অধিকার আদায়ে উচ্চকণ্ঠ
স্ত্রী লরেনের সাথে নাচছেন ষ্টিভ জবস
ষ্টিভ জবস মানুষ হিসেবে ছিলেন খুবই ঘোরয়া। তার ব্যক্তিগত জীবন খুব একটা পাবলিক হয়নি। তিনি খুব সযত্নে নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে প্রাইভেট রেখে গেছেন। তবুও কিছু কিছু বিষয় বেরিয়ে এসেছে বিভিন্ন সাক্ষ্যাৎকার এবং রিপোর্ট থেকে। আসুন দেখে নেই, তার প্রেমের জীবনটি কেমন ছিল।
একদিকে পৃথিবীর সবচে দামী ব্রান্ডের কম্পানী তৈরী করা এবং চালানো, আর আরেক দিকে স্ত্রী এবং পরিবার - এ দুটোকে এক সাথে সামাল দেয়া সহজ ছিল না। জিন্স আর টি-শার্টের সাথে কেডস পড়ে যে মানুষটি দাড়িয়ে চমৎকার প্রেজেন্টেশন দিচ্ছেন, তার ব্রেইন আর মন কি এক সাথে চলেছে কখনও?
তার স্ত্রী লরেন পাওয়েলের সাথে তার প্রথম দেখা এবং বিয়েটি বেশ মজার। লরেন কিন্তু বিখ্যাত প্যানসেলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্টন বিজনেস স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। তারপর ষ্ট্যানফোর্ড থেকে এম.বি.এ শেষ করেন। আর সেখানেই প্রথম দেখা হয় ষ্টিভের সাথে।
ষ্টিভ জবস একজন একরোখা টাইপের মানুষ। তিনি যেটা ভালোবাসেন, সেটাই করেন। তার বাইরে তিনি কিছুই করতেন না। তার এই ব্যবহারকে বলা হতো "সিঙ্গেল মাইন্ডেড ডেডিকেশন"। তিনি সেই ধ্যান দিয়ে তৈরী করেছেন অ্যাপলের মতো কম্পানী।
অ্যাপল ছিল তার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে - মন প্রাণে। কিন্তু সেই লরেন-এর সাথে প্রথম ডেট করতে গিয়ে এই ষ্টিভ-ই আবার একটা জরুরী মিটিং ফাঁকি মেরেছিলেন। ষ্টিভ তার অনুভূতি জানিয়েছিলেন এভাবে, "আমি গাড়ির চাবি হাতে নিয়ে পার্কিং লটে দাড়িয়ে আছি; আর মনে মনে ভাবছি - আজ যদি হয় আমার জীবনের শেষ রাত, তাহলে আমি কি সেই সময়টা একটা বিজনেস মিটিং-এ কাটাবো, নাকি এই মেয়েটির সাথে? আমি দৌড়ে পার্কিং লটের ভেতর দৌড়ে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞস করলাম, তুমি কি আমার সাথে ডিনারে যাবে? সে রাজী হয়ে গেল। তারপর আমরা শহরের ভেতর হাটলাম। তারপর থেকে আমরা এক সাথেই আছি।
"
প্রথম মেয়ে লিসা ব্রেনান জবস
১৯৯১ সালে ষ্টিভ আর লরেন ইউসোমিটি ন্যাশনাল পার্কের ভেতর আহওয়ানী হোটেলে বিয়েটা সেরে ফেলেন। এবং কবিন চিনো নামের একজন বৌদ্ধ মঙ্ক তাদের বিয়েটা পড়ান। আমরা অনেকেই জানি যে, ষ্টিভ ভারতে গিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।
তবে ষ্টিভের জীবনে আরেকটি প্রেম এসেছিল। তার গার্ল ফ্রেন্ডের নাম ছিল ক্রিস এ্যান ব্রেনান।
এই মেয়েটি আসলে ছিল ষ্টিভের হাই স্কুল সু্ইট হার্ট। ষ্টিভ যখন হোমষ্টেড হাই স্কুলে পড়তো, তখুনি ক্রিসের সাথে তার পরিচয় হয়। এবং ষ্টিভ কয়েক বছর ক্রিসের সাথে কাটান।
কিন্তু ১৯৭৮ সালে অ্যাপল যখন ভালো করতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ে ক্রিস গর্ভধারন করে ফেলেন। ষ্টিভের বয়স তখন ২৩।
ষ্টিভ আর ব্রেনান বিয়ে করেননি। কিন্তু তাদের জীবনে চলে এলো নতুন এক মুখ - একটি মেয়ে যার নাম রাখা হয় লিসা ব্রেনান। ষ্টিভ অ্যাপলের মায়া ছাড়তে পারলেন না। তিনি পারিবারিক বন্ধনে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। ক্রিস গর্ভপাত করাতে রাজী হননি।
এবং এটা নিয়ে টানাটানিতে তাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। ষ্টিভ তার মেয়েকে অস্বীকার করলেন। এমনকি এটা যখন কোর্টে উঠলো, তখন তিনি নিজেকে নপূংষক বলে দাবি করেন। তখন ক্রিসকে সোস্যাল ওয়েলফেয়ারের টাকায় জীবন চালাতে হতো।
অনেক দিন পর ষ্টিভ তার মেয়েকে ফিরিয়ে আনেন।
ততদিনে তার আর্থিক সংকট কেটে গিয়েছে। তিনি তার মেয়েকে হার্ভাডে লেখাপড়ার খরচ দেন। লিসা ২০০০ সালে গ্রাজুয়েশন করে; এবং বর্তমানে একটি ম্যাগাজিনে লেখক হিসেবে কাজ করেন।
আবার ষ্টিভ তার বয়সের দ্বিতীয় দশকে ফোক গায়িকা জোয়ান বায়েসের সাথে ডেট করেন। আবার একই সূত্র দাবি করে যে, ষ্টিভ অন্তত একদিনের জন্য ডেট করেন চিত্রনায়িকা ডায়ান কিটন।
এই দুটো তথ্য নিয়ে একটু সন্দেহ রয়েছে, কারণ এগুলো কেউই স্বীকার করেননি। "The Second Coming of Steve Jobs" বইটিতে এই তথ্যগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। তবে জোয়ান বায়েস এক সাক্ষ্যাৎকারে বলেছিলেন, তারা দু'জন হালকাভাবে কানেকটেড ছিলেন।
প্রেমিক হিসেবে স্টিভ জবস কেমন ছিলেন সেটা উন্মোচন হলে তা হবে একটা চমৎকার বিষয়!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।