গত ২৫ নভেম্বর/১১ডিবি থেকে নাসির ও তার সহযোগী এসেছিল হয়ত বাহিরে আরও কেহ গাড়ীতে থাকতে পারে। তবে আমি বুঝতে পেরেছি যে কারো নির্দেশে এসেছে কারন অনেক দিন সে আমার বাসায় আসেনা। হঠা্ৎ আসার কারন বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সে আমার ফেসবুক দেখেছে ও আইডি নিয়ে গিয়েছে।
মনে পড়ে-১৯৮৭-৮৮ সন সারা ঢাকা শহর বন্যায় প্লাবিত।
বাগেরহাট মোড়েলগঞ্জের ছেলে নাসির জগন্নাথ কলেজে পড়ে। আমার দেবর আজাদের বন্ধু। আজাদ ছাত্রনেতা লোটন-জোটনের খুবই কাছের তখন। অবস্য তখন ছাত্রনেতা লোটন-জোটনেরও হযত পরিচিত কিন্ত ও রাজনীতি পছন্দ করত না। সে আমার সায়দাবাদ, ঢাকার দ্বোতলা বাসার নিচতলা ভাড়া থাকত।
বন্যায় তার জিনিসপত্র তলিযে গেল। তখন সে আমার বাসায় তার জিনিসপত্র রেখে সম্ভবত: বাগেরহাট চলে গেল। তারপর ও ভিষণ ভদ্র, সৎ ও বুদ্ধিশান ছেলে। বড় দুই ভা্ইয়ের একজন ডা: খলিলুর রহমান (আর্থোপেডিক) আর একজন সম্ভবত: ঢাকা জজকোটে ছিলেন। আমার সেই সংগ্রামী জীবনে ও আমাকে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল।
সাখাওয়াত ওকে ভিষণ ভালবাসত তার জীবনে বড় একটি বন্ধু মনে করত। নাসির আমাদের সম্মান করত। মাঝে মাঝে আসত , খেত, কাজে সাহায্য করত। এমনি ভাবে সে আমাদের জীবনে জড়িয়ে ছিল কিছুটা সময়। তাইত সে আমাদের জীবনের একটি অংশ।
তাকে আমি কিছু স্মৃতির কথা বললাম। বললাম-''নাসির তোমার কি মনে পড়ে আমাকে বলতে আমি টাহপিস্টের জন্য জাতীয় মহিলা পরিদপ্তরে সিএসএস কোর্স করছি। সাখাওয়াত বলত, নাসির তোমার ভাবীকে কি আমি টাইপিষ্ট হবার জন্য শিখতে বলেছি ? ও ঢাকা শহর চিনেনা তাই আমি ওকে রাস্তা চেনানো ও কাজ শিখার জন্য ভর্তি করিয়েছি। আমি বলতাম- ''আমি সিএসএস কোর্স করে বাংলাদেশ সচিবালয়ে চাকুরী করব। '' আর তুমি বলতে-''আমি পুলিশ অফিসার হব।
'' আর আশ্চর্যের বিষয় হল -জীবনে তাই হয়েছিলাম কিন্ত তোমাকে সেদিন দিতে হয়েছিল তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সময় দুই বা তিন লক্ষ টাকা। কারন তিনি সম্ভবত: বাগেরহোটের মন্ত্রী ছিলেন।
আর আমাকে দিতে হয়েছিল আমার পবিত্র জীবন। বিতর্কিত হয়ে সেদিন সকল আপনজনদের কাজ থেকে দুরে সরে গিয়েছিলাম। কিন্ত আমি বিশ্বাস করিনা।
আমার পারফরমেন্সই আজ আমাকে এখানে এনে দাড় করিযেছে। এই হল আমাদের নিয়তী।
নাসির রাজশাহী থেকে এসআই এর ট্রেনিং শেষ করে সম্ভবত গাজীপুর , কাপাসিয়া জয়েন্ট করেছিল আর বিয়ে করেছিল আমাদের উপ-সচিব (প্র সিরাজুল ইসলাম স্যার ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের কেপিডি স্যারের ভাগ্নিকে।
নাসির আগের থেকে অনেক রোগা হয়ে গেছে। বুঝতে পেরেছি সে বর্তমানে চাপের ভিতর আছে।
ডিবির চাকুরী। সারাক্ষন টেনসন। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমি তাকে বললাম -''নাসির আমি জানি আপনি ডিবিতে থাকলেও টাকা আয় করা বুঝেননা যেমন পারিনি আমি। '' আমিত ফাইল আটকিয়ে কাউকে বলতে পারিনি আর আপনিও ক্রিমিনালদের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিতে পারবেন না।
