আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরিশালের কবিতা;১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা

বরিশালের কবিতা ; সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল ব্যস্ততায় আটকানো শব্দেরা... বরিশালের কবিতা ১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা “কষ্ট কখনোই কষ্টকে বিকর্ষন করে না” .................. সম্মাদকীয়ঃ একজন সাহিত্যেকের সুখ কোথায়- দুঃখ কোথায়- সে অস্পষ্ট শব্দের তীব্রতম আঘাতে সাধীনতা ‍বিরোধী অপসাহিত্যিকের মুখোশ ছিড়ে ফেলতে- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ‍সৃষ্ট এ লিটল ম্যাগাজিন “বরিশালের কবিতা” অন্ধকারের অভ্যন্তরে যে যায়- চিরসুপ্ততায় সেই জানে কোথায় তার স্বর্গ, আলোর ছোঁয়ায় যে প্রানীরা মরে যায় তারাও কি জানে কোথায় সে অদৃশ্য সুখ আর যে প্রানীরা আলো চুম্বনে সেচ্ছামৃত্যু গ্রহন করে, তাদের সুখ কোথায় অন্ধকারের গর্ভে???..। ..................................... আটকাবে কতো – বেটিং হেনরী স্বপন অভিভূত হয়ে কাছে থাক নিরপেক্ষ- হেলাফেলা আবহাওয়া এখন, মোটামুটি… ডে- নাইট খেলার মাঠে – সৌরভ খেলবে না – আর বসন্তের বাকী কতদিন দরকার! প্রেতচ্ছায়া নিয়ত পেয়েছি চুর্ণকরা ঝিনুকের খোলস কুড়িয়ে নেয়া লবনাক্ততার ছলে মেতেছিলে স্বাদ যারা প্রতিপক্ষ – বিষাদে সমুদ্রচারী ; মনে রাখা – কুড়িয়ে কুড়িয়ে সমগ্রটা বের হল অতন্দ্র অনেক – ছায়ালোকে – কিছু জলোচ্ছ্বাস অনাবৃত দেখে ; আটকাবে কতো বেটিং – মুহূর্তের ছুড়ে দিয়েছিলে আনাড়ী কৌশল রেখে। .............. অরুনিম মুস্তফা হাবীব অরুনিম, একদিন কারো দুঃখের গল্প শুনে কাঁদতাম, অঝোরে ঝরতো চোখে সাম্যের জল এখন আমি বিমুঢ়, নিস্প্রভ আমার মনোলোক। অরুনিম, একদিন কারো নিরন্ন মুখ দেখে ব্যাথিত হতাম, টেরপেতাম বুকের অগ্নিপ্রপাত হ্যাঁ, খুব গোপনে খুলে দিতাম লঙ্গরখানা। অরুনিম, যখন দেখলাম আমার কষ্টের পুঁথি পড়ে মাধবী হাসে অন্তরালে ঠাট্টা তামাশায় বোনে ভাঙ্গনের বীজ অবহেলার সকরুন শেলে বিদীর্ণ আমি নিরবে।

অরুনিম, আমার পৃথিবীতে এখন ঝিলমিল করে না বসন্ত, শুধুই শীতের রাত্রি হেনেছি, সবাই জোসনায় মুখর- আঁধারে মলিন অতি চেনা মুখ দারুন অচেনা, বিভাজনে বিশ্বাসী। অরুনিম, তুমি কি চলমান নিয়মের বাইরে এসে উজানে কাটবে সাঁতার! তবেই তুমি আত্মার আরশি সুমহান প্রদীপ। ................................... কবিতা নয়; স্তনগুচ্ছ… তুহিন দাস ১. তুমি জ্যোৎস্না ফিরে আসা নও; শব্দরা এই কথাগুলি কও- তুমি এলোমেলো- তুমি ভুল; শরীরে ফুটে ওঠো প্রেমময় লাশফুল। ২. প্রায় সকালের গন্ধের মধ্যে বৃষ্টি আসে; আজ তোমার চুম্বনে আরো কয়েক পেগ অমরতা ঢেলে নেবো ঠোঁটে; এই বলে কোথায় পালালে- আচমকা? ..................................................... এক কবির জন্য আখতারুজ্জামান ইরান বাস্তবতা ধুলোবালি মেখেই – বেছে নেয় আঁকা-বাঁকা বন্ধুর পথ! অপেক্ষায় থাকা ঝিনুকের খোলসে- ঘোলাজল – নোনাজল নিরেট আসমানি রঙের জল পেলেও নিথরতার ধ্যানে থাকে নিশ্চল। ফানুস আর মুখোশের বিলাস পারেনা জড়াতে শূন্যলতা- পূরবী –সুরভি- সন্ধ্যাপ্রদীপ ঝাঁক- ঝাঁক জোনাকি- চওড়া উঠোনে জ্যোৎস্নার হোলি খেলা কালার গ্লাসে- মর্ডানিজম কুয়াশায়।

