আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময়

প্রাইম ব্যাংকের ধানমন্ডি ব্রাঞ্চে জিবি (জেনারেল ব্যাংকিং) ইনচার্জ হিসেবে জয়েন করার প্রথম দিনই ক্যাশ অফিসার ফারুক আমার দৃষ্টি কাড়ল। তার মধ্যে কিছু একটা ছিল যা আমার নজরে পড়েছিল। সহকারী ম্যানেজার তার সাথে যখন আমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন, এই হচ্ছে মি. ফারুক যখন আমি হাত বাড়ালাম, বুঝতে পরলাম আর সবার মতো সে হাত বাড়াবার জন্য তৈরী ছিলনা। হাত বাড়াতে তার দেরী হল কয়েক স্যাকন্ড। তার এই হাত বাড়াতে দেরী, তার চেহারা- সবকিছু মিলিয়েই বোধ করি মনের মধ্যে খুঁতখুঁতি শুরু হল প্রথম থেকেই।

সবার সাথে পরিচয় পর্ব শেষে আমি জিবি ইনচার্জের জন্য নির্ধারিত চেম্বারে গিয়ে বসলাম। ফারুকের জন্য আমার পুরো দিনটাই মাটি হবে বুঝতে পারছিলাম। মনের মধ্যে একবার একটা কিছু ঢুকে গেলে সেটা গুতোতে থাকে, গুতোতেই থাকে। এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি আসে না। যাই হোক, অযথা চিন্তা করে সময় ক্ষেপনের কোন সুযোগ ব্যাংকে থাকে না।

এখনও দশটা বাজতে বিশ মিনিটের মতো বাকি। পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক আমি চাইলাম জিবি টিমের সবার সাথে একবার বসতে । ডিপার্টম্যান্টের সবাইকে চেম্বারে ডাকলাম। দশ মিনিটের মধ্যে বৈঠক শেষ করে সবাইকে কাজের প্রতি মনোযোগী হতে বললাম। আমার ডিপার্টম্যান্টে আমি যাদের যাদের পেলাম তারা হল রাজীব।

এসিস্ট্যান্ট অফিসার । বাড়ী হবিগঞ্জ, বয়েস ২২ কি ২৩ হবে। চমৎকার স্মার্ট ছেলে। আজিজ। বাড়ি লালমনিরহাট।

বয়েস ২৫এর বেশী হবে। আমার ডেজিগনেশনের প্রায় কাছাকাছি। সিনিয়র অফিসার। সুমিত। খুব বেশীদিন হয় নাই জয়েন করেছে।

একেবারে ফ্রেস ছেলে। কাজ শেখালে শিখে নিতে পারবে। রেজওয়ান। গাট্টাগোট্টা। ব্রাম্মনবাড়িয়ার ছেলে।

দেখেই বুঝা যায় খুব সাদাসিধা হবে ছেলেটা। নিলুফা। বয়েস পঁচিশ ছাড়িয়ে গেছে নিশ্চিত। লম্বা চুলে বেশ লাগে দেখতে। ইয়াসমিন।

কিছুটা ইনট্রোভার্ট বলে মনে হল তাকে। এই ছয়জন নিয়ে আমার জেনারেল ব্যাংকিং ডিপার্টম্যান্ট। আমি আর আজিজ ছাড়া বাকিরা এখনও অবিবাহিত। সবাইকে বিদায় দিয়ে আমি আমার চেয়ারে আরাম করে বসলাম। জানি না নতুন এ প্রতিষ্ঠানে আমি কতদূর যেতে পারব।

তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমার সবটুকু দিয়ে এই কোম্পানীকে সারভিস দিতে। কারন এরা আমাকে যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা দিয়ে এখানে নিয়ে এসেছে্। চা এর জন্য পিয়নকে ডাকব, এমন সময় ইন্টারকমে কল। হ্যালো, ম্যানেজার বলছি। তুমি সবকিছু বুঝে নিয়েছোতো? জ্বি স্যার।

কোন কিছু লাগলে আমাকে জানিয়ো। ওকে স্যার। থ্যাংকস অ্যা লট। ফোন রাখতেই আজিজ সাহেব আমাকে ডাকলেন। স্যার, চা খাবেন? ক্যান্টিনে আসবেন? ঈদের পরে অফিস খুলেছে মাত্র।

