প্রত্যাশাই জীবন, বিবেক বাধা, আর বিভ্রান্তিই গতি সঞ্ছারক। হোক সে গতি পশ্চাৎমুখী কিংবা অভিমুখী। এই গতিতেই রয়েছে প্রত্যাশা, হয়ত ঊর্ধ্বমুখী কিংবা নিম্নমুখী
কোহিনূর হীরার রাজকীয় ইতিহাস শুরু ১৩০৪ সালে, নির্দিষ্ট করে বলা যায় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকেই উদ্ভব এই রত্নের, এই চমৎকার হীরাটির ওজন ২১.৬ গ্রাম এবং এটি ১০৫.৬ মেট্রিক ক্যাডেটস হীরক খণ্ড। এর মূল্য ধরা হয় ১ দিনে পৃথিবীর সমস্ত উৎপাদন খরচের অর্ধেক। এই হীরক খণ্ডের আত্মকাহিনী জানতে রাজকীয় কায়দায় কুর্নিশ করে ডুব দিতে হবে মধ্যযুগে!
আসুন এই হীরক খণ্ডের সংক্ষিপ্ত রাজকীয় ভ্রমণের ইতিহাস জেনে নেই।
ষোড়শ শতাব্দীতে কোহিনূর মালওয়ার রাজাদের অধিকারে ছিল। পরে এটি মোগল সম্রাট বাবরের হাতে আসে, বাদশা হুমায়ুন কোহিনুর উদ্ধার করে পিতাকে উপহার দেন, পিতা বাবর পুত্রের ওপর খুশি হয়ে পুনরায় হুমায়ুনকে উপহার দেন, পরে সম্রাট শাহজাহান নির্মিত ময়ুর সিংহাসনের শোভা বর্ধন করেছিল এই মহা মূল্যবান রত্ন। এছাড়াও বাবর, শাহজাহান, আকবর, জাহাঙ্গীর , আওরঙ্গজেবের সিংহাসন আলোকিত করেছে কোহিনুর। মোগল সাম্রাজ্য যখন বিক্ষিপ্ত ও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তখন নাদির শাহকে আমন্ত্রণ জানানো হয় মুসলিম শাসনের গৌরবোজ্জ্বল দিন ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে। কিন্তু তাকে প্রতিশ্রুত অর্থ না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেয় মোঘল রাজা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নাদির শাহ কৌশলে মোগলদের কাছ থেকে কোহিনূর উদ্ধার করে নিয়ে যান ইরানে।
নাদির শাহের মৃত্যুর পর আফগান রাজা হুমায়ুনের পুত্রের দখলে আসে এই কোহিনুর। আফগানিস্তান থেকে মহারাজা রণজিত্ সিং সেটি গ্রহণ করেন।
শেষ পর্যন্ত রণজিত্ সিংএর পুত্র সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৫০ সালে তুলে দেন রাণী ভিক্টোরিয়ার হাতে। মূলত আফগান থেকে এটিকে বাজেয়াপ্ত করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
রানী ভিক্টোরিয়া এটি তার হাতে ব্যবহার করেছেন, পরে এটি স্থান পায় ব্রিটিশ রাজমুকুটে, কত রাজার হাত ঘুরে আজ কোহিনুর অবসর নিয়েছে টাওয়ার অফ লন্ডনে।
১৯৯৭ সালে কোহিনুর ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতীয় পার্লামেন্ট থেকে জোর দাবি উঠে। এ সময় ইরান, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, এমনকি বাংলাদেশ পর্যন্ত এর সত্ত্ব দাবি করেছিল।
২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে এসে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এ সকল দাবী অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।