদি ভালো হয় তার কাছ থেকে আদায় করা হয় দশ-পনের হাজার টাকা। এ জন্য প্রত্যেক হাজতিকে প্রথম দিন ঘুমাতে হয় টয়লেটের পাশে। আবার অনেককে টয়লেটে দাড়িয়ে কাটাতে হয়। হাজতিরা এ টাকা না দিলে তাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

হাজতিরা কয়েদি ও রাইটারের চাহিদা মত টাকা দেয়। রাইটাররা নিজেদের তৈরি আইন-কানুন জারি করে নিয়ন্ত্রণ করছে কারাগার। রাইটারের মধ্যে আবার সিনিয়র রাইটারও আছে। সাধারণ হাজতিদের কয়েকটা গ্রুপে ভাগ করা হয়। বড় সন্ত্রাসীরা এক একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে ম্যাড ও রাইটার নামে।

সাধারণ হাজতিদের কাছে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যে অর্থ কিংবা খাবার নিয়ে আসে তা নিয়ন্ত্রণ করে ম্যাড ও রাইটাররা। হাজতির সাথে আত্মীয়-স্বজনের সাক্ষাৎকে বলা হয় 'দেখা'। রাইটাররা বিভিন্ন উপায়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে 'দেখা'র কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। কোন হাজতি অর্থ দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে তাদের জন্য আছে শাস্তির ব্যবস্থা। বিভিন্ন কঠিন কাজ কিংবা সাধারণ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয় তাকে।

সূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে একজন ম্যাড কিংবা রাইটার ৪০ থেকে ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন হাজতিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে লক্ষ্মীপুর কারাগারের সুপার নুরশেদ আহম্মেদ ভূইঁয়া বলেন, 'দেশের ৮-১০ টা জেলখানা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলখানা অনেক ভালো আছে। এখানকার বন্দিরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। ' ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.