আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিডনাইট ড্রামা ও চুনকাকন্যা আইভীর বিজয়: শফিক রেহমান

ছাত্র আইভী লতার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় পঞ্চাশের দশকে লন্ডনে। আইভী লতা চিরসবুজ। এর আদি পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণ ইওরোপ ও উত্তর-পশ্চিম আফৃকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়াতে জাপান ও তাইওয়ানে। মাটিতে এই লতা বিস্তৃত হয়। কিন্তু কোনো গাছ বা দেয়াল পেলে আইভী লতা দ্রুত ওপরের দিকে উঠতে থাকে।

বৃটেন ও আমেরিকাতে কেউ কেউ তাদের বাড়ির পুরো দেয়ালই আইভী লতা দিয়ে ঢেকে সবুজ করতে পারেন। ঘরের মধ্যেও অনেকে আইভী লতা রাখেন। আইভী লতার প্রাণ শক্ত ও বিস্তারের ক্ষমতা যথেষ্ট। তাই আইভী লতার একাংশ কেটে পানি ভর্তি ভাস-এ (vase) অথবা গ্লাসে সূর্যালোকের কাছাকাছি রাখলে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে সেটা প্রসারিত হতে থাকে। বাংলাদেশে আমি আইভীকে প্রথম দেখি টেলিভিশনে।

এখন পর্যন্ত তাকে সামনাসামনি দেখিনি। কিন্তু অক্টোবর ২০১১-তে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টেলিভিশনের বিভিন্ন সংবাদ, রিপোর্ট, ও ইন্টারভিউতে বাংলাদেশের আইভীকে দেখে আমার ধারণা হয়েছিল, এই আইভীরও প্রাণ শক্ত এবং প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা যথেষ্ট। রবিবার ৩০ অক্টোবর ২০১১-তে নারায়ণগঞ্জে মেয়র নির্বাচনে বিপুল ভোটে আইভী বিজয়ী হয়েছেন। আমার ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এই নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পেয়েছেন এক লক্ষ আশি হাজারের কিছু বেশি ভোট।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দ্বারা সমর্থিত শামীম ওসমান পেয়েছেন আটাত্তর হাজারের কিছু বেশি ভোট। ভোটের ব্যবধান লক্ষাধিক আইভীর অর্ধেকেরও কম ভোট পেয়েছেন শামীম ওসমান। ভোট অনুষ্ঠানের মাত্র সাত ঘন্টা আগে বিরোধী দল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার দলীয় সিদ্ধান্তে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। তবুও তার পক্ষে সাত হাজারের কিছু বেশি ভোট পড়েছে। মিজ নারায়ণগঞ্জ আইভী নির্দলীয় প্রার্থী রূপে আইভীর বিজয়, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী রূপে আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক সমর্থন সত্ত্বেও শামীম ওসমানের বড় পরাজয় এবং বিরোধী দল বিএনপির প্রার্থী তৈমূরের দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার- এই তিনটি ঘটনার কারণ ও তাৎপর্য এখন সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা নতুন স্টার মিজ নারায়ণগঞ্জ রূপে আবির্ভূত হয়েছেন আইভী। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ-বিরোধী মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়ে নির্বাচিত করেছে আইভীকে। বিজয়ের উল্লাস ও আনন্দ তাদের মুখে। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগপন্থী মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে আত্মসমালোচনা এবং আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের মধ্যে নেমেছে গভীর হতাশা। আর নারায়ণগঞ্জের বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে এসেছে আশা ও হতাশার সংমিশ্রণ।

তাদের আশা, তাদের শহর সন্ত্রাসী নীতি দ্বারা পরিচালিত হবে না- যেটা হবার সম্ভাবনা ছিল শামীম ওসমান বিজয়ী হলে। তাদের হতাশা, ত্রিমুখী ভোটাভুটিতে তৈমূরের জয়লাভের একটা ভালো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দলীয় নির্দেশে তাকে শেষ মুহূর্তে সরে দাড়াতে হয়েছে। কিন্তু বিএনপির হাই কমান্ডে এসেছে সন্তোষ। কারণ ২৯-৩০ অক্টোবরের মিডনাইট ড্রামা সফলভাবে অভিনীত হয়েছে। আওয়ামী লীগকে তারা ট্র্যাপে ফেলতে পেরেছে।