সকাল সন্ধা ভর দুপুর শিষ দিয়ে যায় একটা দোয়েল অপেক্ষায় থাকে – শুধু কবিতার বিরহে। ........................................... বৈশাখী পূর্ণীমায় বুদ্ধকে দেখে কিং সউদ কাটা বাছা খেকোরা পায় না ক্যালসিয়াম। এ্যালমুনিয়ামের মতো ডোক খেয়ে হাড়- ঢোকে সংজ্ঞাহীন রক্তমোড়া অস্থিতে! স্তুপচূড়া মেঘ ছুঁয়ে গর্ভ শানায়! বৈশাখী পূর্ণীমায় বুদ্ধকে দেখে, এক পেয়ালা কফির নিমন্ত্রন – করি; হতে নিঃঘুম রাতের সঙ্গী। ক্রমে মাছ খেকোরা চলছে বিড়ালের পেটে। ............................... জলপরী, জলে থাকি মোহাম্মদ জসিম আমাদের জলে জন্ম- জলের নারী, জলের পুরুষ… আমাদের জলেই বিয়ে – জলের কাবিন; আমাদের ছেলেটা একটা বেলেহাঁস- মেয়েটা শুশুক ছানা- ওদের মুঠোভর্তি শুধু জলকেলি শৈশব- আমাদের জলে জন্ম- জলের সংসার… আমাদের জলজ স্বপ্ন- একটাও প্রতিবেশী নেই- ........................ শহরের বাসিন্দা তুহিন ওসমান ডাস্টবিন আমিও তোমার মতো এ শহরের নাগরিক তোমার মত ঘর আমার উচ্ছিষ্টে ভরা লালায়িত লোভে কাকের উঁকি ঝুকি- আমি দায়িত্বহীন ব্যস্ত চাকার মতো শহর জুড়ে ঘুরি- তোমার মতো আমার ঘরে ঘুম যায় ইঁদুর, বিড়াল, মশা, মাছি, কুকুর পাহাড়ায় ওরা আমার মিতা ভাগাভাগি করি ডাস্টখাদ্য- আমি এই শহরের বাসিন্দা একটা ভোটার আমি পালন করি না নাগরিক অধিকার।

