আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিস্তার পথে নতুন ‘কাঁটা’

পত্রিকাটি লিখেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার কেবল তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতাই করেনি, দুই দেশের অভিন্ন এই নদী থেকে আরো বেশি পানি টেনে নেয়ার পরিকল্পনা করছে।

এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের কৃষকদের কাছে সেচের পানি পৌঁছে দিতে তারা তিস্তার পানি ব্যবহার করবে। আর এমনটি হলে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ ক্ষীণ হয়ে আসবে, কমবে ১০ শতাংশ।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টন ছাড়াও তিস্তা চুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে।


ঢাকার পক্ষে প্রতিনিধি দলের প্রধান সাজ্জাদ হোসেন ইন্ডিয়া টাইমসকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পশ্চিম বঙ্গের কারণে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কৃষকরা সেচের পানি সংকটে ভুগছেন। কৃষকদের ক্ষোভের মুখে প্রশাসনিক কাজকর্মও স্থবির হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, “রংপুরে তিস্তার পানি প্রবাহের স্বাভাবিক হার ছিল পাঁচ হাজার কিউসেক। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশের রংপুর অংশে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫০০ কিউসেক। ”

যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এ বিষয়টিও উঠে আসে।

অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনড় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

সেচ প্রতিমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের নিজেদের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “তিস্তা দিয়ে যে পানি প্রবাহিত হয়, তাতে আমাদের সেচের চাহিদাই পূরণ করতে পারি না। আবাদ বাড়াতে হলে আমাদের জমিতে সেচ আরো বাড়াতে হবে। ”

পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “দেড় লাখ একর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা আমাদের রয়েছে। আগামী বছর এই লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়ানো হবে।

সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সেচের চাহিদা মেটাতে আমাদের আরো পানি প্রয়োজন, যা আসবে তিস্তা থেকে। নিজেদের চাহিদা না মিটিয়ে আমরা কীভাবে বাংলাদেশকে পানি দিই? সেজন্যই আমরা তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করে আসছি। আমরা নিশ্চয় আমাদের কৃষকদের ভোগান্তিতে রাখতে পারি না। ”

অন্যদিকে সাজ্জাদ হোসেন বলছেন, পানি বণ্টন চুক্তি ছাড়া কোনোভাবেই তিস্তা থেকে সম পরিমাণ পানি পাবে না বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক আইন ও সনদ অনুযায়ীও ভাটির দেশেরও সম পরিমাণ পানি পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে মনে করিয়ে দেন বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি।


ভারতের প্রতিনিধিদলে থাকা একজন কর্মকর্তার নজরে বিষয়টি আনলে তিনিও একই কথা বলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “তিস্তা, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রসহ যেসব নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত, আন্তর্জাতিক আইন আইন অনুযায়ী সেসব নদীর সম পরিমাণ পানির অধিকার রয়েছে দেশটির। ”

মঙ্গলবারের বৈঠকে ফারাক্কা ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজে গঙ্গার পানি প্রবাহ পর্যালোচনা করা হয়।

ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক সৌমিত্র কুমার হালদার জানান, গঙ্গার পানি প্রবাহ নিয়ে এবার তেমন কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ সঠিক পরিমাণে পানি পাচ্ছে।

অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে খরা মৌসুমে, বিশেষ করে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার পক্ষে জোর দেয়া হয়।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.