আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের অবস্থা!!

নো ওয়ান ক্যান মেক মি ফিল ইনফেরিওর উইদআউট মাই কনসেন্ট! শিরোনামে ইচ্ছাকৃত ভাবে একটু ভুল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান নাম হচ্ছে অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) যার প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিলো অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এআরসি)। কিন্তু এখনো অধিকাংশ মানুষ এআরসি হিসেবেই এটাকে চেনে দেখে শিরোনামে রাখা হলো। যাই হোক, ২০০২ সালে এই প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। যে মূল উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের পদচারনা সেটা হচ্ছে বাংলাদেশে সংঘটিত সড়ক দূর্ঘটনাগুলোর কারন অনুসন্ধান এবং প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করার জন্যে বৈজ্ঞানিক গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা।

এছাড়া দূর্ঘটনা প্রতিরোধে ড্রাইভার থেকে শুরু করে পথচারী সবার ভিতরেই নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি করাও এই প্রতিষ্ঠানের একটি ম্যান্ডেট। নিঃসন্দেহে এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ ছিলো, এবং যেহেতু বুয়েটের তত্ত্বাবধানেই এই প্রতিষ্ঠানটি কাজকর্ম করবে, তাই এটা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো মানুষ নিতান্তই কম ছিলো না। এরপর অনেক বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে সড়ক-নৌ-রেলপথে দূর্ঘটনার সংখ্যা এবং এতে নিহতের সংখ্যা আনুপাতিক হারে শুধু বেড়েই চলেছে। এই দূর্ঘটনা বৃ্দ্ধির কোন দায় অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে দেয়ার প্রশ্নই উঠে না, এবং আমি দিচ্ছিও না।

কিন্তু আমার অভিযোগ হচ্ছে, এই যে এতো এতো দূর্ঘটনা ঘটছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রতিষ্ঠান তাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে? বা আদৌ করেছে কি? শুধু কোন দূর্ঘটনা ঘটলেই দেখা যায় টিভি মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মহোদয় কিছু গৎবাঁধা কথাবার্তা বলছেন। সময় এসেছে তাদেরকে প্রশ্ন করারঃ তাদের রিসার্চ থেকে তারা দূর্ঘটনার কি কি কারন চিহ্নিত করতে পারলো বা কি কি উপায় বের করলো দূর্ঘটনা প্রশমনের? তাদের গবেষনালব্ধ ফলাফলগুলোকে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে সমন্বয়মূলক কাজের প্রয়োজন সেটাতে তারা কতটুকু সফল? নাকি এই বস্তা বস্তা গবেষনা রিপোর্টগুলা শুধু প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরীর শেলফগুলো্র সৌন্দর্যই বর্ধন করে যাবে আমৃত্যুকাল? এই প্রতিষ্ঠানটি আসলে কি কি কাজ সম্পন্ন করেছে বা বর্তমানে কি করছে সে সম্পর্কে ধারনা নিতে সম্প্রতি আমি তাদের ওয়েবসাইটে গিয়েছিলাম। সেখানে যেয়ে আমার লজ্জা পাওয়ার পরিমান আরো বেড়ে গেছে। এই ওয়েবসাইট দেখে কে বলবে যে প্রতিষ্ঠানটি বুয়েটের অন্তর্ভুক্ত এবং বিগত ৯ বছর ধরে কাজ করছে? প্রয়োজনীয় যা কিছু খুঁজতে যাবো সবকিছুই ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’!! এছাড়া তাদের ‘Background’ এ যে কথা বলা আছে, ‘Mission’ এ-ও সেই একই কাওয়ালী চোথা মেরে দেওয়া হয়েছে! আরেকটা জায়গায় ‘Site’ কে লিখেছে ‘Sight’! আমি রীতিমতো বেকুব হয়ে গেছি এখানে এসে! এটা সত্যি কথা, বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠানই তাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করতে পারে না নানাবিধ আমলাতান্ত্রিক কারনে। কিন্তু বুয়েটের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যদি ঠিক মতো পরিচালনা করা যায় তাহলে বাংলাদেশের সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাসে অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট অনেক বড় অবদান রাখতে পারবে। বর্তমানে যিনি পরিচালক তিনি যেন ভবিষ্যতে সুনিপুনভাবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত করেন - এই প্রত্যাশা রইলো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.