.................................................... প্রাপক নেই, পত্রখানা ফেরত এলো রিয়াজ আহমেদ [উৎসর্গঃ কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে; খোলা আকাশ এখনো জ্যোৎস্নার প্রেমপত্র বিলায়] কয় ফোঁটা রক্ত ঝরিয়ে ছিলে? জানিনা। জীবন্ত দেহে শুষ্ক রূহ উড়ে যায় আষাঢ়ের মেঘে বিদ্যুৎ চমকায়- ছলাৎ ছলাৎ জলের ঢেউ জ্বরের কাঁপন। শুশ্রূষা নার্সের সহস্র কবিতা জমেছিলো- ফোঁটা ফোঁটা উঁলি ধরা মলিন খাতা কবিতা শুঁকে রুদ্র নেই, আকাশটা রয়ে গেলো! ................... ধূমপায়ী মুখ সানাউল্লাহ সাগর স্লো রৌদ্রে ঝলসে যায় শূকনো পাতার রং তেজপাতা হাওয়ায় ভেসে উড়ে বেড়ায় অন্তরালের আগুন্তক পাখি। নিকোটিন আধভোলা কাব্যের ডিস্কে- গতি আনে কুন্ডলি পাকানো ধুয়া পথ দেখায় সভ্য সমাজের। শাপলা আরশীতে কালের প্রতিচ্ছবি ভাসে সভ্য জ্যোতিষীর অলৌকিক প্রস্থান নগ্ন নরকের পিচ্ছিল পথে… ঝিমধরা চেহারায় শান্ত নদের টলমল জল; কানে ভাসে দূরের এলান- ভাইসব- ভাইসব- ভালোবাসা গ্রহন করি স্বল্প সময়ের জন্য ভালোবাসা দেই! ভাইসব… .................................... রোদ্দুর বুকে কালো মেঘ অনিন্দ্য দ্বীপ হৃদয় থেকে হৃদয় চলে গেলে রোদ্দুর বুকে নেমে আসে কালো মেঘ ধ্বনির দুরত্বে প্রতিধ্বনি ভাসে চেতনায় জেগে ওঠে ছায়ার শরীর।

দ্বি-খন্ডিত হৃদপিন্ডের মাঝখানে হাহাকার ঈশ্বরের কামারশালার দগ্ধ মন পুরোহিত কন্ঠে গেয়ে চলি “দূরত্ব কি দূরে রাখতে পারে তারে যে থাকে হৃদয় মাঝারে। ” জ্যোৎস্নায় হেঁটে হেঁটে বুঝিনি অমাবস্যার অন্ধকার ও চাঁদ- অমাবস্যার রাত এলে তোরে মনে পড়ে। ....................... স্পর্শের খোঁজে ইব্রাহীম খলিল অসংখ্য স্পিড ব্রেকার ও মোড় বিশিষ্ট জীবন হাইওয়েতে আমরা কত কিছুরই স্পর্শ পাই, কিছু স্পর্শ কালকে অতিক্রম করে, করে ব্যর্থতাকে। কিছু স্পর্শ জীবনকে স্তব্ধ করে দেয় দেয় আফসোস- টেনসন-হতাশা। কিছু স্পর্শ দেয় পূর্ণতা- এনার্জি বাল্ব নিভিয়ে-ডিমলাইট জ্বালিয়ে, তবুও কোনো স্পর্শ ই য্যানো- অনন্তের নয়- সম্পূর্নরূপে পূর্ণাঙ্গ নয়, সময়ের নির্দিষ্টতায় সেও য্যানো ফুরায়- মেয়াদ উত্তির্ণ হয়।

