আমি অস্থির, আমি চঞ্চল, আমি নিজেকে করি উশৃঙ্খল, আমি দুর্বার, আমি দুর্জয় আমার নেই যে কোন পরাজয়। ৫: কার্ট কোবেইনঃ কার্ট কোবেইন একজন গিটারিস্ট এবং বিখ্যাত ব্যান্ড নিরভানার ভোকাল ছিলেন। এই বিখ্যাত ব্যান্ড নিরভানা সম্বন্ধে মনে হয় আর কিছু বলতে হবে না।
কার্ট কোবেইন
১৯৯৪ সালের ৪ মার্চ সকালে, কার্ট কোবেইন এর স্ত্রী তাঁকে শ্যাম্পেইন আর রহিপনোলের কম্বিনেশনে ওভারডোজ অবস্থায় পান এবং তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হয় এবং সারাদিন তিনি সংজ্ঞাহীন ছিলেন। ৫দিন পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়।
কোবেইনের স্ত্রীর মতে এটি ছিল তাঁর প্রথম সুইসাইড এটেম্ট।
১৮ মার্চ এ, কোবেইনের স্ত্রী Seatle পুলিশকে ইনফরম করেন যে, কোবেইন একটি রুমে দরজা বন্ধ করে রয়েছেন এবং তাঁর সাথে একটি গানও আছে। পুলিশ বাসায় এসে ঐ রুম থেকে বন্দুক এবং কিছু পিল উদ্ধার করে। কোবেইন পুলিশকে বুঝাতে সক্ষম হন যে, তিনি সুইসাইড করার জন্য না বরং তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে আড়ালে থাকার জন্য রুমের দরজা বন্ধ করে রেখে ছিলেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোবেইনের স্ত্রী বলেন যে, কোবেইন কোন দিনই উল্লেখ করেনি যে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন এমনকি কোবেইনের স্ত্রী কোবেইনকে কোনদিন বন্দুক হাতে দেখেন নি।
২৫ মার্চ এ, কোবেইনকে ডিটক্সিফিকেশন প্রোগ্রামে নেয়ার জন্য কোবেইনের স্ত্রী, তাঁর ব্যান্ডমেট, রেকর্ড কোম্পানি এক্সিকিউটিভ এবং কোবেইনের খুব কাছের একজন বন্ধুসহ ১০ জন তাঁকে কনভিন্স করার চেস্টা করেন। কিন্তু কোবেইন রাগান্বিত হয়ে সবাইকে অপমান করেন এবং বেডরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
এর পরেরদিন কোবেইন ডিটক্সিফিকেশন প্রোগ্রামে যেতে রাজি হন।
৩০ মার্চ এ, তিনি লস এঞ্জেলস এ Exodus Recovery Center এ পৌঁছান। রিকভারি সেন্টারের কর্মীরা তাঁর সুইসাইডাল এটেম্ট সম্পর্কে জানত না।
কোবেইন সেখানে সারাদিন কাটান, তাঁর ড্রাগ অ্যাবইউস আর ব্যক্তিগত অনেক সমস্যাই কাউন্সিলরদের সাথে শেয়ার করেন।
সেদিন রাতেই কোবেইন সেখান থেকে পালিয়ে যান। একটি ট্যাক্সি নিয়ে লস এঞ্জেলস এয়ারপোর্টে যান এবং Seatle এ ফিরে আসেন। কিন্তু আসলে তিনি কোথায় তা কেউই জানত না। ২ এপ্রিলে তাঁকে seatle এর আশেপাশে বেশ কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছিল।
৩ এপ্রিল কোবেইনের স্ত্রী Tom Grant নামে একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভের দ্বারস্থ হন তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য।
৮ এপ্রিলে কোবেইনের মৃতদেহের খোঁজ পাওয়া যায় তাঁর লেক ওয়াশিংটনের বাসায়। তাঁর কানের পাশে রক্ত ছিল।
কার্ট কোবেইনের বাল্য কালের একজন কল্পিত বন্ধুকে (Boddah) উদ্দেশ্য করে লেখা একটি নোট পাওয়া যায়।
এই সেই নোট।
কোবেইনের দেহে মারাত্মক পরিমান হেরইনের অস্তিত্ব মেলে। কার্ট কোবেইনের মৃতদেহ দিন দিন ধরে সেখানে ছিল। করনর রিপোর্ট করেন যে, কার্ট কোবেইনের ৫ এপ্রিল ১৯৯৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর মৃত্যুর কারণ এখনও রহস্যাবৃতই রয়েছে।
ধারনা করা হয় যে, কার্ট কোবেইন হতাশা থেকে সুইসাইড করেছিলেন।
৪: ইন্দিরা গান্ধিঃ ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর কন্যা। ইন্দিরা গান্ধিকে ভারতের লৌহমানবী বলা হয়। তিনি ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি খুব সহজেই মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতেন।
৩১শে অক্টোবর ১৯৮৪ সালে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত দুজন বডিগার্ড ইন্দিরা গান্ধীকে তাঁর বাসার বাগানে গুলি করে হত্যা করে।
বডিগার্ড দুজনই ছিল শিখ। ১৯৮৪ সালের জুন মাসে ইন্দিরা গান্ধী অপারেশন ব্লু স্টার নামে একটি অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন যার ফলে শিখদের গারুদওয়ারা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিলো। এই ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অনেকেই মনে করেন।
ময়না তদন্তে দেখা যায় যে, ৩০টি বুলেট তাঁর শরীরে আঘাত করে এবং ৭টি বুলেট তাঁর শরীরে ছিল। দুজন গার্ডের একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং অপর জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
