আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘ফকিন্নির পুত’ গালি, সমালোচনার ঝড়

ফেসবুক পেইজ ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম-বিওএএন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘ফকিন্নির পুত’ গালি দেয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক সাইটগুলোতে। অবশ্য ঘন্টা দেড়েক পর ঐ পোস্টটি মুছে দেয়া হয়। জানা গেছে, কাওসার আহমেদ নামে জনৈক ফেসবুক ব্যবহারকারী কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ব্যঙ্গ করে একটি পোস্ট দেন। পরবর্তী সময়ে সেটি ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামের ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন সেটি পেজে শেয়ার করেন। বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে বিওএএন-এর পেজ থেকে সেটি মুছে ফেলা হয়।

তবে অনেকে সেটির স্ক্রিন শট রাখেন। মুছে দেয়ার পর সেটি ফেসবুকে শেয়ার করে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঢাবির জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী Palash Chakraborty ফেসবুকে লিখেছেন, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা সংগঠন BOAN এর পেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের “ফকিরনির পুত” বলে গালি দেওয়া হচ্ছে। এই সংগঠনের প্রধান ইমরান এইচ সরকার। তাকে এতটা শ্রদ্ধা করতাম, খুবই খারাপ লাগছে।

সিফাত লতিফ নামে এক তরুণ লেখাটির প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, “ইমরান সরকারের বিওএএন থেকে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ফকিন্নির পুত বলা হয়েছে। এরা নাকি আবার তারুণ্যের পক্ষে?” সুমন আহমেদ নামে একজন লিখেছেন- একটা জিনিস খুব ইতিবাচক সেটা হল আমাদের মুল্যবোধ। আমাদেরকে অলরেডি অনেকে রাজাকার শিবির ট্যাগ দিয়ে দিয়েছে। আজকে এক পেইজে ফকিন্নির পুত গালি দিছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিক্রিকারীরা এটা করবে।

কিন্ত আমরাও ইচ্ছা করলে ওদের গালি দিতে পারি কিন্তু দিবনা। কারন এখানেই হচ্ছে ওদের আর আমাদের মধ্যে শিক্ষার পার্থক্য। আজকে প্রজন্ম চত্তরের যেসব পেইজ থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ওদেরকে যদি পুলিশ শুধু লাঠি দেখাইতো তাইলে দেখতেন এরা কোন গর্তের মধ্যে গিয়া ঢুকত। যাক গে ওসব কথা।

কে কি বলল, আমরা সেদিকে না তাকিয়ে ঐক্য ধরে এগোতে থাকি। কারণ সময় গেলে সাধন হবেনা। আর দয়া করে কেউ বাশেরকেল্লা টাইপের কোন পেইজ থেকে আন্দোলন সম্পর্কিত কোন পোস্ট শেয়ার দিবেন না। অযথা মূর্খদের সাথে তর্কও করবেন না। কারন এই লাইনটা।

“Never argue with fools, they will drag down you their level.” Brothers n sisters be aware of fools. Chapa Khov নামে একজন লিখেছেন- হ্যা আমরা ‘ফকিন্নির পুত ‘। আমরা সরকারি টাকায় ফ্রিতে পড়ি । আমাদের বেতন ২ টাকা থেকে ২.৫ টাকা হলে আন্দোলন করতে হয়। কারণ ঐ ২.৫ টাকা দিতেই আমাদের ওনেক কাঠখড় পুড়াতে হয় । কেন জানিস ? কারণ আমাদের বাবা-চাচারা কৃষক, শ্রমিক, মজুর, মেথর, কিংবা নিতান্তই টেনে টুনে সংসার চালানো মধ্যবিত্ত ।

কারণ আমাদের বাবা চাচার ঘুষের টাকা নাই। তাই আমাদের ফ্রিতেই পরতে হয় । হলের ১৫-২০ টাকার খাবার খেয়েই বেচে থাকতে হয় । কিন্তু কান খুলে শুনে রাখ : ১) ৫২ তে এই ‘ফক্কিন্নির পুত’ রাই রাস্তায় নেমে স্লোগান দিছিল ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’। এই ‘ফক্কিন্নির পুত’ রাই বুক পেতে দিয়েছিল হানাদারের বুলেটের বিরোদ্ধে।

তাদের বুকের রক্তে অর্জিত বাংলা ভাষায় এখন তোরা তাদের গালি দিস ‘ফ্রিতে পড়া ফকিন্নির পুত’ বলে। ২) ৬৯ এ গণ আন্দোলনে তোদের মত হাইব্রিডরা মাঠে ছিল না। ফ্রিতে পড়া এই ‘ফকিন্নির পুত’ রাই মাঠে ছিল। ৩) ৭ মার্চ রেসকোর্সে লাখো মানুষের ভিড়ে তোদের মত হাইব্রিড কেউ ছিলনা। ছিল এই ‘ফকিন্নির পুত’ রা।

৪) ২৫ মার্চ কালো রাতে হানাদার বাহিনী তোদের বাসায় আক্রমণ করেনি। আক্রমণ করেছিল এইসব ফ্রিতে পড়া ফকিন্নির পুতদের আবাসস্থল ভারসিটির বিভিন্ন হলগুলোতে। রক্তের দাগ এখনো হৃদয় থেকে মুছে যায় নি। ৫) ৯০ এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তোরা যখন বাসায় বসে স্যান্ডউয়িচ খাচ্ছিলি, তখন এই ফকিন্নির পুতরা রোদের পুড়ে রাস্তায় স্লোগান দিচ্ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ । রাউফুন বসুনিয়া, কাঞ্চন, জাফর, জয়নাল, আইয়ুব, দিপালী ও ফারুক এর লাশ এখনো বিস্মৃত হয়ে যায় নি।

৬) ২০১৩ তে তোরা যখন এসি রুমে বসে, কোটা বিরোধী আন্দোলনে জামাত শিবির খুচ্ছিস, তখন এই ফকিন্নির পুতরা তখন রাস্তায় নেমে পুলিশের টিয়ার শেল খেয়া ৫৫% কোটার ঘৃণ্য বৈষম্য থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করছে। পরিশেষে, তোরা হয়ত ভুলে গেছিস, প্রিয় নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুও আমাদের এই ফ্রিতে পড়ার দলে ছিল। তোদের মত হাইব্রিড ছিলনা। লেখাটি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.