আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরিশালের ঐতিহ্যঃ তিমিরকাঠির এর মুড়ি

মানুষের জীবন খুবই বিবর্ণ থাকে মাঝে মাঝে। আসলে একে বিবর্ণ বলাটা বোধ হয় ঠিক না। এটাও একটা রং। হয়তো নিকষ কালো কিংবা ধূসর ! শুরু হয়ে গিয়েছে রমজান মাস। আমাদের দেশ সহ ভারতীয় উপমাহাদেশের প্রত্যেকটি মুসলিম পরিবারে ইফতারের আয়োজনে মুড়ি অপরিহার্য একটি উপাদান।

অধিকাংশ রোজাদারের পছন্দ গৃহস্থবাড়ির মোটা চালের মুড়ি। আর সে কারণেই ঝালকাঠির তিমিরকাঠির এর মুড়ির বিশেষ কদর। বরিশাল সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার একটি গ্রাম তিমিরকাঠি। সেখানে প্রায় প্রতি পরিবারই মুড়ি ভাজা ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। সেখানে প্রায় প্রতি পরিবারই মুড়ি ভাজা ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত।

এ ছাড়া উপজেলার দক্ষিণ তিমিরকাঠি, ভরতকাঠি, দপদপিয়া, কুমারখালী ও খেজুরতলা এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার জুরকাঠি, সোহাগকাঠি, বীর নারায়ণ, কয়ার চর, বাখরকাঠি, চৌদ্দপুরা ও বুড়ির হাটের মানুষ মুড়ি উত্পাদনের সঙ্গে কমবেশি জড়িত। এই শিল্পকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে মুড়ির হাট, আড়তদারি প্রতিষ্ঠান, ধান মাড়াই ও চাল ছাঁটাইয়ের কলসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৮৫ সালে পার্শ্ববর্তী গ্রাম জুরকাঠির বাসিন্দা আমজেদ মুড়ি ভেজে তা বাজারে বিক্রি শুরু করলে তিমিরকাঠির বেশকিছু পরিবার সংসারের বাড়তি আয়ের জন্য মুড়ি ভেজে বিক্রি শুরু করে। সেই থেকে শুরু দক্ষিনাঞ্চলের বিখ্যাত মুড়ির ইতিহাস। এ এলাকায় মুড়ির জন্য উপযোগী মোটা, নাখুচী ও সাদা মোটা নামের ৩ প্রজাতির ধান ভাল ফলে বলে মুড়ি উৎপাদন করতে ভাল হয়।

মুড়ি ভাজার জন্য দুই চুলা ও চার চুলা পদ্ধতি চালু আছে। দ্রুত ভাজার জন্য এখানে প্রায় সবাই চার চুলা ব্যবহার করে। চার চুলার দুটিতে বালু ও দুটিতে চাল দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময় পর উত্তপ্ত বালুর ভেতর চাল ঢেলে নাড়তে থাকলে চাল থেকে মুড়ি তৈরি হয়। বালুসহ ওই মুড়ি থেকে বালু আলাদা করলেই সুস্বাদু মুড়ি পাওয়া যায়।

একত্রে চার চুলায় ভাজলে দিনে গড়ে ১০০ কেজিরও বেশি ভাজা সম্ভব। দৈনিক গড়ে ১শ’ কেজি মুড়ি ভাজতে পারলে খরচ বাদ দিয়ে ৭/৮শ’ টাকা লাভ হয়। তবে নিজেরা ধান কিনে সিদ্ধ করে শুকিয়ে মুড়ি ভেজে শহরে নিয়ে বিক্রি করলে দ্বি-গুন লাভ হয়। তাই স্বল্প পূজিঁ খাটালে একজন বিক্রেতা শুধুমাত্র রমজান মাসে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। এ সব এলাকার অধিবাসীরা নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যকর মুড়িভেজে বিক্রি করে কিছুটা হলেও বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

এ অবস্থায় সরকারী বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মুড়ি ভাজা ও বাজারজাত করনের মাধ্যমে পল্লী এলাকার এসব পরিবারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.