বায়তুল্লাহ বা আল্লাহ্র ঘর কাবা জাহেলি যুগেও আরব ও অন্যদের কাছে আধ্যাত্মিক স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। ইসলামের অভ্যুদয়ের পর কাবা পরিণত হয় শুধু মুসলমানদের পবিত্র স্থানে। আগে কাবা সন্দর্শনে অমুসলমানরা যেতে পারলেও ৯ম হিজরীতে হযরত আলীকে (রা) রসুল (স) তাঁর প্রতিনিধি করে হজে পাঠান। হযরত আলী তখন ঘোষণা করেন কাবায় তখন থেকে শুধু মুসলমানরাই যেতে পারবেন।
বায়তুল হারাম, ‘বাক্কা’, ‘বায়তুল আতিক’- এসবই আমাদের প্রিয় কাবার নাম।
কাবা বিদ্রোহীদের চূর্ণ করে তাই বাক্কা। বাক্কা অর্থ ছিঁড়ে ফেলা। এটি সম্মানিত তাই বায়তুল হারাম। এটি পৃথিবীর প্রথম মসজিদ, মর্যাদাপূর্ণ, তাই বায়তুল আতিক।
বলা হয়ে থাকে ফেরেশতারা কাবা নির্মাণ করেন।
তারপর আবার তা নির্মাণ করেন হযরত আদম (আ) ও বিবি হাওয়া। হযরত নূহ (আ) এখানে হজ পালন করেন। কাবা অনেক বার বিনষ্ট হয়েছে। পুনর্নির্মিত হয়েছে।
আগে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে হতো।
পরে কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ হয়। রসুল (স) সব সময় মনে পোষণ করতেন কাবার দিকে তাকানোর। নবুয়ত পাওয়ার ১২ বছর পর আল্লাহ জানালেন- “আকাশের দিকে তোমার বার বার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করি। সুতরাং তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাইয়া দিতেছি যাহা তুমি পছন্দ কর। অতএব তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও।
তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাও এবং যাহাদিগকে কিতাব দেওয়া হইয়াছে তাহারা নিশ্চতভাবে জানে যে, উহা তাহাদের প্রতিপালনের প্রেরিত সত্য। ”
প্রাচীনকাল থেকেই কাপড় দিয়ে কাবাকে আস্থাদিত করা হয়। সব সময় মহার্ঘ্য কাপড় দিয়েই কাবাকে আস্থাদিত করা হয়েছে। একে বলা হয় গিলাফ। এই গিলাফও মুসলমানদের কাছে পবিত্র।
এখন সৌদি আরবের বিশেষ কারখানায় শুধু এ গিলাফ তৈরি করা হয় ও বছরে একবার বাদশাহ এসে তা বদলান।
অতিসংক্ষেপে কাবার ও গিলাফের ইতিহাস বর্ণনা করলাম শুধু এ কথা বোঝাতে যে, একজন মুসলমানের কাছে কাবা বা গিলাফ কত পবিত্র।
আমরা বেশ কিছু দিন ধরে শুনছিলাম বাংলাদেশের বৃহত্তম আইনী সন্ত্রাসী গ্রুপ জামায়াতে ইসলামী ইবনে সিনা, ফোকাস, রেটিনা, ইসলামী ব্যাংক থেকে যে টাকা উপার্জন করে তা দু’হাতে বিলাচ্ছে। সরকারবিরোধী, ইসলাম, নাস্তিক- কোন তফাত নেই। শুধু তাই নয়, ইন্টারনেটেও জালিয়াতি করছে এবং এ জন্য অর্থ দিয়েও মানুষজন নিয়োগ দিয়েছে।
এ বিষয়ে কয়েকটি প্রমাণ দিয়ে আবার কাবার প্রসঙ্গে আসব।
ব্লগার তাহমিদ যে ছিল জামায়াতী-বিএনপির ভাষায় নাস্তিক, হঠাৎ কয়েক দিন পর দেখা গেল শিবিরের নেতৃত্বে মিছিল করতে গিয়ে গুলি খেল। যে লেখিকা গরম গরম লেখা লিখে, বিজ্ঞাপন দিয়ে লেখিকা হিসেবে নাজেল হলেন বিদেশ থেকে, হঠাৎ দেখি তিনি ঘোষণা করলেন, যুদ্ধাপরাধীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শোনা গেছে, হঠাৎ তিনি প্রভূত সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বিদেশে। হেফাজতে ইসলাম নামে যে গ্রুপ জামায়াতবিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিল এখন দেখা যাচ্ছে তারা জামায়াতের রক্ষক।