তিন প্রার্থী ও জহুরী নারায়ণগঞ্জে পৌরসভার বদলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন ঘোষিত হবার সময় থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে তিন জন স্ট্রং ক্যান্ডিডেট ছিলেন। এক. আইভী, যিনি ২০০৩ থেকে নারায়ণগঞ্জের পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। এই দায়িত্ব তিনি প্রশংসিতভাবে পালন করছিলেন। তিনি একসময়ে ডাক্তার ছিলেন। রাশিয়া এবং নিউ জিল্যান্ডে পড়াশোনা করেন।

পশ্চিমি মূল্যবোধ, ভদ্রতা ও সৌজন্যতার সঙ্গে পরিচিত হন। সেটা পরবর্তীতে তার রাজনৈতিক জীবনে দেখা গেছে। দুই. শামীম ওসমান, যিনি ১৯৯৬-২০০১-এ আওয়ামী শাসন আমলে এমপি ছিলেন কিন্তু গডফাদার রূপে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ২০০১-এ বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরপরই নিরুদ্দিষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতাসীন হবার পর শামীম ওসমানকে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবার দেখা যায়।

ইতিমধ্যে ডিসেম্বর ২০০৮-এর সাধারণ নির্বাচনে তার বড়ভাই নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তিন. নারায়ণগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের কনভেনর এস এম আকরাম। নারায়ণগঞ্জে ২০০১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত তিনি এই পদে থেকে সাহসী ও সুচারুভাবে দলের সাংগঠনিক কাজ সম্পাদন করেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে এই তিন শক্তিমান প্রার্থী যখন আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের কাছে মনোনয়ন চান, তখন সবচেয়ে প্রথমে সরে দাড়াতে হয় এস এম আকরামকে। এই প্রসঙ্গে আকরাম এখন মুখ খুলেছেন।

নির্বাচনের পরদিন ৩১ অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একটি প্রেস কনফারেন্সে আকরাম ঘোষণা দেন যে তিনি তার পদ ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আত্মসম্মানবোধ আছে বলেই সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। ’ পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে আকরাম বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির পর জেলার নেতারা যখন পলাতক ছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলের দেখাশোনার ভার দেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি, এটা ছিল বিশেষ চ্যালেঞ্জ। কারণ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চাইলে আমাকে হেনস্তা করতে পারত।

সেসব জেনেশুনে প্রতিবন্ধকতা, নির্যাতন সহ্য করে ১০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে সংগঠন চালিয়েছি। কিন্তু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যা হলো তাতে আমি মর্মাহত। ’ আকরাম আরো বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের একটি আসন থেকে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু পরে এই আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়। দলের সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিয়েছিলাম।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমি আশা করেছিলাম দল আমার ওপর নতুন কোনো দায়িত্ব দেবে। কিন্তু সেটা তো হয়নি বরং দলের কোনো পর্যায়ে আমার ইচ্ছা প্রকাশের সুযোগও হয়নি। ... সর্বশেষ মেয়র নির্বাচনেও আমি আশা করেছিলাম, আমাকে মেয়র পদে নির্বাচনের সুযোগ দেয়া হবে। সে কারণে আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করি। কিন্তু পরে দলের সিদ্ধান্তেই আমি তা প্রত্যাহার করে নেই।

... স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় নির্বাচন। সেলিনা হায়াত আইভীর মতো একজন দলীয় কর্মীকে আমি জেনেশুনে সমর্থন দিয়েছি। আমার সিদ্ধান্ত যে ভুল হয়নি তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আমার সমর্থিত প্রার্থী জয় পেয়েছেন। আমার দল শামীমকে সমর্থন দিয়েছিল।

