ধরি বাংলাদেশের কোন গ্রামের গরীব পরিবারের ছেলে আব্বাস। সে এবার এইচ এস সি্ পরীক্ষা দিয়েছে। তার মতো গরীব ছেলের জন্য পরীক্ষার টাকা জোগাড় আর স্যারদের বেতন দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া ছিল খুবই কষ্টের কাজ। তারপরেও এই ছেলে এইচ এস সি্ পরীক্ষাতে এ+ পেল। তার পরিবারের সবাই খুব খুশি।
আব্বাসের অনেকদিনের ইচ্ছা সে ইঞ্জিনিয়ার হবে, এবার মনে হয় তার স্বপ্নটা সত্যি হবে।
কিন্তু তার বাবার চোখে ঘুম নাই। সামনে ছেলের ভর্তি পরীক্ষা, সেখানে আবার অনেকগুলা টাকা লাগবে, ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিগুলো মানে বুয়েট,কুয়েট, রুয়েট, চুয়েটের ফর্ম কিনা, ঢাকা খুলনা চট্টগ্রাম রাজশাহী সব জায়গায় গিয়ে থাকা... অনেক খরচের কাজ,এত টাকা তারা কোথায় পাবে?
আব্বাসও ব্যাপারটা বুঝল। তাই সেও আর অনিশ্চিত, তার ভাগ্যে কি ঘটবে, কিন্তু সে আশা ছাড়ল না, সে পরীক্ষার জন্য পড়তে লাগল আর ভাবতে থাকল,তার মত গরীবদের নিশ্চয়ই একটা গতি হবে। মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে।
একদিন সে দৌড়াতে দৌড়াতে বাসায় আসল, সে পত্রিকায় দেখে এসেছে সব ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে, তার মানে তার আর কষ্ট করে ঢাকা খুলনা চট্টগ্রাম রাজশাহী সব জায়গায় গিয়ে থাকা লাগবে না,শুধু একটা ভার্সিটির ফর্ম কিনতে হবে, শুধু একটা জায়গায় থাকতে হবে, এই টাকা নিশ্চয়ি তার বাবা দিতে পারবেন।
কিন্তু না
কয়েকদিন পরে সে জানতে পারল বুয়েট এই প্রক্রিয়াতে ভর্তি পরীক্ষা নিবে না, তার মানে আব্বাসের অতিরিক্ত কিছু টাকা খরচ হব
এই টাকা কে দেবে, কিন্তু সে জানে দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররা পড়ে বুয়েটে, তারা নিশ্চয়ি বুয়েট কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না, তারা নিশ্চয়ি আব্বাসের মতো গরীব ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়াবে।
কিন্তু অনেকদিন হয়ে গেল, বুয়েটের ছাত্ররা আব্বাসদের পাশে এসে দাঁড়াল না। বুয়েট রাজি না হওয়ায় কুয়েট,চুয়েট,রুয়েটের ছাত্ররাও ক্ষিপ্ত। এখন না জানি এই প্রক্রিয়াটাই বন্ধ হয়ে যায়, তখন তো আব্বাসের আর পরীক্ষাই দেয়া হবে না।
আব্বাসরা তাই ঘৃণার চোখে তাকিয়ে আছে বুয়েট কতৃপক্ষের দিকে আর আশার চোখে তাকিয়ে আছে বুয়েটের ছাত্রদের দিকে।
বুয়েটের ছাত্ররা কি এগিয়ে আসবে নাকি তারা প্রমাণ করবে, দেশ নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই, তারা ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য আন্দোলন করতে পারে, কিন্তু দেশের গরীব মানুষদের জন্য তাদের কোন ভাবনা নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।