বহুল আলোচিত ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল ২০১৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আজ সোমবার জাতীয় সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
পাস হওয়া বিলে জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা, ওয়েল্ডিং, মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি, বেসরকারি রেডিও-টেলিভিশন, হাসপাতালসহ কৃষিশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানিতে শ্রমিকের চাকরির মেয়াদ নয় মাস হলেই সেই শ্রমিক প্রতিষ্ঠানের সুবিধাভোগী হিসেবে বিবেচিত হবেন। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের জন্য গ্রুপ বিমা থাকবে।
যেসব প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১০০ জন শ্রমিক রয়েছেন, সেসব প্রতিষ্ঠানে এই বিমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শ্রমিকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিমার অর্থ আদায় করা মালিকের দায়িত্ব হবে। মালিক বিমা থেকে আদায় করা অর্থ ওই শ্রমিকের পোষ্যদের সরাসরি প্রদান করবেন অথবা শ্রম আদালতে পাঠাবেন।
বিলে আরও বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার বা এর বেশি শ্রমিক কাজ করেন, সেখানে স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনার ব্যবস্থা থাকতে হবে। পেশাগত রোগে আক্রান্ত শ্রমিকদের সুস্থ হওয়ার পর্যন্ত মালিকের দায়িত্বে চিকিত্সা করতে হবে।
এ ছাড়া, যেসব প্রতিষ্ঠানে ৫০০ বা এর বেশি শ্রমিক কাজ করেন, সেখানে প্রতিষ্ঠান কল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, অনুমোদিত কারখানা ভবনের নকশার সঙ্গে কারখানার মেশিন স্থাপনের নকশার কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন ঘটানো যাবে না। কাজ চলার সময় প্রতিষ্ঠানের বাইরে যাওয়ার কোনো দরজা বন্ধ করা যাবে না।
পাস হওয়া বিলে শ্রমিকের স্বার্থরক্ষায় শ্রমিক নিয়োগে ‘আউট সোর্সিং’ কোম্পানিগুলোর জন্য নিবন্ধনের বিধান রাখা হয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা শ্রমিক শ্রম আইনের আওতাভুক্ত থাকবেন।
প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কাজে অস্থায়ীভাবে, অর্থাত্ সাময়িক, দৈনিক বা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সরাসরি ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়ার বিধান বিলে রাখা হয়েছে। রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের ওপর আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, এই বিলের ওপর জনমত যাচাইয়ের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, অনেক আলাপ-আলোচনার পর বিলটি আনা হয়েছে।
বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আইনটি পাস করলেও সে সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৫৬টি সংশোধনী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেগুলো গ্রহণ করেনি। বরং সে সময় শ্রমিকদের ওপর হত্যা-নির্যাতন চালানো হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই আইন পাস হলে শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হবে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থগিত করা জিএসপি ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।