তাই আমি মনে করি যে আইভীকে সমর্থন করে নৈতিকভাবে দলের সদস্য থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। তাই আমি জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’ এস এম আকরামের এই বিবৃতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে- কেন আওয়ামী লীগ আকরামের দশ বছরের সাহসী ও অনুগত ভূমিকার মূল্যায়ন করেনি এবং কেন তাকে বাদ দেয়ার পরে আইভীকেও আওয়ামী লীগ বাদ দিয়েছিল। বাংলায় প্রবাদ আছে, জহুরী জহর চেনে। সন্ত্রাসী চেনে সন্ত্রাসীকে।

তাই আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছিল শামীম ওসমানকে। শামীম ওসমানের সমর্থনে হানিফ এস এম আকরাম প্রত্যাখ্যাত হবার পরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সমস্যা হয়ে দাড়ান আইভী। প্রবলেম। প্রবলেম। প্রবলেম।

আকরামের মতো আইভী নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে রাজি হন না। তিনি অনুমান করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের শান্তিপ্রিয় মানুষ বিশেষত নারী ভোটাররা তাকে চায় এবং ত্রিমুখী নির্বাচন হলেও (আইভী-ওসমান-তৈমূর) বিজয়ী হবেন। এরপর নারায়ণগঞ্জে জমে ওঠে ত্রিমুখী নির্বাচনী অভিযান। কারো কারো মতে এই অভিযানে ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড প্রভৃতিতে তৈমূরের পক্ষে মুনশিয়ানা বেশি ছিল। বিএনপি সমর্থকরা তখন ভাবছিলেন তৈমূর তৃতীয় স্থানে থাকবেন না।

তিনিই হবেন প্রথম অথবা দ্বিতীয়। দিন গড়াতে থাকলে শামীম ওসমানের জয়লাভের সম্ভাবনা কমতে থাকে। নারায়ণগঞ্জের হার্ড কোর আওয়ামী লীগাররা ছিলেন শামীম ওসমানের পক্ষে। তাদের উদ্বেগ কমাতে এবং ওসমানের ক্যামপেইন জোরদার করতে নারায়ণগঞ্জে হাজির হতে থাকেন একের পর এক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব নেতারা প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে থাকেন শামীম ওসমানের পক্ষে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেশে না থাকায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা এবং শেখ হাসিনার নাম্বার ওয়ান মুখপাত্র রূপে পরিচিত মাহবুব উল আলম হানিফ ঢাকায় ১০ অক্টোবরে সাংবাদিকদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে শামীম ওসমানকে দলের সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই দলীয় সমর্থন কার দিকে, সে বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্য থেকে যতটুকু সমর্থন শামীম ওসমানের পক্ষে দেওয়া যায় ততটুকু সমর্থন তাকে দেওয়া হয়েছে। হানিফের এই বক্তব্যে আইভীও বোঝেন তার দলের সমর্থন কোন দিকে যাচ্ছে। আইভী সিদ্ধান্ত নেন ঢাকায় গিয়ে দলনেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তাকে কনভিন্স করতে চেষ্টা করবেন যে নির্বাচনে তারই (আইভীর) জয়লাভের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে সদ্য আমেরিকা ফেরত শেখ হাসিনা তার লাগেজ গোছাচ্ছিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ টু জার্মানি, জার্মানি টু বাংলাদেশ, কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ টু অস্ট্রেলিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া টু বাংলাদেশ টৃপগুলোর জন্য।

এই ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সময় দেন আইভীকে। তাদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছিল সেটা কোথাও প্রকাশিত হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, আইভীকে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন হাসিনা এবং বিনিময়ে তাকে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়ন দান এবং পরবর্তী মন্ত্রিসভার সদস্য করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু আইভী এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, মনোনয়ন না পেলেও নেত্রীর (হাসিনার) দোয়াপ্রার্থী তিনি এবং নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নেত্রীকে সালাম করতে আসবেন। বুড়িগঙ্গার তীর থেকে আইভী ফিরে আসেন শীতলক্ষ্যার তীরে।

