আমিও শিশুর মতো/ তারই মতো মেনে নিতে পারি, যতো ব্যাথা না পাবার,/ ততো কাঁদি, ততো ঠুঁকি মাথা,/ যতো ক্ষতে বয়ে চলে- এ জীবনধারা। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ যে আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ তাহা কমবেশি সকলেই জানেন। যাহারা নিয়মিত রেলে ভ্রমণ করিয়া থাকেন তাহারা আরও ভালো করিয়া জানেন। এখনও অনেক পূরাতন রেল কামরায় বিবর্ণ অক্ষরে একটি লেখা দেখিতে পাওয়া যায়-"গাড়ী থামাইতে শেকল টানুন, অযথা টানিলে ২০০ টাকা দন্ড"। শিশুকালে ভাবিতাম, যখন আমার অনেক টাকা হইবে তখন একবার শেকল টানিয়া দেখিবো,- ট্রেন থামে কিনা! এত বড় একটা গাড়ী, সামান্য শেকলের টানে থামিয়া যাইবে ইহা বিশ্বাস হইতে চাহিতনা।
এখন বড় হইয়াছি। কলকাঠি কি জিনিষ বুঝিতে শিখিয়াছি। দুর থাকিয়া সুইচ চাপ মারিলে রকেট লাফ মারিয়া চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে, তাহা আর আমাদের অগোচর নহে। শ্রদ্ধেয় হ্যাকারগন দূর থাকিয়া কয়েকটি সফ্টওয়ারের সাহায্যে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বারোটা বাজাইয়া দেয়। সুতরাং শেকলের টানে ট্রেন থামাইয়া দেওয়া নিতান্তই ছেলেখেলা।
যাইহোক, মূল কথায় ফিরিয়া আসি। আমার মনে হয় ছাত্রসমাজ শুধুমাত্র বন্ধুদের নিকট ভাব মারার উদ্দ্যেশেই বিনা টিকিটে রেল ভ্রমন করিয়া থাকে, দেশজ সম্পদের অপব্যবহারের উদ্দ্যেশে নয়। আমরাও ইস্কুল-কলেজের ছাত্র থাকা অবস্হায় প্রায়শইঃ টিকিট ছাড়াই ট্রেনে উঠিয়া যাইতাম। একদা আমরা কতিপয় বন্ধু মিলিয়া বিনা টিকিটে ট্রেনে করিয়া পাক্শী সেতু দেখিতে যাইতেছিলাম। এতবড় সেতু দেখিয়া জনৈক বন্ধু জানিতে চাহিলো, "এত বড় সেতু বানাইতে কত কেজি(!) লৌহ লাগিয়াছে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকে একবার বাড়ী যাইবার উদ্দ্যেশে সিলেট হইতে ঢাকার ট্রেনে উঠিলাম।
জনৈক বন্ধু বলিলো, টিকিট করিবার প্রয়োজন নাই। পরবর্তীতে চেকারের হাত থাকিয়া বাঁচিবার জন্য অর্ধেক রাস্তা টয়লেটে কাটাইয়াছিলাম।
শেষ করিবার আগে একটা ঘটনা বলিতে চাহি। গতকাল ট্রেনে করিয়া বাড়ি আসিতেছিলাম। বরাবরের মতোই কতিপয় যাত্রী টিকিট ব্যতীত ট্রেনে উঠিয়াছিলেন।
চেকার উনাদের ধরিয়া জরিমানাসহ টিকিট কাটিতে বাধ্য করাইলেন। একজন নিপীড়িত যাত্রী চেকারকে শুনাইয়া শুনাইয়া কহিলো, "আমার দুইজন আত্নীয় টিকিট চেকার এবং দুই জনেরই মৃত্যু হার্টএ্যটাকে হইয়াছে"। উক্ত মন্তব্য শুনিয়া চেকারের কোন ভাবান্তর হইলো কিনা বুঝিতে পারিলাম না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।