পেট্রলের আগুনে কলেজছাত্রীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মৃতের স্বজন, গ্রামবাসী এবং সহপাঠীরা। ঘটনার ৪ দিন পরেও পুলিশ শুধুমাত্র পেট্রোলের বোতল উদ্ধার করতে পারলেও খুঁজে বের করতে পারেনি অপরাধী বখাটে প্রেমিকদের। গতকাল রত্নার গ্রামজুড়ে মানুষের আহাজারি। আগুনে পুড়িয়ে নির্মম এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গ্রামে বখাটে ও প্রেম নিবেদন সম্পর্কে নানা গুঞ্জন থাকলেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে মানুষের মধ্যে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাসিন্দা বল্লমঝাড় ইউনিয়নের খোলাবাড়ি গ্রামের রাজু আহম্মেদের কন্যা রত্না আকতার।
দেখতে শুনতেও ভালো। ছোটবেলা থেকে মামা মাহবুবুর রহমানের বাড়িতে থাকতো। তার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সমিতির বাজার এলাকায়। সেখান থেকে রত্না আক্তার (১৮) গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজে পড়ালেখা করতো। গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
দেখতে শুনতেও ভালো। সে কারণে রত্না একা কখনও পথ চলতে পারতো না। সুন্দরী বলে রত্নাকে দেখে শুনে পথ চলতে হয়েছে। তারপরও স্থানীয় কয়েকজন বখাটের রক্তচক্ষু এড়াতে পারেনি। মামা মাহবুবুর রহমানের আক্ষেপের শেষ নেই।
কয়েক দিন থেকে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। ভাগ্নিকে মেয়ের মতো বড় করেছেন। তার ইচ্ছা পূরণ করতে পড়ালেখায় সহযোগিতা করেন। কলেজে যাওয়া আসার সময় রত্না বখাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেক দিন। সে কথা সে মামাকে বলতেন।
মামাও তাকে সাবধান হতে বলতেন। আর রত্নাও বখাটেদের কাছে মাথানত করতে রাজি হয়নি। সে কারণে স্থানীয় কয়েক জন মাস্তান বখাটে তাকে প্রেম নিবেদন করেন। তারপর তার এক নিকট আত্মীয় তাকে ভালবাসার প্রস্তাব দেন। কিন্তু রত্না তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
সেটাই তার জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ওঁৎপেতে থাকে বখাটে প্রেমিকরা। গত সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো মামার বাড়ির পূর্ব দুয়ারী ঘরে তার নানী রহিমা বেগম, ছোটবোন রিতুর সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। সুযোগ বুঝে গভীর রাতে বখাটেরা বোতল ভরা পেট্রোল নিয়ে ঢেলে দেয় ঘুমন্ত রত্নার শরীরে। তারপর দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে দৌড়ে পালায় তারা।
দাউ দাউ করে আগুনে পুড়ে যায় রত্নার শরীর। সঙ্গে থাকা নানী আর বোনের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। গ্রামবাসী বলেন, পেট্রোলের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা প্রেম নিবেদনে ব্যর্থ হয়ে কোন বখাটে যুবক এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বাসুদেব বণিক বলেন, এর সঙ্গে প্রেম বিষয়ক কোন ঘটনা জড়িত থাকতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।