সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে তার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে দুদিনের এই সফরে বাণিজ্য, মানবিক সহায়তা ও মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিয়ে থিয়েন ও তার সফরসঙ্গী মন্ত্রীরা আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পাশাপাশি মিয়ানমার তার তেলক্ষেত্র, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং টেলিযোগায়োগ খাত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।
এক সময়ের সামরিক কর্মকর্তা থিয়েন কয়েক দশকের সামরিক শাসনের ধাক্কা থেকে মিয়ানমারের অর্থনীতিকে তুলে ধরতে পশ্চিমা সাহায্য পাওয়ার চেষ্ট করছেন। সামরিক একনায়কত্বের সময় পশ্চিমাদের আরোপ করা বিভিন্ন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞায় ধুঁকছিল মিয়ানমারের অর্থনীতি।
থিয়েন সরকার গৃহীত গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য পশ্চিমা সরকারগুলো মিয়ানমারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। গণতান্ত্রিক সংস্কারের পদক্ষেপ হিসেবে তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি’কে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি দেন, কিছু রাজনৈতিক বন্দিকেও মুক্তি দেন এবং বিরোধীদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দেন।
কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো চায় ২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে গণতান্ত্রিক রূপান্তর আরো জোরদার করুক মিয়ানমার। ২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা সু চি। সু চি’কে সেই সুযোগ দেয়ার জন্য থিয়েন সরকারের ওপর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো।
শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি গত বছর যুক্তরাজ্য সফর করে এসেছেন।
এছাড়া মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সহিংসতা থেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও থিয়েনের ওপর চাপ আছে।
গত এক বছরে মিয়ানমারে জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় অন্তত ২৩৭ জন নিহত হয়েছে। উদ্ধাস্তু হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘটনার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা।
মিয়ানমারের জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক এসব সহিংসতা বন্ধে পিটিশন তৈরি করেছে অ্যাভাজ নামের একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী। প্রায় দশ লাখ মানুষ তাদের পিটিশনে সই করেছে বলে জানিয়েছে অ্যাভাজ।
সোমবার থিয়েনের সফরকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল করার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা।
মিয়ানমারের মুসলিমদের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধ, দেশটির অবশিষ্ট রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও সকল দমনমূলক আইন প্রত্যাহারে দেশটির সফররত প্রেসিডেন্ট থিয়েনের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সফরকালে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি, অপরাধীদের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা ও দেশটির রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চালানো নির্যাতন বন্ধ করার জন্য প্রেসিডেন্ট খিয়েনের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে তারা।
দুদিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে থিয়েনের ফ্রান্স যাওয়ার কথা রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।