পথিক আমি হারিয়েছি পথ । মেয়েটির নাম ছিল মধুমিতা । মধুর মত মিষ্টি ছিল তার মুখনিস্রিত কথা । আরো অনেক গুণ ছিল মধুমিতার, বন্ধুদের জন্য সে ছিল নিবেদিত প্রাণ । "সবার সুখে হাসবো আমি, কাঁদব সবার দুঃখে" এমনই ছিল মেয়েটি ।
কারো দুঃখে দেখে সে যেমনি ব্যাথিত হত, তেমনি কারো মুখে হাসি দেখলে সেও প্রাণ খুলে হাসতো । সে হাসির প্রকাশ মুখে নয়, মনে । তাকে প্রথম দেখে মনে হয়েছিল সে হাসতেই জানেনা । নানা কৌসলে মধুমিতার সাথে বন্ধুত্ব করলাম, কিন্তু আমার মনে হতো পরিবারের বড় মেয়ে বলে সবাইকে সে তার ছোটো ভাই বোন মনে করতো ।
যাই হোক প্রথমে পরিচয়, তারপর নাম জানা, একই কলেজে পড়া, কলেজে দেখা হওয়া, কার নোট ভাল বিনিময়ের মাধ্যমে তা যাচাই করা, শখ্যতা,সমঝোতা, একে অন্যকে সময় দেয়া, সান্নিধ্য এভাবেই সম্পর্কটা গজিয়ে উঠছিল ।
মধুমিতাকে হাসানোর প্রাণপন চেষ্টা করতাম, কিন্তু পারতাম না, একদিন একটা মজার গল্প বলে তাকে হাসালাম। কি সুন্দর ! কি অপূ্র্ব সেই হাসি, এ হাসি এই জগতের নয়, এ হাসি স্বর্গীয়। যে হাসি দেখার জন্য এতদিন আমার মন চাতোক পাখির মত তাকিয়ে ছিল মধুমিতার ওষ্ঠ যুগলের দিকে। তার সেই মধুমাখা হাসি দেখে দোদুল্যমান মন আমার মোচোড় দিয়ে উঠল। আমার কেনো জানি মনে হলো এই অপূরুপা মেয়েটির জন্য আমি এখোনো বেঁচে আছি।
আমার ভালোলাগা- ভালোবাসার কথা তাকে বল্লাম, মধুমিতাও বুঝতে পারলো, আমি তাকে কতোটা ভালোবাসি। সে বোঝাইতে চাইলো সম্ভব নয়, "কেনো ?" প্রশ্নটা আমার চোখের ইশারায়, তবে উত্তরটা তার মুখের-"আমাকে ভালোবাসা যায় না, এ সমাজ তা মেনে নেবে না, তুমিও সইতে পারবে না" । আমি বল্লাম "কেন যায় না ? আমিতো তোমার সব শুন্যতাকে ভরিয়ে দিতে চাই " । তবুও মোধুমিতা আমাকে ধরা দেয়নি। কোন এক অনাকাঙ্খিত সময়ে সে আমার কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছিলো অনেক দূরে..........।
তার যাওয়ার কিছুদিন পরে আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে মধুমিতার একটা চিঠি পেলাম । সে আমাকে লিখেছিলো "বন্ধু আমাকে ক্ষমা করো, আমি আমার পিতৃপরিচয় জানিনা, যার পিতৃপরিচয় নাই এই সমাজে কি, তার কাউকে ভালোবাসার অধিকার আছে, তাকে কি কেউ ভালোবাসতে পারে ?" আমি তার শেষ প্রশ্নের উত্তর আজো দিতে পারি নাই । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।