সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............ উল্লুক বনাম সৃস্টির শ্রেষ্ঠ জীব আশরাফুল মকলুকাত!
গত ২৩/৮/২০১১ ইং মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী হাসান মাহমুদের পক্ষে ভূমি প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান "বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ) বিল-২০১১" সংসদে ২য় বার উত্থাপন করেন। ইতিপূর্বে উত্থাপিত বিলটি সম্পর্কে প্রতিবেদন চেয়ে তা বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। সংসদীয় কমিটি এই বিল পর্যালোচনা করে ইতিবাচক সম্মতি প্রদান করে। ফলে এখন বিলটি আইনী মর্যাদা পেতে আর কোনো অসুবিধা নেই।
এই বিলের উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে-বাঘ বা হাতি মারলে ১২ বছর কারাদণ্ড এবং এই শাস্তির সঙ্গে ১৫ লাখ টাকা অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে চিতা বাঘ, লাম চিতা, উল্লুক, সাম্বার হরিণ, কুমির, ঘড়িয়াল বা ডলফিন মারলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং তিন লাখ টাকা জরিমানা অর্থাৎ উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। পাখি বা পরিযায়ী পাখি মারলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেওয়া হবে।
সংসদে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে দেশ থেকে গন্ডার, বুনো মহিষ, বারসিঙ্গা, নীলগাই, বন ছাগলসহ অনেক প্রজাতি হারিয়ে গেছে। এইউসিএনের রেড ডেটা বুক (২০০০) অনুসারেও আট প্রজাতির উভচর, ৫৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪১ প্রজাতির পাখি ও ৪০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী বিপদাপন্ন ও বিলুপ্ত প্রায়।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যেকোনো সরকারি বনভূমিকে ইকোপার্ক, সাফারি পার্ক ও উদ্ভিদ উদ্যান বা ক্ষেত্র, বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনা করা যাবে।
এ ছাড়া সরকারি বন, সরকারি ভূমি, জলাভূমি বা যে কোনো নির্দিষ্ট এলাকাকে গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। অভয়ারণ্যে কেউ চাষাবাদ, শিল্প কারখানা স্থাপন, উদ্ভিদ আহরণ ও ধবংস করতে পারবে না। করলে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হবে।
লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি কারও কাছ থেকে বন্য প্রাণী, বন্য প্রাণীর কোন অংশ, মাংস, ট্রফি বা কোনো দ্রব্য কিনলে সর্বোচ্চ এক বছর রাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।
এবার দেখাযাক গাড়ি চাপাদিয়ে মানুষ মারলে কি শাস্তি হয়ঃ বাংলাদেশ পেনাল কোড ৩০৪, সেকশন-১(সংশোধিত), ১৯৮৮ অনুযায়ী গাড়ি চাপায় মানুষ মারাহলে গাড়ির চালকের সর্বচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড! উল্লেখ্য যে, ১৯৮৮ সনের পূর্বে বাংলাদেশ পেনাল কোড ৩০৪,মূল অনুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী গাড়ি চাপা/দূর্ঘটনায় সর্বচ্চ শাস্তি মৃত্যু দন্ড/যাবতজীবন এবং ১৪ ও ৭ বছরের শাস্তির বিধান ছিল।
কিন্তু তখন বর্তমান নৌ পরিবহন মন্ত্রী ঘাতক ড্রাইভার্স সমিতির নেতা হিসেবে সর্বচ্চ শাস্তি তিন বছরের জেল দাবীকরে অনির্দিস্টকাল পরিবহন ধর্মঘট(হরতাল) করে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যাবস্থা বন্ধ করেছিলেন। তখন এরশাদ সরকার বাধ্য হয়েছিলেন বিদ্যমান আইনটি পাশ করতে!
সার সংক্ষেপঃ একটি উল্লুক মারলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং তিন লাখ টাকা জরিমানার দণ্ড দেওয়া হবে। একটি উল্লুকের জীবনের চাইতেও মানুষের জীবনের মূল্য কম! মানুষ মারলে ৩ বছরের জেল! অর্থাৎ টাকার মানে একটি উল্লুক থেকেও মানুষের জীবনের মূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা কম!
হায় সেলুকাস! সত্যজিত রায়ের বিখ্যাত চলচিত্র হীরক রাজার দেশেও কি এমন কোনো কুআইন ছিল?
জয় বাবা ফেলুনাথ!!!
(সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১১) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।