ডা. মো. মঈন হাসান চঞ্চল। তিনি মানিকগঞ্জ সদরের মমতাজ চক্ষু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক। চঞ্চলের বাবা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও মা ডা. জাহানারা বেগম যশোর শহরে লাল দিঘীর পাড়ে অবস্থিত সালেহা ক্লিনিকের মালিক। চঞ্চলের বাবা-মা’র সম্মতিতে আয়োজন করেই এ বিয়ে হয়েছে। গতকাল মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বিয়ের পর চঞ্চল-মমতাজ যশোরে একবার এসেছেন।
বিয়ের আগেও একবার এসেছিল। তিনি বলেন, ওরা একে অন্যকে পছন্দ করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। আমরাও তা মেনে নিয়েছি। মমতাজের আগের স্বামী মানিকগঞ্জের পৌর মেয়র রমজান আলীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ডিভোর্স হয়। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিয়ে হয়।
জানা গেছে, মমতাজের প্রথম স্বামী ছিল বিখ্যাত গায়ক রশিদ বয়াতি এরপর মানিকগঞ্জ পৌরসভা চেয়ারম্যান রমজান আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় মমতাজের। তবে চঞ্চলেরও এটা দ্বিতীয় বিয়ে। চঞ্চলের ছোট দুই বোন চৈতি ও চন্দ্রা ঢাকার উত্তরার একটি বেসরকারি মেডিকেলে পড়াশোনা করতেন। গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চৈতির বিয়েতে নিমন্ত্রিত অতিথি হয়ে এসেছিলেন মমতাজ। চঞ্চলের পূর্ব পরিচিত ও দীর্ঘদিনের বান্ধবী মমতাজের সঙ্গে ওই বিয়ের দিনগুলোতে অতিমাত্রায় ঘোরাঘুরি করেছিলেন দুজন।
একপর্যায়ে চঞ্চলের বাবা বলেন ‘তোমরা যে দুজন খুব বেশি ঘোরাঘুরি করছো তাতে লোকজন কানাঘুষা করছে। তোমরা বিয়ে করবে কিনা বলো? এভাবেই কথাবার্তার শুরু তারপর বিয়ে হয়। চঞ্চলের মা তার একজন ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীকে জানিয়েছেন ‘এবারের ঈদে যশোরে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন' ঢাকায় মমতাজের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকায় মমতাজ আসতে পারেননি। ’ ১৯৮৯ সালে এসএসসি ও ১৯৯১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর যশোর ছাড়েন চঞ্চল।
বাজিতপুরের বেসকারি জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করেছেন ১৯৯৬ সালে। অধ্যয়নরত অবস্থায় সহপাঠী ও জহিরুল ইসলামের সম্পর্কের নাতনিকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। চঞ্চলের ডা. বাবা এটা মেনে নেননি প্রথমে তবে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় আবারও বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে আমন্ত্রিত একজন অতিথি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন প্রথম বিয়ের কথা। কিছুদিন পর লন্ডনে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য গেলে সেখানে কিছুদিন থাকার পর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
চঞ্চল ফিরে আসেন দেশে। এরপর কয়েক বছর ধরে চঞ্চলের বাবা-মা নতুন একটা মেয়ে খুঁজছিলেন ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য। এমনই একজন মানবজমিনকে জানিয়েছেন ক’দিন আগে আমি গিয়েছিলাম চঞ্চলের মায়ের কাছে একটা পাত্রীর সন্ধান নিয়ে। তখনই ডা. জাহানারা জানান মমতাজের সঙ্গে তার ছেলের বিয়ের কথা।
ওদিকে কলকাতা প্রতিনিধি জানান, পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের আদালতে মমতাজের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের মামলা চলছে।
ভারতে গান গাওয়ার জন্য তিনি জনৈক শক্তিশঙ্কর বাগচীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। তার কাছ থেকে কয়েক দফায় ২ লাখ রুপিও নিয়েছিলেন। কিন' শর্ত অনুযায়ী তিনি কোন অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন শক্তিশঙ্কর বাগচী। তবে নিম্ন আদালত থেকেই ২০১০ সালে মমতাজ জামিনের আবেদন করেন। এই সময় তার সঙ্গে বহরমপুর গিয়েছিলেন ডা. মঈন।
তিনিই মমতাজের হয়ে আইনজীবী নিয়োগ করেছিলেন এবং সমস্ত বিষয়টি তদারক করেছিলেন। এরপর কলকাতা হাইকোর্ট তার জামিন খারিজ করে তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়। সমপ্রতি কলকাতা হাইকোর্ট থেকে এক নির্দেশে মমতাজের নামে ভারতে আসার মালটিপল ভিসা ইস্যু করা হলে তা বাতিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে। একমাত্র মামলায় হাজিরা দেয়ার শর্তেই তার নতুন করে ভিসা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।