আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌতুকের আরেক বলি আসমা চুল কেটে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মায় নিক্ষেপ

সুখের ঘর বাঁধবে বলেই দরিদ্র ইদ্রিস আলীকে বিয়ে করেছিল আসমা আক্তার (৩০)। কিন্তু যৌতুকলোভী পাষ- স্বামী তার সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দিল না। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে পিটিয়ে, চুল কেটে, নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করার পর পদ্মার জলে ভাসিয়ে লাশ গুম করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে নিহত আসমার স্বামী ইদ্রিস আলীর (৪০) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের চর পুরুলিয়া গ্রামে। পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গনি ব্যাপারীর ছেলে ইদ্রিস আলীর সাথে ১৬ বছর আগে বিয়ে হয় আসমার।

দরিদ্র ইদ্রিস আলীকে কয়েকবার নিজ অর্থ খরচ করে বিদেশে পাঠানো আসমার বাবা শেখ নুর মোহাম্মদ। মেয়ে জামাইকে এ অর্থ নুর মোহাম্মদ এমনিতেই দেননি। নির্যাতনের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে ঋণ করেও লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন তিন ইদ্রিস আলীর হাতে। সন্তান না হওয়ায় শিশু ইসমত আরাকে (৫) দত্তক নেয় আসমা। নিঃসন্তান আসমা সকল নির্যাতন সহ্য করেও চেয়েছিল স্বামীর ঘর করতে।

কিন্তু দুবছর আগে আসমাকে না জানিয়ে কালীগঞ্জের মেয়ে রীতাকে (নাসিমা) বিয়ে করে ইদ্রিস আলী। দ্বিতীয় বিয়ের পর ইদ্রিস আসমার ওপর নির্যাতন আরো বাড়িয়ে দেয়। জানা যায়, ইদ্রিস আলী গাজীপুরের একটি জমি ক্রয়ের উদ্দেশে আসমাকে তার বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। আসমা তার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে এবং দ্বিতীয় বিবাহকে কেন্দ্র করে ২১-০৮-১১ রাত ১২টার পরে বাগ্বিত-ার একপর্যায়ে আসমাকে শ্বাসরোধ করে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে চুল কেটে দেয় ইদ্রিস।

একপর্যায়ে বাথরুমে নিয়ে গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যার পর আসমার মৃত দেহ গুম করার জন্য রাতেই পদ্মা নদীর তীরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সে। ২২-০৮-১১ সকালে নদীর তীরে আসমার লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। দোহার থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ নদীর তীর থেকে আসমার লাশ উদ্ধার করে। হত্যাকা- ব্যবহার করা আলামত হিসেবে কেরোসিনের বোতল, দিয়াশলাই, কাটা চুল ও লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ইদ্রিস আলী, তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও বাড়ির লোকজন সবাই পলাতক।

আসমার বাবা এ প্রতিবেদককে আরো জানান, পর্ব পরিকল্পিতভাবে ইদ্রিস ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মিলে আসমাকে হত্যা করেছে। বর্তমানে মামলা করে নিহতের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে দোহার থানার ওসির সাথে আলাপকালে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি হত্যাকা- বলেই মনে হচ্ছে। নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৪, তারিখ : ২২-০৮-২০১১।

লাশ উদ্ধার হয়েছে, তদন্ত চলছে সকল আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে অতি শীঘ্রই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.