ক্ষুব্ধ কিন্তু অদম্য, হতাশ কিন্তু আত্মবিশ্বাসী আইভী ঝাপিয়ে পড়েন নির্বাচনী অভিযানে। তাকে জিততেই হবে। বিজয়ী হয়ে যে তাকে সালাম করতে হবে তার নেত্রীকে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনা অবশ্যই এ ধরনের বেয়াদবি সহ্য করতে পারেন না। ফলাফল? আমরা দেখতে পাই এবার কোনো রাখঢাক ছাড়াই নির্লজ্জভাবে হানিফ জানিয়ে দিলেন শামীম ওসমানই দলের প্রার্থী।

এই ঘোষণার পরে সেদিন রাতে হানিফ স্বস্তিতে ঘুমাতে পেরেছিলেন কি না জানা যায়নি। তবে যারা মনে করেন নেত্রীভক্তির কাছে হানিফ তার বিবেক বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের ধারণা হানিফের ঘুমের কোনো ব্যাঘাত হয়নি। দলীয় সার্টিফিকেট পাওয়ার পর শামীম ওসমানের ঘুমও ভালো হয়। তিনি তখন জানতেন না তার প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি’র নেত্রীর একটি সিদ্ধান্তে অচিরেই তার ঘুম হারাম হয়ে যাবে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আইভীর নির্বাচন থেকে সরে না দাড়ানো এবং শামীম ওসমান তার দলীয় সার্টিফিকেট পাওয়ায়, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমূর সিদ্ধান্তে আসেন ত্রিমুখী নির্বাচনে তার জয়লাভের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

তিনি তার নির্বাচনী অভিযান আরো জোরালো করেন এবং তার আরো সঞ্চয় বিনিয়োগ করেন। কিন্তু তিনিও জানতেন না ঢাকায় বিএনপির হাই কমান্ড অন্য রকম চিন্তাভাবনা করছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন রোর্ড মার্চ ও জনসভায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন তারা চান একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং সেই লক্ষ্যে তারা চান সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন। বিএনপি নেত্রী আরো বলেছিলেন, নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) তারা চান না। এই প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত কোনো প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দলীয় স্ট্র্যাটেজির বিরোধিতা হতো।

তবুও তৈমূরকে নির্বাচনী অভিযানে এগিয়ে যেতে দেয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছিল নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে। কিন্তু হঠাৎ সরকারের অসহযোগিতার ফলে নির্বাচন কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। নির্বাচন কমিশন জানায়, কোনো সেনাবাহিনী নারায়ণগঞ্জে মোতায়েন করা হবে না এবং কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিতে হবে। বিএনপি হাই কমান্ডের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে যায়, এই নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ কমিশন ছাড়া আর কিছুই নয়।

বস্তুত এই ভোল্ট ফাস (Volte Face) অর্থাৎ মুখ সম্পূর্ণভাবে ঘুরিয়ে নেয়াটা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদার পক্ষেও মেনে নেয়াটা বিব্রতকর মনে হচ্ছিল। ভালো সুট ও চওড়া টাই পরে অফিসের সিড়ি দিয়ে দোতলা থেকে অপেক্ষমাণ টিভি ক্যামেরাম্যানদের সামনে নামতে অভ্যস্ত ড. শামসুল হুদা আগে আয়নার সামনে দাড়িয়ে হয়তো ভেবেছিলেন তার সুট-টাইয়ে কালো দাগ লেপটে দিয়েছে আওয়ামী সরকার। তিনি হয়তো তার এই মনস্তাপ প্রকাশ করেছিলেন তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে। তাই নির্বাচনের দিনে নারায়ণগঞ্জে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, নির্বাচন হয়ে যাবার পরপরই তিনি পদত্যাগ করবেন। কিন্তু যারা বাংলাদেশের উচ্চপদস্ত সিভিল সার্ভেন্টদের দেখে এসেছেন তারা জানেন এই শ্রেণীর সরকারি কর্মচারীরা সাধারণত পদত্যাগ করেন না।

