আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছিনতাইকারীর কবলে পড়া কিন্তু আমিই যখন সুপারহিরো, তখন ................

A Hero will Rise Up Just In Time ফাস্ট ইয়ার, ডোন্ট কেয়ার। সো নেভার কেয়ার। ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েই ডোন্ট কেয়ার ভাবটা চলে আসলো। পড়াশুনা বাদ দিয়ে হৈ হুল্লা সারাদিন। কয়েকটা বান্ধবীও জুটলো।

সারাজীবন পড়ে এসেছি ছেলেদের স্কুলে, ১ম মেয়েদের সাথে আড্ডা, মজাই আলাদা। এর মধ্যে একজনের সাথে আবার একটু প্রেম প্রেম ভাব হলো। একদিন ঠিক করলাম দুজনে ঘুরতে যাব। আমাদের কলেজ থেকে বেশ দূরে একটা সুন্দর জায়গা ছিল। একটা মাজার ছিল সেখানে, অনেক লোকজনের ভীড় লেগে থাকতা সেখানে।

তার থেকে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই একটা সুন্দর বিল। চারপাশে জঙ্গলের মতো। অপূর্ব জায়গা। কিন্তু বেশ নির্জন। দুজনে রওনা হলাম সেখানে।

মন উরুউরু। পাশাপাশি হাটছি দুজনে, জঙ্গলের ধার ঘেষে, বিলের পাশ দিয়ে। হঠাৎ কোথা থেকে ৪-৫ জন ছেলে এসে আমাকে ডাক দিল। আমি এগিয়ে গেলাম ওদের দিকে। "কোন জায়গা থেকে আসছেন, দাদা? " ওদের একজন প্রশ্ন করলো আমাকে।

কলেজের নাম বললাম। বললাম আমরা স্টুডেন্ট। "আইডেন্টি কার্ডটা দেখান তো" রাগ হলো আমার কিন্তু কিছু বললাম না। দেখালাম। কার্ড দেখে বুঝলাম ব্যাটার মেজাজ খিচড়ে গেছে।

দেখাতে না পারলে একটু ভাব জমাতে পারতো। যাইহোক, এবার সরাসরি আসল কথায় চলে আসলো ছেলেটা। বলল, "এখানে ঘুরতে এসেছেন, ঘুরেন। কিন্তু আমাদের খরচা বাবদ, মানিব্যাগে যা আছে সব দিয়ে, তারপর যা ইচ্ছা করেন। " দেখলাম নতুন বান্ধবীর কাছে ইজ্জত যায় প্রায়।

জেগে উঠল আমার ভিতরের সুপার হিরো। ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম, একটা পয়সা দেব না। যান, এখান থেকে। আমার কাছ থেকে ওরা ঠিক এধরনের কথা আশা করেনি। নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো ওরা।

তারপর যে আমার কাছে টাকা চেয়েছিল, সে আমাকে বলল, এখান থেকে নিজের পায়ে হেটে বাসায় ফিরতে পারবেন না কিন্তু। বের করেন সব। ঠাশ করে একটা চড় বসায়ে দিলাম ছেলেটার গালে। অন্যরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। তারপর একটু সামলে নিয়ে, অন্যরাও আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো।

আমি একটা গাছ থেকে মট করে একটা ডাল ভেঙ্গে নিলাম। তারপর সমানে বাড়ি মারতে লাগলাম সবকটাকে। কেউ সামনে দাড়াতেই পারলো না। কয়েকটা বাড়ি খেয়েই মোটামুটি দৌড় লাগালো পড়িমড়ি করে। লাঠিটা ছুড়ে ফেলে দিলাম একপাশে।

লুবনা দৌড়ে আসলো। ওর চোখে খেয়াল করলাম, আমার প্রতি শ্রদ্ধা মিশানো একপ্রকার আবেগ। হিরো হয়ে গেলাম যেন এক নিমিষেই। ব্যাপারটা এরকম হতেও পারতো। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

বাস্তবে যেটা ঘটেছিল: ছেলেটা বলল, "এখানে ঘুরতে এসেছেন, ঘুরেন। কিন্তু আমাদের খরচা বাবদ, মানিব্যাগে যা আছে সব দিয়ে, তারপর যা ইচ্ছা করেন। " দেখলাম নতুন বান্ধবীর কাছে ইজ্জত যায় প্রায়। কিন্তু কিছু করার নাই। আমি মিনমিন করে বললাম, ইয়ে ভাইয়া, আমার পকেটে মাত্র দুইশ তিরিশ টাকা আছে।

আপনারা বড় ভাই, দুইশ টাকা নেন, আর তিরিশ টাকা নাহয় আমি রিক্সা ভাড়ার জন্য রেখে দেই। ছেলেটা বলল, "ঠিক আছে। দুইশ টাকা দাও, আর বেশীক্ষন ঘোরাঘুরি করোনা। আরো দল আছে কিন্তু। কিছু না দিতে পারলে ভালোমতো মাইর খাবা।

" আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে বললাম, "থ্যাংকু ভাইয়া, আপনার মনটা কতো বড়............................................................(পাম পট্টি)" ওরা টাকা নিয়ে চলে গেল। আমি তাকালাম লুবনার দিকে। না, ওর চোখে কোন আবেগ দেখলাম না। অল্পের উপর দিয়ে গেছে , এতই সে খুশী। আমাকে ঝাড়ি দিয়ে বলল, "তাড়াতাড়ি চলো, অন্য দলের পাল্লায় পড়লে তোমার খবর আছে।

" আমি বাধ্য ছেলের মতো লুবনার পিছু নিলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.