তাদের নেতাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নাকি হঠাৎ স্ফীত হয়ে গেছে। আগে গ্রুপটি ছিল হাটহাজারীতে, এখন ঢাকায়ও তার শাখা তৈরি হয়েছে। ইনকাম ট্যাক্সের বিশাল বিশাল অফিসার আমাদের নাস্তানাবুদ করেন। দুদক সবার ওপর ছড়ি ঘোরায় কিন্তু তাদের এ্যাকাউন্টে যে বিস্তর টাকা এবং তারা যে ট্যাক্স দেয় না, সে ব্যাপারে নিশ্চুপ। হঠাৎ দেখা গেল, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা মোলায়েম সুরে বিএনপির সমালোচনা করছেন।
ভাবটা এমন যে, না করতে পারলেই ভাল হতো। হঠাৎ দেখা গেল, আওয়ামী এমপিরা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে নিশ্চুপ। নিজ এলাকায় তারা যাননি। কেউ কেউ আবার হেফাজতের খুব ভক্ত হয়ে গেছেন। সাংবাদিক নেতাদের মধ্যেও গোলাম আযমের প্রতি এত ভক্তি আগে কেউ দেখেনি।
তাদের দেখা গেল, যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাস্তায় নামতে। পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদে নেতৃত্ব দিতে, চাকরিবাকরি না থাকলেও চকচকে গাড়িতে ঘুরতে। অধিকাংশ মিডিয়া এমনকি কবি-সাহিত্যিক পরিচালিত সংবাদপত্রও দেখা যাচ্ছে। বেশ মোলায়েম সন্ত্রাসীদের প্রতি। তারা ক্রুদ্ধ শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি, যারা প্রতি মুহূর্তে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করছেন।
সংবাদপত্রের ভারসাম্য রক্ষার ট্রপিজ খেলা থেকে বেরিয়ে এসেছে সম্প্রতি ‘দি ডেইলি স্টার। ’ বাংলাদেশের প্রগতিমনাদের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছে পত্রিকাটি। তাদের ‘ব্যালেন্স’ খেলায় মানুষ যতটা না প্রশংসা করেছে পক্ষ নেয়ায় তারা তারচেয়ে বেশি প্রশংসিত হচ্ছে। একইভাবে এটিএন নিউজ ও সময় টিভি ব্যালান্স না করায় [অর্থাৎ সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধীও ভাল, আওয়ামী লীগও খানিকটা ভাল] বেশি দর্শক টানছে। ডেইলি স্টার সম্প্রতি ধর্ম অবমাননাকারীদের নিয়ে জুলফিকার আলী মানিকের একটি চমৎকার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা প্রমাণ করেছে এ দেশে এখন অপসাংবাদিকতা ও অপরাজনীতি হাত ধরাধরি করে চলছে।
এ প্রতিবেদন আরও তুলে ধরেছে জামায়াত-বিএনপি আসলে ধর্মের নামে কেমন অধর্ম করছে।
গত দু’মাস জামায়াত-বিএনপির ব্লগাররা ব্লগ ও ফেসবুকে নানা জালিয়াতি করেছিল। তথ্য মন্ত্রণালয় অবশ্য এগুলো জানে না। তারা আরও জানে না, আমার দেশ, নয়া দিগন্ত ও সংগ্রামের সম্পাদকরা দাঙ্গা ছড়িয়েছে, প্রায় ১০০ মানুষ হত্যায় তাদের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি আছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সুদর্শন মন্ত্রী ও সচিব জানেন না, দেশে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন আছে।