তারপরও মানুষ স্পর্শ খোঁজে- হয়তো পায়-হয়তো না! কিন্তু; কে খোঁজে কোন স্পর্শ!!... ............................ পাগলের অভিপ্রায় মাহমুদ মিটুল সভ্যতার অহমিকা পদদলিত ক’রে উলঙ্গ দেহে অবোধ জনতার ইন্দ্রিয়ে আবর্জনা ঢেলে রাস্তায় হেঁটে চলা বদ্ধ উন্মাদকে যদি প্রশ্ন করা হয়- “ও পাগল তুই ন্যাংটা কেনো?” জবাবে, পরিতৃপ্ত আলেকজান্ডারের মতো ইচ্ছার বিশ্ব জয় করা আত্মমগ্ন পাগল বমির মতো কিছুটা হি-হি হাসি উগড়ে দেয়। সংস্কারে পদানত ঈর্ষায় প্রজ্জ্বলিত দুঃসাহসীক পদক্ষেপে পাগলকে সভ্য পোশাকাবৃত করার মানসে কেউ এগিয়ে গেলেই বিপত্তি- অসম্ভব ক্ষিপ্রতায় সে নিক্ষেপ করবে থু-থু! চোখে আক্রশের বহ্নি জ্বেলে ক্ষোভের দামামা বাজিয়ে রাস্তা কাঁপিয়ে এমন কর্মকান্ডে প্রকটিভ পাগলের অভিপ্রায়- আসলে, পাগল মিথ্যাকে প্রচন্ড ঘৃনা করে। ......................... ডারউনের পশুরা নাছির উদ্দিন সরদার ডারউইনের পশুরা আবার জন্মেছে পৃথিবীর বুকে দুরন্ত দাপটে ডাইনোসর অত্যাচার চাঁদের দেশে নয় সভ্যতার মানব দ্রুত পালাও সূর্যের দেশে জেনেটিক কোড ব্যর্থ এই অসাধারন পশুর সম্মুখে এরা ঈশ্বরকে বধ করে শ্মশানে চড়াতে চায়… ......... মা অজানা রোদ মা তুমি কোথায়- বলোনা কোথায়!! আজ আমি যে খুব অসহায় সেই অবুঝের বেলায় হারালে- আজ বিশের জন্মদিনে, কেনো জানি চোখের পাতারা- লাশের নিরবতায় গলির শেষ মোড়ে- একটি ছায়ার অপেক্ষায় অগোছালো চুলে সিঁথি কেটে শাসনে- শাসনে বলবে সবাইকে -আকাশের নক্ষত্রটি নও তুমি। প্লিজ মা আসোনা একবার- কালো মেয়ের কাছে। আমার যে খুব লাল শাড়ি পড়তে ইচ্ছে করে দাও না পড়িয়ে- তোমার মেয়ে শুধু সাদা শাড়ি পড়তে জানে তুমি কি তা জানো মা!? .......................... সাদা অপরাজিতা মুন্সী জুয়েল আহমেদ আমি জলের বুকে, চন্দ্রলোকে নিরুৎসাহী চোখে, তোমায় একেঁ, শান্তনা খুঁজে বেড়াই; কখনো ছন্দ ছাড়া স্বপ্ন তাড়াই।

একা একা বলে যাই বলে যাই কত কথা “শিমু” তুমি যেন সাদা অপরাজিতা। ক্লান্ত নীল আকাশে, হৃদয়হীন বাতাসে, ছায়া পথে, ক্ষিপ্ত রথে পাই ফিরে বারে বারে তোমার লাজুকতা; ‘শিমু’ তুমি যেন সাদা অপরাজিতা। মেহেদী মাতাল তোমার চুলে, যৌবন ভরা নগ্ন ফুলে, বর্ষা ভেজা দেহ মনে লাজুকতার স্পর্শ ক্ষনে উপলব্দি করি কামুকতা। ‘শিমু’ তুমি যেন সাদা অপরাজিতা। তোমার- আমার আমার- তোমার রাত জেগে থাকা হৃদয় দিয়ে হৃদয় মাঝে জীবন্ত প্রেম রাখা মনের ছোঁয়ায়, মনকে কাছে পাওয়া যেন উদাস নিরবতা ‘শিমু’ তুমি যেন সাদা অপরাজিতা।

............. শূন্যতা রায়হান ফরহাদ যখন দিন ফুরিয়ে যায় বিলিন হয়… সূর্যের আলো… তখন সবাই সরে পড়ে। নিঃসঙ্গ গ্রহচারীর মত আমি ছুটতে থাকি… চারিদিকে মহাশুন্য মাঝখানে ভাসন্ত আমি- তখন আমার হৃদয়ের শূন্যতা মহাশূন্য ছাড়িয়ে যায়। যেনো কোটি- কোটি আলোকবর্ষ ধরে আমি এই শূন্যতাকে লালন করছি। আমার হৃদয়ের গ্যলাক্সিগুলো খসে- খসে পড়ে যাচ্ছে টাপ- টুপ বৃষ্টির মত। এখন শুধুই শূন্যতা… আর শূন্যতা… …এভাবেই কিছু কবিতা শেষ হয় নতুন ভাবে জন্ম হবে বলে... …...…….…. ২য় সংখ্যা ফেব্রুয়ারীতে বের হবে……………... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.