তাই আমি আমার মিশন করলে আপনার চাকুরী করা প্রযোজন নেই। আমরা সকলে মিলে বাংলার জন্য কাজ করব। যাবার সময় ওকে যেন কেমন মনে হচ্ছিল। আমাকে কিছু বলবে কিন্ত পারছিলনা।
নাসির সোযানকে বার বার বলছিল-কেন তুমি চাকুরী খোজঁ করছনা।
কি করবে ? আমি বললাম না ওকে আমার মত ব্যাক বোন ভাঙ্গা চাকুরী করতে দিবনা। ওরা রাজনীতি করবে মানুষের জন্য। আমার মত স্টেজ হোক তা আমি চাহনা। আগে লেখাপড়া শেষ হোক তারপর। গোপালগঞ্জবাসী যাতে বলতে না পারে আমি তাদের সন্তানদের মানুষ করতে পারিনি তার বাবা নেই বলে।
ওদের এখন চাকুরীর সময় হয়নি। আমি যতক্ষণ জীবিত আছি ততক্ষণ আমি চাইবনা । আর বাংলায় যাদের কোন সরকার, মামা, চাচা নেই ওরাও তাদের দলে।
আমি নাসিরকে দেখালাম শেখ মুজিবের ছবি ক্রস করেছি। সে প্রথমে বলছিল না প্রযোজন নেই।
তারপর আমি ওকে বুঝিয়েছি। আমি তার ভ্যাবাচাকা ভাব দেখে বুঝেছি ডিবির লোকেরা এখনও কৃষান কন্যাকে পাগল ভাবে।
আজ মনে পড়ছে-১৯৭১ সনে যেদিন পাক বাহিনী বড় ভাই মুক্তিযো্দ্ধা নুরুল ইসলামকে ধরে দুই জন মানুষের সাথে চোখ হাত বেধে ব্রাস ফায়ার করতে যাবে তখনই আমজাদ নামে একজন রাজাকার যে আমাদের বাড়ীতে অনেক ভাত খেয়েছে। দ্রুত তার সামনে এসে তাড়ায়। তখন বড় ভাইকে টাকার বিনিময়ে পাক বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত করে নেয়।
ঠিক আজ ২০১১ সনে ৪০ বছর পর একই ঘটনার পুনারবৃত্তি যা কৃষান কন্যার জীবনে ঘটেছে। আমি গোপালগঞ্জের পুত্রবধু আর নাসির সবসময় আমাকে শ্রদ্ধা করে আসছে কেবল আমার সততার জন্য, সে আমার সংগ্রামী জীবনের কিছুটা আই উইটনেস।
আরও মনে পড়ছে-সাখাওয়াত প্রথম জীবনে অনেকটা নবাবী স্টাইলে কথা বলত। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের স্বাচিবের মহাসচিব ডা: শরফুদ্দিনের সহপাঠি ছিল। তারপর খুলনা সিটি কলেজে পড়াকালীন সময়ে দেখেছে রাজপাটের দাদু ডিএসপি (সম্ভবত: সাবেক ডিআইজি, ডিএসবি মিজানুর রহমা্ন মিজুর বাবা, রাজবাড়ী) দাদুর সা্থে থেকে ।
সে দেখেছে কেমন করে পুলিশ এসে দাদুকে স্যালুট দিযে দাড়িয়ে থাকে। তাইত কোনদিন সরকারী ছোট চাকুরী করতে চায়নি ঠিক আমাদের ভাইদের মত। তাই বলত, পুলিশ আমরা জন্ম দিয়েছি, রাতউলের খান বাহাদুর ছিলেন বাংলার প্রথম পুলিশ কমিশনার। আর ঢাকার প্রায় অফিসে উচু স্থানে আমাদের লোক। গোপালগঞ্জে জন্ম নিয়ে সে নাকি কলেজ জীবন হতে নেতা হবার সপ্ন দেখেছিল কিন্ত সত্যিকার বাস্তবতায় তারা সেদিন হেরে গিয়েছিল।
আর যারা সেদিন প্রকৃতির সাথে, জীবনের সাথে লড়াই করে মানুষ হয়েছিল তারাই আজ জয়ী হয়েছে যেমন উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, ডা: শরফু্দ্দিন এরা সম্ভবত:।
তাইত সাখাওয়াত তার কাজিন শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মোমিন সাহেবের সহযোগিতায় প্রথম ঠিকাদারী কাজ গোপালগঞ্জের মকসিদপুরে শুরু করে গ্রাম্য পলিটিক্সে জড়িয়ে যায় আর স্বজনপ্রীতির জন্য সেই ঠিকাদারী কাজে লস করে। তারপর ছিল ১৯৮৭-৮৮ এর বন্যা। ঢাকা থেকে শুকনা খাবার, ওষুধ নিয়ে জেনেছিলাম গ্রামে সাতরিয়ে সাতরিয়ে মানুষের মাঝে বিতরন করেছিল। এরাই হল সত্যিকারের রাজনীতিবিদ যারা জীবন সংগ্রামে কেবল হেরে যায়্ ।