এখন কাস্টমারের ভিড় খানিকটা কম। আমি রাজী হলাম। ক্যান্টিনে যাবার পথে ফারুক আবার নজর কাড়ল। ক্যাশ সেকশন ক্যান্টিনের পাশেই। চিন্তাটা আবার আমার মাথায় ঢুকল।

এবার বুঝতে পারলাম, খটকাটা কোথায়। কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে তাকে। কোথায় জানি দেখেছি। আজিজের সাথে আড্ডা দিতে দিতে তাকে জিজ্ঞেস করে ফেললাম, ফারুকের সাথে তার পরিচয় আছে কি না। আজিজ জানালো, এই অফিস যোগোযোগের বাইরে তার সাথে আর কোন পরিচয় নাই।

একটু রূঢ় টাইপের। কেউ তার সাথে তেমন একটা মিশে না। মনের খটকা মনেই থেকে গেল। আমার নতুন কলিগদের নিয়ে ভাবছিলাম। রাজীব, সুমিত, আজিজ.. এবং অবশ্যই ফারুক।

ফারুককে আগে কোথায় দেখেছি? এমন সময় নিলুফা একটা ফাইল দিয়ে বলল, স্যার এটা আপনাকে দিল। এ ব্যাংকের জিবি ম্যানুয়েল। স্যার বলেছে মনোযোগ দিয়ে পড়তে। নিলুফা। সবুজ সতেজ একটি মেয়ে।

এ কয়দিনে আমি ঠিকই বুঝে গেছি স্যারের পছন্দের অফিসার নিলুফা। তারপর আজিজ, সুমিত, ইয়াসমিন। আর রাজীবকে স্যার বুঝি একদম পছমদ করেন না। অথচ কাজের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ভাল আমার কাছে রাজীবকেই মনে হল। রাজীবের যেটা খারাপ সেটা হল সে বসদের সাথে মিশতে পারে না।

সে জানে না কি করে মোসাহেবী করতে হয়। নিলুফা এই কাজটা ভাল পারে, বলা বাহুল্য। করপোরেট জগতের একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে যে, যে যত বেশী মোসাহেবী করতে পারবে সে ততো তাড়াতাড়ি উপরে উঠতে পারবে। তাই আমরা প্রায়শই আনস্কিলড লোকদের উচ্চপদস্থ হিসেবে দেখতে পাই। আমি জানি আমি কখনো অতো উপরে উঠতে পারব না।

কারণ আমি যেটা বুঝি সেটাই করি, যেটা মুখে আসে সেটাই বলি, মাঝে মাঝে যা আমার শীর্ষস্থানীয়রা পছন্দ করে না। সুমিত চেম্বারে আসল। স্যার ডাকছেন। ফেরার পথে নিলুফা আর আজিজকে দেখতে পেলাম গল্প করতে। ব্যাংকিং এখনও তেমন জমে উঠেনি।

যাই হোক, আমি দূর থেকে খেয়াল করলাম ফারুক ক্যান্টিনে ঢুকছে। লাঞ্চ করবে। আমিও আমার লাঞ্চ বক্সটি হাতে নিলাম। টেবিলে দুজন মুখোমুখি। খেতে খেতে বলে উঠলাম, কি খবর ফারুক সাহেব, আজ পেমেন্ট কত করলেন? উত্তর পেলাম মিনিট খানেক পর।

না স্যার, এখনও ত্রিশ টাচ করতে পারিনি। কোরবানী ঈদ পরে কাস্টমাররা একটু দেরীতে ব্যাংকিং শুরু করে। আমি ভিন্ন প্রসঙ্গে গেলাম। আচ্ছা ফারুক সাহেব আমি কি আপনাকে আগে কোথাও দেখেছি? প্রশ্নটি শুনে ফারুক ভিমড়ি খেল কিনা ঠিক বুঝলাম না। তবে এবার উত্তর খুব তাড়াতাড়ি।

