বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে (জুলাই-মে) চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ২৫৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০১১-১২ অর্থবছরের একই সময়ে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ঋণাত্মক (-), ৫৩ কোটি ডলার।
নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় এই চলতি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত থাকলে বোঝায়, নিয়মিত লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না।
আর ঘাটতি থাকলে বোঝায়, ঘাটতি পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো আয়ের (রেমিটেন্স) প্রবাহ জোরালো থাকায় এবং পণ্য-বাণিজ্যে ঘাটতি কমে যাওয়ায় এই স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের লেনদেনের ভারসাম্য সারণি থেকে দেখা যায়, গত অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে পণ্য-বাণিজ্যে ঘাটতি ৬৩২ কোটি ৯০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এটি আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৬৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসেবে এগারো মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ২৭ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পণ্য রপ্তানি থেকে আয় বাড়ার পাশাপাশি পণ্য আমদানির ব্যয় কমে যাওয়ার প্রভাবে এমনটি হয়েছে। ”
লেনদেনের ভারসাম্য সারণি অনুসারে (এফওবিভিত্তিক), এগারো মাসে পণ্য রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।
একই সময়ে আমদানি ব্যয় কমেছে দশমিক ৩৯ শতাংশ।
অবশ্য সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি ২৭১ কোটি ১০ লাখ ডলারের চেয়ে বেড়ে ২৮৯ কোটি ৮০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
সেবা খাতের বাণিজ্যে মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
একই সময়ের আর্থিক হিসাবে ২৪০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। আগের অর্থবছরের এর পরিমাণ ছিল ১২০ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিদেশি বিনিয়োগ ও বিদেশি সহায়তা বেড়ে যাওয়ার কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে দেশে ১১৫ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে।
২০১১-১২ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১১১ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ।
একই সময়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও বিনিয়োগ) ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে ২৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার এসেছে।
মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বাবদ দেশে এসেছে ১৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেশি।
সার্বিকভাবে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে লেনদেনের ভারসাম্যে ৪৬৬ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল এক কোটি এক লাখ ডলার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।