জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন অবাক হলেন। কিন্তু প্রকাশ করলেন না। শুধু হাসলেন। আফটার অল অভিজ্ঞ ডিপ্লোমেট তো। দেশে দেশে দূতিয়ালি করাই তার কাজ।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন বেশ সফলতার সঙ্গে। কেন তিনি অবাক হলেন? এই প্রশ্নই বা উঠলো কেন? বান কি মুন যখন জানলেন তার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজের হোস্ট বিদায় নিচ্ছেন মাঝপথে। তখন তার অবাক না হওয়ার কোন কারণ থাকে কি? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই পার্টিতে উপস্থিত। শেষ অব্দি তিনি পার্টিতে সরব ছিলেন। যেমনটা তিনি থাকেন।
কিন্তু তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমনই ব্যস্ত, পার্টিতে তার থাকার সময় নেই। তাকে ফ্লাইট ধরতে হবে। বিমানে চড়তে হবে। এটা তার এক ধরনের নেশা। সব বাদ দিয়ে তিনি এমন উড়াল কূটনীতিকেই বেছে নিয়েছেন।
এতে বাংলাদেশের লাভ হলো কি হলো না তা মুখ্য বিষয় নয়। তিনি লাভবান হচ্ছেন নানাভাবে এটাই বড় কথা। যাই হোক, দীপুমনির গন্তব্য কোথায় ছিল?
ইউরোপের মতো সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর ওপারের কোন দেশে নয়, ডা. দীপুমনির গন্তব্য ছিল ঘরের পাশে মাত্র দুই পা ফেলা ভারত। কিন্তু তিনি বা তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সম্মানে আয়োজিত ডিনারের সঙ্গে সময় মেলাতে পারেননি। বান কি মুনকে রেখেই মাঝপথে দীপুমনিকে ব্যাঙ্গালোরে ছুটে যেতে হয়েছে।
এ ঘটনায় মহাসচিবের সফরসঙ্গীরা তাজ্জব বনে যান বলে জানা যায়। কিন্তু কূটনৈতিক শিষ্টাচারের জন্য তারা কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি। এই প্রতিক্রিয়া কখনও হয়তো জানা যাবেও না, জানার কথাও নয়।
শুধু তাই নয়, জাতিসংঘ মহাসচিবকে বাংলাদেশে অভ্যর্থনা জানাতে কোন মন্ত্রীর সময় হয়নি শাহজালাল বিমানবন্দরে যাওয়ার। মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ অন্যরা এ দায়িত্ব পালন করেছেন।
অথচ ২০০৮ সালের নভেম্বরে বান কি মুন যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন তাকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। ২০০৮ সালের অক্টোবরে ভারত থেকে তিনি স্পেশাল বিমানে চড়ে নেপালে পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপেন্দ্র যাদব। সাবেক উপদেষ্টা ও কেবিনেট সেক্রেটারি ড. আকবর আলি খান বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবকে অভ্যর্থনা জানাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিমানবন্দরে যাওয়া উচিত ছিল।
উল্লেখ্য, বিদেশ সফরে ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরি অর্জন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি।
কিন্তু পর্যবেক্ষকদের অনেকেই একমত যে, বাংলাদেশের গত আড়াই বছরের পররাষ্ট্র নীতিতে বিরাট হতাশা ও ব্যর্থতা নেমে এসেছে।
তাদের মতে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্যের মাপকাঠি হচ্ছে ভারতের সঙ্গে কূটনীতিটা কেমন কি হলো। কিন্তু দেশবাসী জানে, এ ক্ষেত্রে বিরাট ব্যর্থতা চলছে। তিস্তা নিয়ে শোচনীয় পরাজয়ের পর বাকি ৫২টি নদীর পানি ভাগাভাগি আলোচনা থেকেই ছিটকে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশের গণমাধ্যমও আর এ বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করছে না।
শান্তনা রহমান,দৈনিক মানবজমিন
এখন আমার প্রশ্ন দীপু মনির চেয়ে অযোগ্য পররাস্ট্রমন্ত্রী কি বাংলাদেশে আর কেউ ছিল? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।