না তো স্যার। আপনার সাথে তো আগে কখনো দেখা হয়নি। অবাক কান্ড! এতো তাড়াতাড়ি ফারুকের খাওয়া শেষ হয়ে গেল! ফারুক উঠে হাত ধুতে ওয়াশ রুমের দিকে চলে গেল। তবে কি ফারুক আমাকে চিনে ফেলেছে? সে কি ধরা পড়ার ভয়ে উঠে চলে গেল? প্রশ্নটি করে আমি কি ভুল করে ফেললাম? পরদিন দেখলাম, ফারুকের চেয়ার খালি। খোঁজ নিয়ে জানলাম, সে ছুটিতে চলে গেছে।

ফিরতে আরো দুইদিন লেগে যাবে। আরো জানা গেল এমন নাকি প্রায়ই সে ছুটি নেয়। একটা ব্যাংকে ছুটি পাওয়া যে কত ঝামেলার ব্যাপার সেটা আমরা যারা ব্যাংকে আছি তাদের কাছে অজানা নয়। নিজের বিয়ে করার দিনও এক দিন ছুটি পাবে কিনা সন্দেহ। সেখানে কিছুদিন পরপর ছুটি- কেমন জানি আমার সন্দেহটা বাড়িয়ে দিল আরো।

দুদিন পর। অফিস শুরু হতেই ঘটল ঘটনাটা। ক্যাশ স্যাকশন থেকে বিরাট চিল্লাচিল্লি শুনলাম। দৌড়ে গিয়ে দেখি, ফারুক তর্ক বাঁধিয়ে দিয়েছে কোন এক কাস্টমারের সঙ্গে। হুলুস্থুল কান্ড।

কাস্টমারের দোষ, কেন সে চেকটি ছুঁড়ে দিল ফারুকের দিকে। অন্যদিকে ফারুকের দোষ, কেন ফারুক রূঢ় ভাষায় বলল পাঁচশ টাকার নোট দেয়া যাবে না। একশ টাকার নোট নিতে হবে। কাস্টমারের দাবী, কথাটা ভদ্র ভাষায় বললেই তো হতো। ফারুকের পক্ষ নিয়ে আমি কাস্টমারকে বুঝাতে চাইলাম, ফারুকের কথা বলার ধরনটাই এমন।

মিষ্টি সুরটাও কর্কশ শুনায়। ক্যাশ ইনচার্জ আর এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মিলে ফারুককে নিরস্ত করলেন চিল্লাচিল্লি থেকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হল। আমি আশ্চর্য হলাম। কাস্টমার যেখানে আমাদের কাছে দেবতা তুল্য, ফারুক কি করে এরকম উদ্ধত হল! তার কি চাকরী নিয়ে কোন মায়া নেই? যেহেতু এটা আমার কোন মাথাব্যাথার কারণ নয় তাই আমি বেশিক্ষণ স্পটে না থেকে চেম্বারে চলে আসলাম।

কে এই ফারুক? কোথায় তাকে দেখেছি? রাজীবকে ডেকে আনলাম। সে সবার সাথে খুব মিশুক বলে আমার মনে হল সেই পারবে আমাকে ফারুকের ব্যাপারে জানাতে। কি ব্যাপার রাজীব। ক্যাশে কি প্রায়ই এমন হয়? জ্বি স্যার। ফারুক প্রায়ই এমন করে।

খুব রগচটা মনে হয়। জ্বি স্যার। কাস্টমার তো কাস্টমার। ম্যানেজার স্যারের সাথে তর্ক করতেও তার বাঁধে না। একটু বেশি পরিমানে ঠোঁট কাটা আরকি।

বলেন কি! ম্যানেজার স্যার কি তাকে কোন পানিশম্যান্ট দেয় না। না স্যার। কাউকে তো কখনো দেখিনি ফারুককে কোন কিছু বলতে। স্ট্র্যান্জ! আচ্ছা, তাকে কি আপনি চেনেন? এই তো স্যার, ছয় মাস হল সে জয়েন করেছে। তারপরই পরিচয়।

তার সম্পর্কে আর কিছু জানেন? না তো! কেন স্যার? কোথায় জানি তাকে দেখেছি বলে মনে হয়! মনে করতে পারছি না। কোন পত্রিকায়, স্যার? গত বছর সেেপ্টম্বর মাসে? হয়তো তার মতো চেহারার কাউকে দেখেছেন স্যার । কিন্তু আমি কিছু জানি না। কেমন জানি ফিসফিস করে সে বলল। গত বছর সেপ্টেম্বর মাস ! পত্রিকা! আমার মস্তিষ্কের সুপ্ত অংশগুলো সজাগ হতে থাকল।

