আমি তাই বলি যা আমি বিশ্বাস করি অনশন হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের পথ। এই আন্দোলনে জনগনের কোন জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয় না কিন্তু দাবি আদায়ের পর সাধারন জনগনই এর থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। অন্ততপক্ষে স্বাধীন দেশে কোন আন্দোলনে জনগনের ক্ষতি হওয়া উচিত না। আসুন কয়েকজন বিখ্যাত মানুষের অনশনের মাধমে দাবি আদায়ের ঘটনা শুনি।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীঃ ১৯৩২ সালে দলিত নেতা বি আর আম্বেদকারের প্রচেষ্টার ভিত্তিতে সরকারী নতুন সংবিধানের আওতায় অস্পৃম্শ্যদের জন্য আলাদা ইলেকটোরেট আয়োজন করে।
এর প্রতিবাদে গান্ধী ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বরে ৬ দিনের অনশন পালন করের এবং এতে সরকার বাধ্য হয়ে দলিত ক্রিকেটার ও পরবর্তীতে রাজনৈতিক নেতা পালওয়াঙ্কার বালুর মধ্যস্থ্যতায় আরও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা প্রদান করে। এরপরই গান্ধী দলিত যাদের তিনি হরিজন বা ঈশ্বরের সন্তান নাম দিয়েছিলেন, সেই অস্পৃশ্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এক নতুন অগ্রযাত্রার সূচনা করেন। ১৯৩৩ সালের ৮ মে তিনি হরিজন আন্দোলনকে এগিয়ে নেবার লক্ষ্যে ২১ দিনের জন্য আত্মশুদ্ধি অনশন করেন।
গুরুভায়ুলঃ ত্রিবাঙ্কুরের ত্রিসূরে (অধুনা কেরল রাজ্যে) সংগঠিত একটি সত্যাগ্রহ আন্দোলন। গুরুভায়ুর মন্দিরে অস্পৃশ্যদের প্রবেশাধিকার দানের দাবিতে এই আন্দোলন চলেছিল।
আন্দোলনের নেতা কে. কেলাপ্পান আমরণ অনশনে বসেছিলেন। তবে ১২ দিন পর মহাত্মা গান্ধীর অনুরোধক্রমে তিনি অনশন ভঙ্গ করেন। এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ত্রিবাঙ্কুরের মহারাজা মন্দির প্রবেশ ঘোষণাপত্র জারি করে অস্পৃশ্যদের জন্য মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত করে দে
আবদুল হামিদ খান ভাসানীঃ১১ মাস লন্ডন, বার্লিন, দিল্লী ও কলকাতায় অবস্থান করার পর তার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলে ১৯৫৫-র ২৫ এপ্রিল দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পূর্ব বাংলায় খাদ্যজনিত দুর্ভিক্ষ রোধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৫০ কোটি টাকা আদায়ের দাবিতে ১৯৫৬-র ৭ মে ঢাকায় অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। সরকার দাবি মেনে নিলে ২৪ মে অনশন ভঙ্গ করেন।
একই বছর ১২ সেপ্টেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-রিপাবলিকান পার্টির কোয়ালিশন সরকার গঠিত হলে মাওলানা ভাসানী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করে নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করার জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করেন।
ভগৎ সিং; জেলে ভারতীয় ও ব্রিটিশ বন্দীদের সমানাধিকারের দাবিতে ৬৪ দিন টানা অনশন চালিয়ে তিনি সমর্থন আদায় করেন। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপৎ রাইয়ের হত্যা
ভূপেন্দ্র কুমার দত্তঃ-তিনি ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী]] এবং ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিলাশপুর জেলে তার ৭৮ দিন অনশন ধর্মঘটের রেকর্ড রয়েছে।
শেখ মুজিবুর রহমানঃ- বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দাবি আদায়ের জন্য উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনের ধর্মঘট করেন যার জন্য তাকে আটক করা হয়।
১৯৫২ সালে বিনা কারনে জেলে রাখার কারনে আমরন অনশন করেন এবং সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
আন্না হাজারেঃ- সংসদে পেশ হওয়া সরকারি লোকপাল বিল কেন্দ্রিক আন্দোলন করেন অনশনের মাধ্যমে।
আরো অনেক রথী মহারথীরা অনশনের মাধ্যমে দাবি আদায় করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে দুইটা গ্রুপ অনশন করছে।
ম্যাঙ্গো পিপল | আমজনতা ৭১ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়াকে একসাথে বসানোর জন্য যাতে বর্তমানের কিছু জাতীয় সমস্যা(তত্তাবধায়ক সরকার, জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধকরন) সমাধান করে দেশকে শান্তির পথে রাখা যায়।
অপরদিকে,
রুমী স্কোয়াড আমরন অনশনের ডাক দিয়েছে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করানোর জন্য।
আশা করি তাদের কর্মসূচি সফল হবে এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো এদের থেকে অহিংস আন্দোলনের দীক্ষা নেয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।