জানলে নিশ্চয় তারা ব্যবস্থা নিতেন। আমাদের প্রিয় মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এসব বিষয়ে আগে সংসদে, সেমিনারে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যত না বক্তব্য রেখেছেন, এখন এসব বিষয়ে কেমন যেন উদাস হয়ে গেছেন। মন্ত্রী হওয়ার জ্বালা অনেক! যারা দাঙ্গা ছড়ায় তারা দোষী না, যারা বাস পোড়ায় তারা দোষী- এ রকম একটি দৃষ্টিভঙ্গি এ সরকারেরই আছে। যা হোক, এই ফেসবুকের কিছু তথ্য, উল্লিখিত তিনটি পত্রিকা আবার সংবাদ আকারে ছাপিয়েছে। আমাদের সংবাদপত্র মালিক ও সম্পাদকদের আলাদা সমিতি আছে।
তারা এই অনাচারকে প্রশ্রয় দিয়েছে। সমিতি সমষ্টিগতভাবে বা সমিতির কেউ ব্যক্তিগতভাবেও দাঙ্গা সৃষ্টিকারী, ধর্মবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, সুস্থ সংবাদপত্রবিরোধী এসব পত্রিকার সম্পাদক/মালিকদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা চায়নি, নিন্দা করেনি। বাংলাদেশে একমাত্র নিরপেক্ষ টাকা। জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি সেটা বুঝেছে।
ফেসবুকে কয়েক দিন ধরে বেশ কিছু ছবি চালাচালি হচ্ছে।
তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি ছবিতে কাবা শরীফের গিলাফ হাতে কয়েকজন সম্মানিত সৌদি নাগরিক দাঁড়িয়ে আছেন। ওপরে শিরোনাম- ‘বাংলাদেশের আওয়ামী কুকুরগুলো [ভাষা লক্ষ্য করুন] যেখানে মাওলানা সাঈদীর চরিত্রে কালিমা দেয়ার জন্য মরিয়া! সেখানে মাওলানা সাঈদীর সৎ চরিত্রের সাক্ষ্য দিচ্ছে পবিত্র কাবার ইমাম। ’ এ ছবি দেখলে স্বাভাবিকভাবে অনেকের মনে হবে, সাঈদী তো ধর্ষক, লুটেরা, তাবিজ বিক্রেতা নয়। সে তো মহান চরিত্রের নয়ত কাবা শরীফের ইমামরা তার পক্ষে এসে ব্যানার নিয়ে দাঁড়ায়! কারণ কাবা ও কাবার ইমাম ধর্মপ্রাণদের কাছে আল্লাহ-রসুলের (দ) পর মর্র্যাদা জ্ঞাপক।
এই একই ছবি ব্যবহার করে ৬ ডিসেম্বর আমার দেশ যে সংবাদটি করে তাহলো-
“আলেমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবার ইমামদের মানববন্ধন
আবুল কালাম আজাদ, সৌদি আরব
বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালের নামে বাংলাদেশের আলেমদের ওপর যে নির্যাতন চলছে তার প্রতিবাদে গতকাল বাদ জুমা কাবার খতিব বিখ্যাত ক্বারী শাইখ আবদুর রহমান আল সুদাইসির নেতৃত্বে মানববন্ধন করেছে ইমাম পরিষদ।
মানববন্ধনে শাইখ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে পরিচিত। সারা দুনিয়ার যত সম্মানিত মানুষ কাবা শরীফের ভেতরে প্রবেশের সৌভাগ্য লাভ করেছেন তিনি তার মধ্যে অন্যতম। তাছাড়া মাওলানা নিজামীসহ যেসব আলেমকে কারাগারে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত নির্যাতন করা হচ্ছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের মানুষ জানে, এই আলেমদের দোষ একটাই, তাহলো কোরানের খেদমত করা। আর যারা ইসলাম ও কোরানের খেদমত করে তাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন নতুন কিছু নয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের ধুয়া তুলে আলেমদের প্রতিহত করা কোন সচেতন মানুষ মেনে নেবে না। যে আদালতে স্বচ্ছতা নেই সেখানে কোন আলেম তো দূরে থাক সাধারণ মানুষেরও বিচার হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আল্লামা সাঈদী শুধু বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় ব্যক্তিত্ব নন, তিনি সারা দুনিয়ার মানুষের প্রিয় মানুষ। যার নমুনা আমি লন্ডনের জাতীয় মসজিদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেখেছি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কুবা মসজিদের খতিব শাইখ আহমদ ইবনে আলী আল হুজায়ফিসহ বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও সাধারণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা বাংলাদেশের আলেমদের ওপর সরকারের নির্যাতনে ক্ষুব্ধ হয়ে নানা ধরনের বাণী নিয়ে প্রতিবাদ করেন। ”
আসলে ছবিটি কার? আগেই উল্লেখ করেছি কাবার গিলাফও পবিত্র। নতুন বছরে কাবার গিলাফ বদলানো হবে। বাদশাহর বিশেষ কারখানায় এই গিলাফ তৈরি হয়। যে গিলাফটি কাবাকে আচ্ছাদিত করবে ছবিটি ছিল সে ঘটনার।
সেটি হয়ে গেল কাবার ইমামদের প্রতিবাদ! জামায়াত-বিএনপি ইন্টারনেটে এ জালিয়াতি করেছে দাঙ্গা বাধাবার জন্য, রাজনীতির জন্য। মাহমুদুর রহমান পত্রিকায় ছবিটি ছেপেছেন প্রতারণা করে। নিজেকে একজন প্রতারক হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেছেন। প্রতারক মাহমুদুর ব্লগারদের নাস্তিক বলে প্রচার চালিয়েছেন, দাঙ্গা বাধিয়েছেন। তিনি এখন কাবা নিয়ে মশকরা করছেন।
রসুলের (দ) কার্টুন ছাপলে জামায়াত ও ধর্ম ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামে। ডেনমার্ক বাংলাদেশ থেকে অনেক দূর। সেখানে কী ছাপা হয়েছে তা নিয়ে ধর্মভিত্তিক দলগুলো কত না ব্যাকুল! আমেরিকার কোন খ্রীস্টান কোরান পোড়ানোর হুমকি দিলে জামায়াত ও ধর্মব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে ভাংচুর করে। এই দেশে, যেখানে এখন কে বেশি মুসলমান তা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে, সেখানে পবিত্র কাবা, গিলাফ ও ইমামদের নিয়ে প্রতারণা, ফেরেববাজি, মশকরা করা হয়েছে। এরা ধর্মদ্রোহী হিসেবে কেন চিহ্নিত হবে না? কেন এদের বিচার হবে না? ধর্মব্যবসায়ীদের অন্যান্য দল এবং জামায়াতবিরোধী ধর্মভিত্তিক দল তারাও কিন্তু কাবার এই অবমাননার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেনি, কোন বক্তব্যও দেয়নি।
তাঁরা বলবেন তাঁরা জানতেন না। কিন্তু এখন তো জানলেন। দেখি এবার তাঁদের মুরোদ! নাকি জামায়াতীদের টাকা সেই মুমোদও খেয়ে ফেলেছে। সৌদি আরবে রাজনীতি নিষিদ্ধ, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ, কাবার অবমাননা নিষিদ্ধ, তারাও কিন্তু জামায়াত-বিএনপির ব্যাপারে কোন বক্তব্য রাখেনি। কী কারণ? ১৯৭১ সালে তারা গণহত্যা সমর্থন করেছে।
জামায়াত-বিএনপিকে নিয়মিত অর্থ যোগানদাতা হিসেবেও তাদের নাম শোনা যায়। ওহাবীবাদ প্রচারের জন্য এই টাকাটা দেয়া হয়। মওদুদীকে যখন জেলে রাখা হয়েছিল তখন সৌদি বাদশাহকে সমর্থন করায় পাকিস্তান তাকে মুক্তি দেয় এবং তখন থেকে জামায়াত সৌদি এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। প্রশ্নটা হচ্ছে কাবার এ রকম অবমাননার পরও কেন জামায়াতবিরোধী হিসেবে পরিচিত ধর্মভিত্তিক দল ও গ্রুপগুলো প্রতিবাদ করল না? এ বিষয়টিও কিন্তু ভেবে দেখা উচিত।