মনে পড়ে-মেজে ভাই বলছিল-ঠিকাদারী কাজ আমরাও করি। কখনও লাক্সারী হোটেলে আবার কখনও পাতি হোটেলে কিন্ত সাখাওযাত স্থায়ীভাবে ফরিদপুর লাক্সারী হোটেলে কক্ষ ভাড়া করেছিল। আর সেই গোপালগঞ্জের মকসিদপুরের স্কুলটিও আয়তনে বড় করে ফেলেছিল যার জন্য মেজে ভাই বলেছিল-'তুমি কি সরকারী কাজ তোমার নিজ টাকা দিয়ে করে দিবে ? মানুষ আজকাল পারলে ছোট করে আর তুমি করেছ বড়। '' যাই হোক এই হল গোপালগঞ্জের সফিউদ্দিন মিনার পোতা যে সফিউদ্দিন মিনা তৎকালনি সময়ে বরিশাল ভোলায় চারতলা দুটি বাড়ী করলেও অবশেষে তাকে কাশিয়ানীর রাতউল গ্রামে ফিরে আসতে হয়েছিল তার কারন হয়ত কোথায় ভুল করেছিরেন ঠিক সাখাওয়াতে মত । এরাই হল সত্যিকার নবাব যারা কেবল দিতে শিখেছে নিতে শিখেনি্।
আজ আমি শেখ মুজিবকে কেন কেটেঁছি তা পুঙ্খানুপুঙ্গরুপে বুঝিয়েছি নাসিরকে সে আমাকে ঠিকই বুঝতে পারে কিন্ত নিয়তীর কাছে সে বড়ই অসহায় । আমি বলেছি বাংলাদেশ সরকার আমাকে ফাসী দিবে অথবা শেখ মুজিবকে আমাদের লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত কৃষক সমাজকে হত্যার দায়ে, হাজার লক্ষ মু্ক্তিযোদ্ধাদের সপ্ন পূরন না করে, লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অসহায় করে তাদের অকুলে ভাসিয়ে আবার সেনাবাহিনী শাসিত সরকার এনে দিয়ে তিনি জীবন থেকে পালিয়ে গিয়ে বেচেঁছিলেন কিন্ত আমরা যারা সমাজ ও প্রশাসনের কাছে ছিলাম অসহায়। সেদিন চাকুরী ছিল সোনার হরিন আর সেই সোনার হরিন খুজবার জন্য আমাদের ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল হন্যে হয়ে কেবল বেচেঁ থাকার জন্য কারন ক্ষুদার রাজ্যে দুনিয়া অন্ধকার'' । সেদিন কেহ টিকে ছিল , কেহ টিকে নাই আর বেশিরভাগই সেদিন বিদেশ পাড়ী জমিযে বেচেঁছিল আর আজও তারা তাদের জন্মভূমির পবিত্র মাটি হতে বঞ্চিত। সেদিন যা ছিল আমাদের নিয়তী !
আজ গোপালগঞ্জের নবাব সফিউদ্দিনের পোতা বউ তার কলমের দ্বারা তাকে ফাঁসি দিয়েছে কেবল তার ভূল সিদ্ধান্তের জন্য।
কারন আমার মুলকথা--'' শত্রুর সামনে বুক পেতে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাকে ট্রাকফুলি আদায় করতে হয়। '' আজ আমার দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন-বিশ্বাসঘাতক, ভারতের দালাল, মুনাফিক ও ক্ষমতাতার মোহে মদমত্ত এক নবাব যার অদুর দৃষ্টি সম্পন্ন নোংরা রাজনীতির কারনে সমগ্র বাংলার যে ক্ষতি সাধিত হয়েছিল যা আজও পুরনীয় নয়। আজও তা আমাদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে । তাই আজ রাষ্ট্রদোহীতার দায়ে কৃষা্ন কন্যার ফাসীর আগে শেখ মুজিবের মরনোত্তর ফাসী হবে এই বাংলায়।
হয়ত বাংলায় কৃষান কন্যা থাকবে নয়ত বাংলায় শেখ মুজিব থাকবে । এক বনে দুটি বাঘ থাকতে পারে না। (সমাপ্ত)-কৃষান কন্যা রাহিলা, কৃষি মন্ত্রনালয়। ২৭ নভেম্বর,২০১১ খ্রি:, সন্ধা ৬.৫৫ মি:
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।