মানুষের জীবন খুবই বিবর্ণ থাকে মাঝে মাঝে। আসলে একে বিবর্ণ বলাটা বোধ হয় ঠিক না। এটাও একটা রং। হয়তো নিকষ কালো কিংবা ধূসর ! প্রিয় বাংলাদেশের বুক চিড়ে দক্ষিনের বঙ্গোপসাগরের সাথে গিয়ে মিশেছে যে নদী তারই নাম গৌরনদী। আর এই নদীর তীরে গড়ে ওঠা জেলা বরিশাল এর একটি থানার নামকরন হয়েছে এই গৌরনদীর নামেই।
সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা অপরূপ মায়ার যে রূপ দেখতে পাওয়া যায় পুরো বরিশাল জেলাকে ঘিরে তা যেন পুরো বাংলাদেশটাকে প্রতিফলন করছে স্বচ্ছ আয়নার মত।
আর আজকের এই ব্লগার একজন আরমান এর জন্মস্থানও প্রিয় গৌরনদীতে। আজ আমি আমার সেই জন্মস্থানের বিখ্যাত দইয়ের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার তৃপ্তি থেকে নিজেকে আড়াল করতে পারলাম না।
বগুরার দই যেমন সারা বাংলাদেশে এক নামে বিখ্যাত, তেমনি গৌরনদী'র দই সারা বরিশাল বিভাগে এবং এর আসে পাশে বিখ্যাত। গৌরনদী'র লোকজন দইকে দই বলে না, একদম শুদ্ধ বাংলাতে বলে দধি।
অন্য সব বানানে আঞ্চলিকতা থাকলেও দধির বেলাতে দধিই বলে থাকে এখানকার লোকজন।
ভোজনবিলাসী মানুষের কাছে গৌরনদীর দই-মিষ্টি ছাড়া ভোজন রসনা যেন একটু অসমাপ্তই মনে হয় ! খাবারের পর যদি একটু দই না খাওয়া হয় তবে যেন একটু অতৃপ্তি থেকেই যায়। দই খাওয়ার অতৃপ্তি !
প্রায় দুইশত বছর পূর্বে ঘোষ বংশের ডাওরী ঘোষ নামের এক ঘোষ প্রথমে গৌরনদীতে তৈরি করেন লোভনীয় দই। ডাওরী ঘোষের মৃত্যুর পর গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী এই পণ্যের ধারাকে ধরে রাখেন বসন্ত ঘোষ ও তার ছেলে মাখন লাল ঘোষ। মাখন লালের মৃত্যুর পর দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে সেই ধারাকে ধরে রেখেছেন তার পুত্র শচীন ঘোষ।
গৌরনদী বন্দরে নদীর কোল রয়েছে সেই ঘোষ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। এখন তাদের মোট দোকানের সংখ্যা তিনটি আর একটি কারখানা। আশা করা যায় তারা তাদের এই সুনাম ধরে রাখবে। তবে এর প্রচার সারা বাংলাদেশ ব্যাপী ছড়িয়ে পরবে একদিন শুধু এতটুকু স্বপ্ন এই একজন আরমানের।
দধির হাড়ি
দুধ জ্বাল দেয়া হচ্ছে
এক কড়াই দুধ জ্বেলে আধা কড়াই করা হয়
শচীন ঘোষের পুরনো দোকান
এতো কষ্ট করে পড়লেন বরিশালের বিখ্যাত গৌরনদীর দধি, খাবেন না তা কি হয়? খেয়ে নিন যতো খুশি।
* ছবিগুলোর স্বত্ব একজন আরমানের।
উৎসর্গঃ
আফিফা মারজানা আপু আর কান্ডারী অথর্ব ভাই'কে যারা আমাকে এই ধরনের পোস্ট লিখাতে উৎসাহ যুগিয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।