একইভাবে ডিসেম্বর ২০১২ সালের পত্রিকায় ছাপা হয়েছে ‘তুরস্কে লাখো মানুষের সমাবেশ : বাংলাদেশের জামায়াত নেতাদের মুক্তি দাবি।
এ সংবাদটিও আবুল কালাম আজাদ ও এজাজ কাদরী তুরস্ক থেকে পাঠিয়েছেন। আবুল কালাম আজাদ মনে হয় খুব মালদার সাংবাদিক। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে খবরাখবর যোগাড়ে। তাঁরা বলেছেন কাদের মোল্লা ও সাঈদী প্রমুখ জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবিতে তুরস্কের কাদিকার স্কয়ারে শাদাত পার্টি লাখো জনতার সমাবেশ করে। আসলে সমাবেশটি ছিল নবীর (দ) প্রতি শ্রদ্ধা জানাবার জন্য।
খুব সম্ভব ঈদ-ই মিলাদুন্নবীর র্যালি বা সমাবেশ।
ইসলামের নতুন ঠিকাদার হিসেবে খালেদা জিয়া এখন দায়িত্ব নিয়ে তরুণদের নাস্তিক হিসেবে উল্লেখ করছেন। বলেছেন, ভিটামিন-এ খাইয়ে সরকার শিশুদের মারছে। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ছবিও ছাপানো হয়েছে। আসলে সেটি ছিল রোহিঙ্গা এক শিশুর, যার সঙ্গে ভিটামিন-এ’র কোন সম্পর্ক নেই।
ফেরেববাজিতে তিনিও কম যান না!
রাজীব হায়দার নাস্তিক অতএব ব্লগাররা নাস্তিক অতএব শাহবাহের তরুণরা নাস্তিক- এ দাবি প্রথম তোলেন মাহমুদুর রহমান, তারপর নয়া দিগন্ত বা জামায়াত। এতে সুর মেলান খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং সবশেষে হেফাজতে ইসলাম। রাজীবের মৃত্যুর পর এভাবেই জামায়াত ও বিএনপির ব্লগাররা রাজীবের ব্লগে রসুলের (স) নামে কুৎসাপূর্ণ কিছু রচনা অনুপ্রবেশ করায়। দৈনিক আমার দেশ কাল্পনিক সে ব্লগ ছেপে দেশজুড়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে। হেফাজতে ইসলাম এখন বিএনপি-জামায়াতের হয়ে সে আন্দোলন করছে।
নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য জামায়াত-বিএনপি ও তাদের অনুসারী ধর্মভিত্তিক দলগুলো আল্লাহ রসুলকে (স) নিয়ে তামাশা করছে, প্রতারণা করছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে- তারা ধর্মদ্রোহী নয়, ধর্মদ্রোহী হলাম আমরা, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের? আমেরিকার প্রিয় মডারেট রিলিজিয়াস পার্টি জামায়াত যে কী তার প্রমাণ ড্যান মজেনাও যে পেলেন এ জন্য স্টারকে ধন্যবাদ।
কারণ মজেনাও নিজামী ও খালেদার মতো যুদ্ধাপরাধ বিচারের আন্তর্জাতিক মান ও স্বচ্ছতা চান। আপনারা নিশ্চিত থাকুন। সরকার এসব বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেবে না, বিশেষ করে মাহমুদুর রহমান ও নয়া দিগন্তের ব্যাপারে। সেখানেও পয়সা খাওয়া লোকের অভাব নেই।
তাই যাঁরা ধর্মের পক্ষে, এসব প্রতারকের বিপক্ষে, যাঁরা দেশে সুস্থ সংস্কৃতি চান, তাঁদের কাছে আবেদন আমাদের লড়াই আমাদেরই চালাতে হবে। সে জন্য শুধু আধুনিক প্রযুক্তি নয়, বিভিন্ন মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও তাদের নেতাদের ধর্মবিরোধী এবং জালিয়াতির প্রমাণ তুলে ধরুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।