প্রথমতঃ শ্রমিকরা নিরাপত্তার জন্য ফাটলওলা ভুবনে ঢুকতে না চাইলে তাদের লাঠি দিয়ে ভয় দেখিয়ে কাজে ঢুকানো হয়।
শ্রমিকরা তো কারখানার কর্মি মালিকের দাস নয়। কিন্তু ব্যবহার দেখে মনে হয় ওরা প্রভুর কেনা গোলাম।
গার্মেন্টস মালিকদের লাঠিয়াল বাহিনী কেন?
দ্বিতীয়তঃ সাংবাদিক সোহেল রানার কাছে ফাটল বিষয়ে জানতে চাইলে এটা এমন কিছু নয় প্লাস্টার উঠে গেছে বলে দাবী করেন। বোয়েটে যোগাযোগ করা হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার এসে পরীক্ষা করে গেছে।
অথচ বোয়েট থেকে বলা হয়, তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় নাই।
রানা প্লাজার রানা যদি দোষি না হয় তা হলে সে পলাতক কেন? তার বাবাও পলাতক।
তৃতীয়তঃ সাধারন মানুষ নিজের রক্ত দিয়ে সাহায্য করছে।
শুধু কী রক্তে হবে? হাড় ভেঙ্গে গেছে. পঙ্গুত্ব বরণ করছে, কত মানুষের সাথে কত পরিবার। মানুষ হারানোর সাথে হারিয়েছে জীবন ধারনের নিশ্চয়তা।
ওষুধ পথ্য, আর্থিক সহয়াতা ভালোবাসা মমতার সাথে নিশ্চিত করতে হবে ঘাতকের দৃষ্টান্তমুলক শান্তি।
চতুর্থতঃ উদ্ধার কার্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী নাই। আলো অক্সিজেনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। সরকার, বড় বড় রাজনৈতিক দল এই সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসে না কেন? পুলিশ, আর্মি, ফায়ার বিগ্রেড এসেছে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নাই কেন।
বড় কনসট্রাকসন কোম্পানিগুলো তাদের সহায়তা নিয়ে আসে না, তাদের গায়ে গণ্ডারের চামড়া আবেগ কম।
দুই দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে জীবিত মানুষ ধ্বংস স্তুপে আটকে আছেন। উদ্ধার কাজে সাঠিক সহয়াতা সহযোগিতায় তৎপর হলে আরো দ্রুত অনেক জীবিত মানুষ উদ্ধার সম্ভব হতো হয়তো।
থালেদা জিয়া হলুদ শিফন পড়ে ভাঙ্গা বিল্ডিং দেখতে এলেন নাকি নিজেকে দেখাতে এলেন। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কি ব্যবস্থা নিলেন। অন্ধকার গহ্বরে নিঃশ্বাস আটকে আসা মানুষের কাছে কতটা অক্সিজেন পৌঁছে দিলেন?
সাধারন মানুষ যাদের কিছু নাই তাদের মন আর হৃদয় নিয়ে তারা অস্থির ছোটাছুটি করছেন।
অন্যরা বেশ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন যেন কিছুই হয়নি দেশে।
সবাই এখন অক্সিজেন খুঁজছে। আর্মি, ফায়ার ব্রিগেড অভিজ্ঞ সব লোকজন শুরু থেকে আছে অথচ প্রয়োজনীয় কি লাগবে সে সব যন্ত্রপাতির দেখা নাই। টর্চ লাইট পর্যন্ত! ওরা কি প্রশিক্ষিত দল নয়?
