আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এডলফ হিটলার

এডলফ হিটলার। তার সম্পর্কে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে কুখ্যাত এবং আলোচিত একনায়কের নাম এডলফ হিটলার। একনায়কতন্ত্রের জন্য ইতিহাসের পাতায় আজো উচ্চারিত হয় তার নাম। হিটলারের জন্ম ১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়ায়।

অনেক মানুষ এখনো জীবিত আছে, যারা তার নিষ্ঠুরতার সাক্ষী।

তিনি ১১ থেকে ১৪ মিলিয়ন মানুষ হত্যার জন্য দায়ী_ এর মধ্যে ছয় মিলিয়নই ছিল ইহুদি। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তিনি সবচেয়ে বড় খলনায়ক ছিলেন। সেই হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন।

ক্ষমতার প্রতি আকর্ষণটা সব সময়ই হিটলারের ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হিটলার একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে কাজ করেন এবং যুদ্ধ শেষে জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টিতে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। দলের মধ্যে তিনি নিজের আসন পাকাপোক্ত করতে থাকেন। ১৯২০ সালে এই দলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয় নাৎসি পার্টি। সে বছরই একটি ডানপন্থি সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বার্লিনে সামরিক ক্যু করার চেষ্টা করে নাৎসিরা।

কিন্তু এই ক্যু ব্যর্থ হয়। ফলে হিটলারকে জেল খাটতে হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা ছড়াতে থাকেন দেশবাসীর মধ্যে। এভাবেই এক সময় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। ১৯২১ সালে তিনি নাৎসি পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন।

তার চিন্তাধারায় ছিল একটা নতুন ওয়ার্ল্ড অর্ডার, যার নেতৃত্ব দেবে নাৎসি জার্মানরা। ১৯২৩ সালে মিউনিখে অভ্যুত্থান করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে তাকে জেলও খাটতে হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা ছড়াতে থাকেন তিনি। এভাবেই এক সময় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন হিটলার। জেল খাটার ঠিক ১০ বছর পর ভোটে জিতে জার্মানির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন।

১৯৩৩ সালে তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন। তারই নির্দেশে নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করে। তিনি রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজান, সামরিক বাহিনীকে নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেন। সর্বোপরি একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। নাৎসিবাদের প্রবক্তা ১৯৩৪ সালে নিজেকে সমগ্র জার্মানির প্রভু হিসেবে ঘোষণা করেন।

জাহির করেন নিজের ক্ষমতা। নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করেছিল। ১৯৩৯ সালে ক্ষমতাসীন নাৎসিরা পোল্যান্ড অধিকার করে এবং ফলে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের অক্ষশক্তি তথা জার্মানির নেতৃত্বাধীন শক্তি ইউরোপ মহাদেশীয় এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল।

কিন্তু অবশেষে মিত্রশক্তি বিজয় লাভ করে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। হারাতে হয় ঘরবাড়ি। এককথায় বলতে গেলে গোটা দেশ হয়ে ওঠে শরণার্থী শিবির।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিকে মিত্রবাহিনী যখন বার্লিন শহর দখল করে নিচ্ছিল, তখন পরাজয় নিশ্চিত জেনে ৩০ এপ্রিল হিটলার নিজেকে গুলি করে আত্দহত্যা করেন। মৃত্যুর পর তার লোকেরা তারই নির্দেশ মোতাবেক লাশকে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। এভাবেই শেষ হয় বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও আগ্রাসী এক শাসকের উপাখ্যান।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে ১৫ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।