বরং আজীবন তারা চাকরি করে যান বিবেকের সঙ্গে আপোষ করে। তারা ব্যস্ত থাকেন ট্রান্সফার, প্রমোশন, রিটায়ার করার পর এক্সটেনশন, তারপর কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা (ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি, আইডিবি, এসকাপ, ফাও, হু, ইউনিসেফ, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট) প্রভৃতিতে কাজ করা, রাষ্ট্রদূত হওয়া এবং তার পরে কোনো পার্টি নমিনেশন নিয়ে এমপি-মন্ত্রী হওয়া। আর সেটি সম্ভব না হলে সরকারের উপদেষ্টা হওয়া। সুতরাং ড. শামসুল হুদা যে পদত্যাগ করবেন না সেটা অনেকে মনে করেছিলেন। তবে নির্বাচনের দিন তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে সেনাবাহিনী না দেওয়ায় সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সরকার কেন সেনাবাহিনী দেয়নি তা আমরা এখনো জানি না। বিএনপির সিদ্ধান্ত, টাইমিং ও কোরবানি ড. শামসুল হুদা বোঝাপড়া করুন বা না-ই করুন, বিএনপি হাই কমান্ড তখনই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে তৈমূরের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এই নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগ অনুগত নির্বাচন কমিশনকে এবং ইভিএম পদ্ধতিতে এক ধরনের অনুমোদন দেওয়া হয়ে যাবে। দলীয় নেতাদের বিবেচনা করতে হয় এক দিকে একটি স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী তৈমূরের জয়লাভের কিছু সম্ভাবনা এবং অন্য দিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অগ্রহণযোগ্য ইসি ও ইভিএমকে সুযোগ দান। শেষ বিচারে দলীয় নেতারা সিদ্ধান্তে আসেন স্থানীয় নির্বাচনের অনিশ্চিত ফলাফলের বদলে জাতীয় নির্বাচনে দলীয় দাবি পূরণের নিশ্চয়তার দিকে অটল থাকা।

অর্থাৎ, তৈমূরকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে হবে। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার গুলশান অফিসে সংশ্লিষ্ট কিছু নেতার সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে আসেন। কিন্তু ঘোষণাটি কখন দিতে হবে? সেই ফাইন টাইমিংটা তারা ক্যালকুলেট করতে থাকেন। শনিবার ২৯ অক্টোবর ২০১১ রাত সাড়ে ন’টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানসহ সিনিয়র কয়েক নেতা কয়েকজন আইনজীবীর পরামর্শ নেন। তৈমূর বিজয়ী হবেন এমন আশা এসব আলোচনা-পরামর্শে কেউ কেউ প্রকাশ করেন।

এরপর সিনিয়র নেতারা দেখা করেন চেয়ারপারসনের সঙ্গে। আরো গভীর আলোচনার পর তৈমূরের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় এবং সেটি টেলিফোনে তৈমূরকে জানানো হয়। তখন রাত প্রায় এগারোটা। তৈমূরের মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ে। তিনি কিছুতেই এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছিলেন না।

ওদিকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে স্ক্রল নিউজে জানানো হতে থাকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচন বিষয়ে একটি নাটকীয় ঘোষণা আসবে আর কিছুক্ষণ পরেই। তৈমূর হতভম্ব হয়ে যান। এরপর নেত্রী খালেদা জিয়া টেলিফোনে তৈমূরের সঙ্গে কথা বলেন এবং দলীয় সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তিগুলো তুলে ধরেন। শেষ পর্যন্ত তৈমূর রাজি হন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে। রাত পৌনে একটায় চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসে একটি প্রেস কনফারেন্সে চাঞ্চল্যকর ঘোষণাটি দেয়া হয়।

ওদিকে নারায়ণগঞ্জে রাত প্রায় দেড়টায় একটি প্রেস কনফারেন্সে তৈমূর তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করেন। তিনি তার ভাষায় বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের কাছে তিনি কোরবানি হয়ে গিয়েছেন। এবার কোরবানির ঈদে নিঃসন্দেহে এটাই হবে সবচেয়ে বড় কোরবানি বা সবচেয়ে বড় ত্যাগ। মধ্য রাতে বিএনপির এই দাবার চাল আওয়ামী লীগের কাছে ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। তারা ভাবতেও পারেনি তৈমূরকে এভাবে নির্বাচনের মাত্র সাত ঘণ্টা আগে সরে দাড়াতে বাধ্য করবে বিএনপির হাই কমান্ড।

আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্বাচনে তৈমূরের অংশগ্রহণ। তারা জানত ত্রিমুখী নির্বাচনে শামীম ওসমানকে জিতিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং সেটা যে কারচুপি ছাড়াই হয়েছে এমন প্রচারণা চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু তৈমূর সরে দাড়ানোয় বিএনপির অনেক ভোটই চলে যাবে আইভীর দিকে এবং তার সঙ্গে যুক্ত হবে জামায়াতে ইসলামীর ভোট। সুতরাং শামীম ওসমানের হবে নিশ্চিত পরাজয়। বিএনপির এই ফাইন টাইমিংয়ের ফলে শামীম ওসমান তথা আওয়ামী লীগের নতুন কোনো ফন্দিফিকির করার সময় আর ছিল না।

শামীম ওসমানের ডিলিরিয়াম হতে থাকে। তিনি বলেন, জামায়াতের কাছে তৈমূর হেরে গিয়েছেন। আসলে শামীম ওসমান তখনই বুঝতে পেরেছিলেন বিএনপি-জামায়াতের পলিটিক্সে তিনি শোচনীয়ভাবে হেরে গিয়েছেন। তার এবং তার কর্মী বাহিনীর মধ্যে তীব্র হতাশা নেমে আসে। এত দিন ধরে পোলিং এজেন্টদের যে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল, তা নিষ্ফল হবে এটা তারা বোঝেন।

সন্ত্রাসী রূপে পরিচিত শামীম ওসমানই নির্বাচনের দিনে র‌্যাব-পুলিশ প্রভৃতির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের এবং সাজানো নির্বাচনের অভিযোগ তোলেন। রাজনীতির কি অদ্ভুত পরিহাস! জাতীয়ভাবে বিএনপির অর্জন এই নির্বাচনী ফলাফলে স্থানীয়ভাবে বিএনপি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাতীয়ভাবে বড় অর্জন করেছে। তারা তাদের ফোকাস স্থিরবদ্ধ রাখতে পেরেছে। দাবি অবিমিশ্রিত রাখতে পেরেছে। অর্থাৎ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং ইভিএম-বিহীন নির্বাচনের দাবি ক্লিয়ার রাখতে পেরেছে।

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ক্ষতি হলেও কেউ কেউ মনে করেন আইভীর মতো সৎ এবং অহিংস পলিটিশিয়ান মেয়র থাকলে আগামীতে বিএনপিকে অনেক কম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে। অন্য দিকে শামীম ওসমানের পরাজয়ের ফলে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগের বিরতিহীন যাত্রা বিড়ম্বিত থাকছে। বিডিআর বিদ্রোহ, সেনা অফিসারবৃন্দ নিহত, চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনে মহিউদ্দিনের পরাজয়, আড়িয়াল বিলে এয়ারপোর্ট নির্মাণ প্ল্যান জনগণের চাপে প্রত্যাহার, পদ্মা সেতু নির্মাণে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহার, গোপনভাবে ইনডিয়াকে ট্রানজিট দেয়ার বিষয়টি ফাস হয়ে যাওয়া, স্টক এক্সচেঞ্জে অব্যাহত ধস ও বিনিয়োগকারীদের আন্দোলন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সংকট, সরকার কর্তৃক দৈনিক প্রায় একশ কোটি টাকা ধার এবং ঢাকা-সিলেট ও চাপাইনবাবগঞ্জে খালেদা জিয়ার জনসমাবেশে এবং দুটি রোড মার্চে জনতার ঢল- এ সব ঘটনাই আওয়ামী লীগের জন্য বিপদ সংকেত। নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদে শামীম ওসমান নির্বাচিত হলে সেটা হতে পারত আওয়ামী লীগের জন্য এই ধারাবাহিক মন্দাবস্থার বিরুদ্ধে অন্তত একটি আশার আলো। কিন্তু সেটা হলো না।