সাধারন মানুষ মাথায় হেলমেটও নাই ঢুকে পড়ছে মৃত্যুকুপে নিজের জীবন বিপন্ন করে। এরাই র্নিভিক যোদ্ধা বাংলাদেশের।
একজন মানুষকে বের করে দ্রুত দৌড়াচ্ছে এম্বুলেন্সের কাছে। ঐ পথে অসংখ্য ভাঙ্গা খোয়া ইট পাথর পরে আছে। এই পথটুকু পরিস্কার করে ওদের চলাটাকে সহজ করতে পারতেন অসংখ্য ভীড় করে থাকা মানুষ। আমার বারবার মনে হচ্ছিল ওদের চলার পথটা পরিস্কার করে দিই। ওখানে থাকলে তাই করতাম।
এখান থেকে একটা শিক্ষা নেয়া দরকার প্রয়োজনের আগে প্রস্তুত থাকার শিক্ষা।
এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। উদ্ধার কাজে কি লাগে না লাগে কি ভাবে দ্রুত কাজ করতে হয় সবার সহায়তায় এসবের কোন সমন্বয় নেই।
বিদেশে যা হয় যে ঘটনা থেকে পুলিশ জনগণকে দূরে থাকতে বলে। জনগণ তাদের আদেশ পালন করে।
এই বিষয়টা স্বজন আত্মিয়র কাছে খুব আবেগ প্রবণ কিন্তু কাজের প্রয়োজনে নিরাপদ দূরে তাদের থাকা দরকার নিয়ম মেনে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত পোষাক রফতানীকারীর স্থানে আছে বাংলাদেশ চায়নার পরেই বাংলাদেশেন স্থান এখন। এক কানাডা থেকেই পাঁচশত বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ। আথচ যাদের অক্লান্ত শ্রমে আয় হয় এই বিশাল অর্থ তার কনা মাত্র দেয়া হয় তাদের পারিশ্রমিক।
শ্রমিকের বেতন ৭০-১০০ ডলার মাসে।
যেখানে চায়নার শ্রমিক ৪০০-৫০০ শত ডলার আয় করে।
মালিক পক্ষের সম্পদ কোন আকাশ পৌঁছেছে তার অনুমান করা যায় র্নিদ্বিধায়। সুখের অফূরান ভোগ বিলাশে; তারা পরিবারের সবাই সোনার চামুচ মুখে দিয়ে আছে কিন্তু যাদের শ্রমে অর্জন করছে এই সম্পদ; তাদের রক্ত কি ভাবে শোষন করছে নিম্নতম সুযোগ না দিয়ে। উপরন্ত লাঠিয়াল বাহিনী রেখে দমন করছে নিপিড়ন করছে দাস প্রথার অনুসরনে।
শ্রমিকের নিরাপত্তাহীন অমানবিক অসুস্থ পরিবেশে র্নিমিত পোষাক আমদানীকারী আর গ্রহণ করবে কিনা এব্যাপারে বিশ্ব জুড়েই প্রশ্ন উঠেছে।
সাধারন মানুষরা নিজ প্রয়োজনে পোষাক শিল্পের ব্যবসার বিশ্ব বাজার গড়ে তুলে নিজেদের সাথে কর্ম সংস্থান তৈরী করেছিল অসংখ্য মানুষের। হচ্ছিল দেশের উন্নতি।
দু চারটা অমানবিক বর্বর লোভী মালিকের কারণে দেশের বিশাল এই শিল্পে ধ্বস নামবে। পিছিয়ে যাবে অনেক অগ্রসরতা উন্নতি।
এজন্য রাষ্ট্রিয় নিয়মের শিথিলতা এবং মালিক পক্ষের সঠিক ভাবে যথাযথ পরিবেশের নিয়ম না মানার প্রশ্নটিও বিবেচনা করছে পোষাক আমদানী কারী দেশ গুলো।
কারণ মোটে ছয় মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটেছে কিন্তু কোন শাস্তি বা বিচার হয়নি একটিরও।
দেশ যখন বিশাল এক ক্ষতির সম্মুখিন হতে যাচ্ছে তখন বেশ নিশ্চিন্তে হাস্যকর ভাবে একে ওপরকে দোষরোপ করে সময় কাটাচ্ছেন মন্ত্রী নেতারা।
অসহায় মানুষ আটকে আছে রাজনীতির জালে।
এই ভয়াবহ ঘটনার পর শ্রমিকরা যেমন বেরিয়ে এসেছে ক্ষোভে এই সময়ে তাদের দাবী গুলো নিশ্চিত করে সুস্থ পরিবেশ, বেতন ভাতা বোনাষসহ বিদেশী উর্পাজনের সমস্থ সুযোগগুলো নিশ্চিত করার জন্য সহায়তা করা উচিত। সুস্থ চিন্তার মানুষের শ্রমিকদের পক্ষে মালিক পক্ষের কাছ থেকে দাবী আদায়ের জন্য।
চায়নার শ্রমিকরা যখন ৪০০- ৫০০ ডলার বেতন পায় বাঙলাদেশের শ্রমিক সেখানে ২০০-৩০০ অন্তত্ পাওয়া উচিত।
অমানবিক নিয়ম না মানা বিবেকহীন অর্থ লোভী রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা সম্পর্কে এত কথা কেন প্রধানমন্ত্রি বলছেন; প্রধানমন্ত্রির কী আর কাজ নাই।
অবিবেচকের কারণে এত বড় র্দূঘটনা ঘটল তাকে বিচার করে শাস্তি দেয়া হবে, সে যেই হোক এটাই তো হওয়া দরকার শেষ কথা।
কোন এক সময় শেখ হাসিনাকে বলতে শুনেছিলাম। অপরাধী সে যে দলেরই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে।
গত চার বছরে অনেক অপরাধ যদি এই কথা অনুযায়ী নিরপক্ষ হতো। উনার নিজের অবস্থানটা তবে আরো মজবুদ হতো। কিন্তু দলের লোকের মান বাঁচাতে নিজের অবস্থান নড়বড়ে করছেন। হাস্যকর হয়ে উঠছে দলের অবস্থা ।
শেষ বেঁচে থাকা মানুষটি বেরিয়ে আসুক মাটির নীচ থেকে।
উদ্ধারকারীরা সুস্থ থাকুন। এই বিপর্যয় থেকে শুরু হোক ভুলগুলো সুধরে সঠিক ভাবে চলার অনুসরন এবং অনুশীলন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।