কাঁচাপাকা রাস্তার ঠিক মাঝামাঝি, সাইকেলে বসে ছিল নৌকার মাঝি।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জালিয়াতি রোধে দেশে ‘স্মার্টকার্ড’ সরবরাহের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
ফরাসি প্রতিষ্ঠান ওবার্তোর প্রযুক্তিগত সহায়তায় এ স্মার্টকার্ড তৈরি করা হবে। বর্তমানে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ পাঁচ বছর ও অপেশাদারের ক্ষেত্রে ১০ বছর। নতুন লাইসেন্সের ক্ষেত্রেও একই মেয়াদ থাকবে।
স্মার্টকার্ড সরবরাহকাজের উদ্বোধনের তারিখ ঠিক করতে বিআরটিএ ইতিমধ্যে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। সূত্র জানায়, ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য গত চার মাস নতুন আবেদনকারীদের জন্য লাইসেন্স ইস্যু করা হচ্ছে না। এই চার মাসে প্রায় ৭০ হাজার লাইসেন্স প্রার্থী আবেদন জমা দিয়েছেন। তাঁদের দেওয়া হবে আধুনিক প্রযুক্তির লাইসেন্স। এ ছাড়া পুরনো ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীরা ভবিষ্যতে লাইসেন্স নবায়ন করার সময়ও স্মার্টকার্ড পাবেন।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘লাইসেন্স জাল করা ঠেকাতে ও জনভোগান্তি রোধের জন্য নতুন প্রযুক্তির লাইসেন্স সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কার্যক্রম শুরু হলে কার্ড তৈরি হওয়ার পর আবেদনকারীকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হবে। আমরা নতুন লাইসেন্স দেওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা চলছে। ’ বিআরটিএ সূত্র জানায়, ফরাসি প্রতিষ্ঠান ওবার্তোর স্থানীয় এজেন্ট টাইগার আইটি নামের প্রতিষ্ঠান নতুন প্রযুক্তির লাইসেন্স দেওয়ার কাজ তদারক করবে।
এ ব্যাপারে চলতি বছরের ২৮ মে বিআরটিএ টাইগার আইটির সঙ্গে একটি চুক্তি করে। এরই মধ্যে ১৯টি জেলায় বিআরটিএ অফিসে আবেদনকারীর ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ গ্রহণ করার যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার মিরপুরসহ চারটি কেন্দ্রে এক মাস ধরে আবেদনকারীদের ছবি ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিআরটিএর মিরপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহসীন হোসেন জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় সবাইকে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিআরটিএর প্রশাসন বিভাগের পরিচালক তপন কুমার সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নতুন ধরনের লাইসেন্স জাল করা সম্ভব হবে না।
সরবরাহ করা কার্ডের ভেতরে একটি চিপ থাকবে। ওই চিপের মধ্যে আবেদনকারীর সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করা থাকবে। লাইসেন্সধারী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবে না। হারিয়ে যাওয়ার পর কেউ কার্ডটি পেলে নিকটস্থ থানায় জমা দেবেন। পুলিশ পরে কার্ড থেকে লাইসেন্সধারী ব্যক্তি সম্পর্কে সব তথ্য বের করতে পারবে।
’ সূত্র জানায়, এত দিন বিআরটিএর লাইসেন্স তৈরি করত পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠান ‘নাডরা’।
প্রতিষ্ঠানটি দিনে মাত্র ৫০০ লাইসেন্স দিতে পারত। বর্তমানে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি দিনে কমপক্ষে ১০ হাজার লাইসেন্স কার্ড দিতে পারবে। নতুন লাইসেন্স পেতে হলে আবেদনকারীকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সাত দিন পর ফিস জমা দিতে হবে। এরপর ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার তারিখ জানানো হবে।
সবশেষে সিরিয়াল অনুযায়ী লাইসেন্স ইস্যু করা হবে। এ ছাড়া, নবায়নের ক্ষেত্রে নতুন ফরম পূরণ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ ও ফিস জমা দিতে হবে। ফিস জমা দেওয়ার সময় জানিয়ে দেওয়া হবে লাইসেন্স পাওয়ার তারিখ। জানা গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করছে, বিআরটিএর বিশেষ দল সেখানে গিয়ে উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণার্থীদের তাৎক্ষণিক পরীক্ষা নেবে। এরপর দলটি প্রশিক্ষণার্থীদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে পর্যায়ক্রমে ওই প্রশিক্ষণকেন্দ্রে লাইসেন্স পাঠিয়ে দেবে।
মূল আর্টিকেল ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।