ব্যাড লাক? নাকি ব্যাড সিলেকশন ও ব্যাড ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি? হাসিনার ড্যামেজ লিমিটেশন অ্যাক্ট কেউ কেউ বলছেন নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৭৪-এ নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আইভীর পিতা আলী আহাম্মদ চুনকা মনোনয়ন চেয়েছিলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে। যোগ্যতর প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও চুনকার আবেদন নাকচ হয়েছিল। চুনকা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী খোকা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ৩৭ বছর পরে এবার শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হবার পরে চুমকার কন্যা আইভী নির্বাচনে পরাজিত করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে।

হিস্টৃ রিপিটস ইটসেলফ বা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয় এমন কথায় যারা বিশ্বাসী তারা এখন শঙ্কিত। তারা জানেন ইতিহাসের চাকা থেমে থাকে না। তারা এটাও জানেন চুনকাকে প্রত্যাখ্যান করার এক বছর পরে বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এখন চুনকাকন্যা আইভীকে প্রত্যাখ্যান করার পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা কোন পথে যাবেন? অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে এসে গতকাল মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জের দুই মেয়রপ্রার্থীই আমার কাছে এসেছিলেন। দুজনকেই আমি সমর্থন করেছিলাম।

তবে আইভী বিজয়ী হওয়ায় আমি খুশি হয়েছি। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচন হয়েছে। একজন বিজয়ী হয়েছে। .... সিটি কর্পোরেশনে দেশে প্রথমবারের মতো একজন নারী মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় আমি খুশি হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য কি আত্মপ্রতারণা? নাকি ড্যামেজ লিমিটেশন অ্যাক্ট বা ক্ষতি সীমাবদ্ধ রাখার পদক্ষেপ? এই মুহূর্তে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা আছে শুধু ইতিহাসেরই।

সুতরাং আমাদের সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। আইভীর নয়টি গুণ অন্য দিকে আইভী বলেছেন, আমি সারা জীবন আওয়ামী লীগে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমাদের পরিবার কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেইমানি করেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেত্রী কি করবেন? আইভীর হয়তো মনে পড়বে, শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি ফরগেট করেন, কিন্তু ফরগিভ করেন না। আসলে শেখ হাসিনা ফরগেট করেন না, ফরগিভও করেন না।

এটা মনে রাখলে আইভীর ভবিষ্যৎ রাজনীতি তার জন্য এবারের মতোই সুফল হয়ে আসবে। বস্তুত তার নামের নয়টি আদ্যক্ষরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে বাংলাদেশে আদর্শ নেতৃত্বের প্রয়োজনীয় নয়টি গুণাবলী। যেমন : S = Socially responsible, সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল ও সচেতন। E = Educated, শিক্ষিত। L = Loving and caring, মানুষকে ভালোবাসা ও তাদের যত্ন নেয়া।

I = Informed, চলমান ঘটনা বিষয়ে জ্ঞানী। N = Non-mafia, কোনো সহিংস গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। A = Amiable, নম্র ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। I = Indefatigable, ক্লান্তিহীন। V = Visionary, স্বপ্নদ্রষ্টা।

Y = Young, অল্প বয়সী SELINA IVY-র মতো গুণাবলী সমন্বিত পলিটিশিয়ান বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিতে দরকার। (আশা করি আইভী তার এসব গুণ বজায় রাখবেন, আরো উন্নতি করবেন, এবং যদি তিনি সত্যিই আওয়ামী লীগপন্থী এখনো থাকেন, তাহলে তার দলে একদিন বিকল্প নেত্রীরূপে আবির্ভূত হবেন। সবশেষে এক লক্ষ আশি হাজার টন প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানাতে হয় সেই সব নারায়ণগঞ্জবাসীকে, যারা ভোট দিয়ে চুনকাকন্যা আইভীকে বিজয়ী করেছেন। ) Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.