আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিশুর শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা বা হাঁপানি জনিত সমস্যা>লক্ষণ>কারণ >চিকিৎসা ও আরও কিছু

ভালকে সমর্থন এবং খারাপকে বর্জন করতে শিখুন । শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা বা হাঁপানি যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এটি শিশুদের জন্য সর্বাধিক দৃশ্যমান শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা। দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে এর সঠিক রোগ নিরুপণ এবং চিকিৎসা হচ্ছে না। অ্যাজমার ওপর ১৯৯১ সালে পরিচালিত এক জাতীয় সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ৭০ লাখ অর্থাৎ পুরো জনসংখ্যার ৫.২ শতাংশ মানুষ অ্যাজমা রোগে ভুগছে। এর মধ্যে ৯০ ভাগেরও বেশি অ্যাজমা রোগী আধুনিক চিকিৎসা নিচ্ছে না।

অন্যদিকে মোট অ্যাজমা রোগীর অর্ধেকেরও বেশি শিশু। অ্যাজমা একটি শিশুর জীবনের গুনগত মানের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। শিশুর প্রায়শই স্কুলে অনুপস্থিতি এবং খারাপ ফলাফলের জন্য অনেকগুলো কারণের মধ্যে অ্যাজমা একটি। লক্ষণ আপনার শিশু কি অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছে? নিচের উসসর্গগুলো প্রায়শই দেখা গেলে মনে করতে পারেন যে, আপনার সন্তান অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়েছে। • শ্বাসত্যাগের সময় প্রতিনিয়ত বাঁশির মতো শব্দ হলে।

• বিশেষ করে রাতে কাশি হলে। • নিয়মিত শ্বাসকষ্ট এবং • প্রতিনিয়ত বুক বন্ধ বন্ধ লাগা ভাব হলে। শিশু বয়সে অ্যাজমার কারণ: • ভাইরাল ইনফেকশন। • পশমী প্রাণী (যেমন বিড়াল, কুকুর) • সিগারেট বা কাঠের ধোঁয়া। • ঘরের জাজিম, বালিশ বা কার্পেটের ধুলোবালি।

• পুষ্পরেণু ও পোকামাকড় (যেমন তেলাপোকা)। • তাপমাত্রার পরিবর্তন। • অ্যারোসল বা সুগন্ধী সামগ্রী। • অ্যাসপ্রিনজাতীয় ওষুধ। • ব্যায়াম ও মানসিক যন্ত্রণা কারা আক্রান্ত হতে পারে: যেসব বাচ্চার ব্যক্তিগত বা পারিবারিকভাবে অ্যালার্জির ইতিহাস আছে ববেং যাদের অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি বা চর্মরোগ আছে, তাদের হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

তবে এমন নয় যে, হাঁপানি বা পারিবারিক ইতিহাস ছাড়া কোনো শিশুর অ্যাজমা হবে না। বরং ইদানীং এ ধরনের শৈশবকালীন হাঁপানি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর প্রধান কারণ আবহাওয়া এবং বায়ুদূষণ। বাচ্চাদের হাঁপানি রোগ নিরুপণে আরও কিছু বিষয় রয়েছে : প্রায়ই বাচ্চাদের মধ্যে অনেক রকম বাঁশির মতো শব্দ শোনা যায়, যা হাঁপানির একটি প্রধান উপসর্গ। চিকিৎসকরা যদিও একে অ্যাজমা হিসেবে চিহ্নিত করতে অনুপ্রাণিত করেন, তবে এর অনেকগুলো অ্যাজমার উপসর্গ নয়।

শৈশবকালীন হাঁপানির চিকিৎসা: বেশির ভাগ শৈশবকালীন হাঁপানি ১ থেকে ৫ বছর বয়সে দেখা যায়, যা ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। হাঁপানি সম্পূর্ণভাবে নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন নতুন কৌশলের মাধ্যমে চিকিৎসা করে বারবার হাঁপানি আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে অন্তত যন্ত্রণাদায়ক রাত থেকে মুক্ত থাকা যায়। দিবাকালীন হাঁপানির চিকিৎসা নিচের নিয়মে করা যেতে পারে : • ওষুধের মাধ্যমে। • রোগী ও তার বাবা-মাকে রোগ সম্পর্কে সচেতন করে।

• সতর্কতা অবলম্বন করে। • অ্যালার্জেটিক বিষয় (যেমন : ধুলাবালি, ধোঁয়া, গৃহপালিত বা পোষা পশু-পাখির লোম) এড়িয়ে। ওষুধের ব্যবহার: বর্তমানে হাঁপানির অনেক নতুন ওষুধ বের হয়েছে (যেমন : ইনহেলড ব্রঙ্কোডাইলেটর, প্রদাহবিরোধী ওষুধ স্টেরয়েড)। ইদানীং ওষুধ প্রয়োগ করার জন্য নতুন কৌশল যেমন : স্পেস ডিভাইস কিংবা নেবুলাইজার শৈশবকালীন হাঁপানির চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। চিকিৎসকের কাছে দ্রুত রোগীকে নিয়ে যেতে হবে, যদি • রোগের আক্রমণ তীব্র হয়।

• বিশ্রামরত অবস্থায় শ্বাসকষ্ট হয়। • কথা বলার সময় বাক্য সম্পূর্ণ না হয়। • অস্থিরতা বোধ হয়। • শ্বাসকষ্টের কারণে খাবার খেতে না পারলে বা বমি হলে। • তীব্র শ্বাসকষ্ট হওয়া সত্ত্বেও হুইজ বা বাঁশির মতো শব্দ খুব বেশি জোরে শোনা গেলে বা শ্বাসনালী পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে।

• নিঃশ্বাসের সর্বোচ্চ প্রবাহ রোগীর সুস্থ থাকা অবস্থায় ৬০%-এর কম হলে। • শুরুতে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়, তার ফল আশানুরূপ না হলে। যেসব কারণ দেখলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে : • আগে হাঁপানির কারণে যাদের অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়েছিল। • দ্রুত কার্যকর ওষুধ নেবুলাইজারের মাধ্যমে পর পর ৩ বার সেবন করার পরও যাদের অবস্থা ভালো হয়নি। • বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবে বলে নির্ভরযোগ্য মনে না হলে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া না গেলে।

অ্যাজমা প্রতিরোধের নিয়ম : • বিছানার বালিশ, চাদর, কম্বল ইত্যাদি সপ্তাহে একবার গরম পানিতে ধুয়ে সূর্যালোকে বা গরম বাতাসে শুকাতে হবে। • ঘরে কার্পেট ব্যবহার করা যাবে না। • ধূমপানজনিত ধোঁয়া প্রতিরোধ এবং বাবা-মার ধূমপান বর্জন করতে হবে। • পোষা প্রাণী যেমন : কুকুর ও বিড়াল বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। • বাড়ি এবং এর চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।

• ধুলা প্রতিরোধক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং • এয়ারকন্ডিশনড গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। রোগী ও বাবা-মার অবশ্য করণীয় : • নিয়মিত ওষুধ খাওয়া। • নেবুলাইজার ও স্পেসার যন্ত্র সঠিক নিয়মে ব্যবহার। • অল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের পার্থক্য জানা । • বার বার ওষুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।

• হাঁপানির উপসর্গগুলো ভালোভাবে চিনে রাখা। • রোগীর শারীরিক অবনতিতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং • অ্যালার্জি উদ্রেক করে এ ধরনের পরিবেশ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা। লিংক ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.