সামশের রাজ কাপূর বিশ্ব দরবারে তিনি জনপ্রিয় শাম্মী কাপুর নামে। তিনি রবিবার ভোর ৫টা বেজে ১৫ মিনিটে চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়লেন মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। রবিবার ভোর ৫টা বেজে ১৫ মিনিটে পৃথ্বিরাজ কাপুরের তৃতীয় সন্তানের মৃত্যুর সাথে সাথে বলিউডে শেষ হল একটি অধ্যায়েরও।
১৯৩১ সালের ২১অক্টোবর একটি পাঞ্জাবি ক্ষত্রিয়বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রুপোলি দুনিয়ার এই কিংবদন্তি অভিনেতা। মুম্বাইতে জন্মালেও তাঁর জীবনের প্রথম কয়েকটি বছর কেটেছিল আমাদের শহর কলকাতাতে।
৬ ফুট লম্বা বলিউডের এই ‘গ্রিন আইড অভিনেতা’ ১৯৪৮ সালে প্রথম রুপোলি দুনিয়া পা রাখেন একজন ‘জুনিয়র আর্টিস্ট’ হিসেবে । তাঁর বাবারই থিয়েটার সংস্থা ‘পৃথ্বিরাজ থিয়েটারে’। আর সেই সময় তাঁর পারশ্রমিক ছিল মাত্র ১৫০ টাকা। এরপর চার বছর তিনি সেখান থেকেই চলচ্চিত্র জগত সম্পর্কে খুটিনাটি শেখেন। ১৯৫২ সালে যখন তিনি এই সংস্থা ছেড়ে পা বাড়ান রুপোলি দুনিয়ায় রাজত্ব করার জন্য তখন তাঁর মাসিক পারিশ্রমিক ছিল মাত্র ৩০০ টাকা।
১৯৫৩ সালে পরিচালক মহেশ কাউলের হাত ধরে চাঁদ উসমানির বিপরীতে প্রথম নায়ক হিসেবে তাঁর আবির্ভাব ঘটে ‘জীবন জ্যোতির’ হাত ধরে। তবে জীবনে ভরা,সেই সময়কার অন্যতম স্টাইলিশ প্লেবয়, ৬ ফুট লম্বা, খেলওয়ারদের মতো চেহারার এই অভিনেতা বক্স অফিসে প্রথম সাফল্য দেখেন নাসির হুসেন-এর ছবি ‘তুম সা নেহি দেখা’র মাধ্যমে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ৬০ দশকের এই হার্টথ্রবকে। এরপর আশা পারেখ, শর্মিলা ঠাকুর, সায়রা বানু, রাজশ্রী, গীতা বালির মতো তখনকার দিনের একের পর এক ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রীর সাথে শুধুই হিট ছবির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন তিনি। ’প্রফেসর’, ‘চার দিল চার রাহে’, ‘রাত কি রাহি’, ‘দিল তেরা দিওয়ানা’, ‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া’,’চায়না টাউন’, ‘কাশ্মীর কি কলি’, ‘ব্লাফ মাস্টার’, ‘জানওয়ার’ শাম্মি কপূরের বক্স অফিসে এক একটি সুপার ডুপার হিট ছবি।
আর এর তালিকা যতই বলা যাবে ততই বেড়ে চলবে।
১৯৫৫ সালে তাঁর জীবনে আসেন গীতা বালি। তবে তাঁদের সুন্দর বিবাহিত জীবনে ইতি পরে ১৯৬৫ সালে গীতা বালির স্মল পক্স হওয়ার সাথে সাথে। দুটি ছোট বাচ্চা ফেলে ৬০-এর দশকের যুব সম্প্রদায়ের হৃদয়ে ঝড় তোলা এই অভিনেতার জীবন থেকে হারিয়ে যায় তাঁর জীবনসঙ্গী। এরপর তাঁর শরীরে ওজন বেড়ে যাওয়া জন্য তিনি নায়কের চরিত্রে আর অভিনয় করতে পারেন না।
কিন্তু ৭০-এর দশকে বিভিন্ন ছবিতে চরিত্রাভিনেতার ভূমিকায় তিনি তাঁর অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতার দাপটও দর্শককে বুঝিয়ে দেন। তারপর শেষবারের মতো তাঁকে ছবিতে দেখা গিয়েছিল ২০০৬ সালের ‘স্যান্ডউইচ’ ছবিটিতে। এই সময় থেকেই না না রকম রোগে আক্রান্ত হতে থাকেন বলিউডের এই গ্রিন আইড নায়ক.তবে তাঁর মতো প্রাণচ্ছল, জীবনে পরিপূর্ণ এক ব্যক্তি যখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে রবিবার সকালে চিরদিনের মতো যখন তিনি নিদ্রায় শায়িত ছিলেন তখন তামাম বলিউড ছেড়ে সারা দেশও যেন বিশ্বাস করতে পাচ্ছিলেন না তিনি আর নেই। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন বলিউডের সমস্ত তারকারা এবং তাঁর সহ শিল্পীরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।