অনেকই বলেন যে, বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে পরবর্তী নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর জয়লাভ নিশ্চিত ছিল বলেই কিনা তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
৩: Natalie Wood: নাটালি উড একজন আমেরিকান এবং অভিনেত্রী ছিলেন। ২৫ বছর পূর্ণ হবার আগেই তিনি ৩ বার একাডেমী এ্যাওয়ার্ড এর জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। ২৯ নভেম্বর ১৯৮১ সালের তিনি, তার স্বামী আর একজন বন্ধুসহ সান্তা কেটালিনা আইল্যান্ডে নৌকা ভ্রমনে বেড়িয়েছিলেন। দুর্ঘটনাবশত তিনি জাহাজেই মৃত্যুবরণ করেন।
নাটালির রক্তে ০.১৪% অ্যালকোহল পাওয়া যায়। তার উপর তার দেহে অন্যান্য ওষুধের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল।
নাটালি উডসের সর্বশেষ ছবি ব্রেইনস্টোর্ম এ
তদন্তকারীরা কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হতে পেরে কেসটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, কিন্তু ২০১১ সালে আবার ওপেন করা হয় এই ভেবে যে উডকে হয়তোবা খুন করা হয়ে থাকতে পারে। জাহাজের ক্যাপ্টেনের ভাষ্যমতে তারা স্বামী-স্ত্রী ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছিলেন। তদন্ত এখনও চলছে, সাস্পেক্ট উডসের স্বামী।
যদিও নাটালি উডসের মৃত্যু আজ পর্যন্তও রহস্যাবৃত্ই রয়ে গেছে।
২: Marilyn Monroe: মারালিন ৫০-৬০ দশকের দিকে অভিনেত্রী এবং সংগীতশিল্পী ছিলেন। তিনি ফস্টার হোমসে তার বাল্যকাল কাটান এবং ১৯৪৬ সালের দিকে অভিনেত্রী হিসেবে অত্মপ্রকাশ ঘটান। তার ক্যারিয়ারে অনেক সফল চলচিত্র উপহার দেন।
৫ আগস্ট ১৯৬২ সালে নিজ রুমে সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবসস্থায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে তার শরীরে বিষের আলামত পাওয়া যায় এবং তা থেকে ধরে নেয়া হয় যে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু তার রুমে বিষের কৌটা জাতীয় কিছুর আলামত না পাওয়ার কারণে রহস্য আরও ঘনীভূত হতে থাকে। তিনি আত্মহত্যা করার আগের দিন শপিং এ গিয়েছিলেন যা একজন আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়া মহিলার পক্ষে খুব অস্বাভাবিক ছিল। তার মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে দায়ী করা হয়। আবার অনেকেই মনে করেন কেনেডিকে ফাঁসানোর জন্য মাফিয়া গ্যাং দ্বারা মেরিল্যনের মৃত্যু ঘটনা ঘটানো হয়েছিল।
যদিও মেরিল্যনের মৃত্যু আজ পর্যন্তও রহস্যাবৃত্ই রয়ে গেছে।
১: প্রিন্সেস ডায়ানাঃ প্রিন্সেস ডায়ানাকে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। রুপের মাধুর্যের কারণে খুব সহজেই তিনি মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারতেন। সে সময় ডায়ানার সাথে পাল্লা দেয়ার মত মহিলা খুঁজে পাওয়া দুস্কর ছিল।
প্রিন্সেস ডায়ানা
৩১ শে আগস্ট ১৯৯৭ সালে অনিন্দ্য সুন্দরী এই মহিলা পেরিসে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
প্রিন্স চার্লসকে ডিভোর্স দেয়ার কারণে মানুষ চার্লসকেই ডায়ানার মৃত্যুর জন্য দোষী বলে মনে করে। ডায়ানার মৃত্যুর ঠিক কয়েকদিন আগে ডায়ানা ব্রিটিশ সরকারের কাছে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন যে তিনি বিপদে আছেন। তিনি কখনই পুলিশ প্রোটোকল নিতেন না কারন তিনি জানতেন যে পুলিশ সহজেই রাজকীয় মানুষদের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারতো।
প্রিন্স চার্লস এর সাথে ডায়ানা
যেদিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন সেদিন হোটেল থেকে বের হওয়ার পরপরই পাপারাজ্জির দল তার পিছু নেয়। ডায়ানা দৌড়ে গাড়িতে গিয়ে উঠেন।
তার সাথে সাথে নিরাপত্তাকর্মীও গিয়ে গাড়িতে উঠে। ড্রাইভার পাপারাজ্জিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য গাড়ি খুবই দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিলেন। ডায়ানার লাকও ছিল খারাপ, কারণ ড্রাইভার মাতাল ছিল। যার ফলাফল ছিল খুবই ভয়াবহ। সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা প্রিন্সেস ডায়ানাসহ ৪ জনের সকলই নিহত হয়েছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।