ইয়েস ইয়েস! মনে পড়েছে! ফারুকের চেহারা খানিকটা মুরগী সফিকের মতো। ফারুক কি তবে পত্রিকায় প্রকাশিত টপ টেররিস্ট মুরগী সফিক! অনেকগুলো হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিল টেররিস্ট মুরগী সফিক। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ পুরুস্কার ঘোষনা করেছিল এক সময়। কিন্তু পরে তো সে... র্যাবের সাথে ক্রস ফায়ারে মারা যায়। নাকি ফারুকই সেই সফিক! ধ্যুত! মৃত ব্যক্তি কিভাবে আসবে এখানে! তবে কি সেদিন মারা যাওয়া ব্যক্তিটা সফিক ছিল না? শুনেছি আন্ডারওয়ার্ল্ডের লোকজনের লুক এ লাইক রাখা হয় পুলিশেল চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য।

আমি রাজীবকে প্রশ্ন করলাম, আর কেউ কি তবে এ মিলটা ধরতে পারেনি? হয়তো পেরেছে, হয়তো না। তবে ব্যাপারটা নিয়ে আমরা কেউ মাথা ঘামাই না। সবারই তো চাকরীর মায়া আছে। আর তাছাড়া আমরা নিজেরাও তো শিওর না। দেখতে একরকম দুজন মানুষ হতেই পারে।

কি দরকার ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলে ঝামেলায় জড়ানোর? আমি আমার ডেস্কে এসে গুগল করে সফিকের ছবিটি আবার দেখলাম। ছবিতে সফিকের চুল লম্বা, মুখে লম্বা দাড়ি। ফটোশপে কাজ করে চেহারা থেকে দাড়ি গোঁফ সরিয়ে ফেললাম। ঠিক যেন আমাদের ফারুক। দুজন মানুষের চেহারায় এতো মিল থাকে কিভাবে! কি জানি বাপু।

আমার টেনশন আরো বেড়ে গেল। অবশ্যই এর একটা হ্যাস্ত ন্যাস্ত করতে হবে। দিন যতই যাচ্ছিল, ফারুকের গতিবিধি যতোই আমার চোখে পড়ছিল, ততোই আমার সন্দেহ বাড়ছিল। খেয়াল করে দেখলাম ফারুক অফিসে চলে আসতো অনেক আগে। আবার অফিস থেকে বেরুতো সবার শেষে।

একদিন বেরুবার সময় তাকে ডাকলাম । যাবেন নাকি ফারুক সাহেব। নিজের পিসি থেকে চোখ তুলে সে বলল, না স্যার, আপনি যান। আমার আরো কিছু কাজ আছে। একজন ক্যাশ অফিসারের আর কি কাজ থাকতে পারে ভেবে পেলাম না।

আর ওভাবে সারাক্ষণ পিসিতে ব্যস্ত থাকতে তো আর কাউকে দেখা যায় না। কি আছে তার পিসিতে। একদিন আমি সকাল আটটার সময় অফিস চলে আসলাম। গার্ড আমাকে দেখে কিছুটা অবাক হলে বললাম, কিছু কাজ আছে আজ। দেরী না করে চলে গেলাম ফারুকের ডেস্কে।

চালালাম তার পিসি। গোটা কম্পিউটার তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকলাম। কিছু্ নাই, কিছুই নাই। হঠাৎ দেখি, ফারুক নামের একটা ফোল্ডার। ফোল্ডারটি খুলতে গিয়ে দেখি সেটা পাসওয়ার্ড দেয়া।

অনুমানে কিছু পাসওয়ার্ড দিয়ে কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। তারপর হতাশ হয়ে যন্ত্রটি শাট ডাউন করে নিজের টেবিলে চলে গেলাম। সারাটা দিন মনটা খারাপ থাকল। সচেতন নাগরিক হিসেবে এ পর্যায়ে এসে আমি ভাবলাম কেন আমি ব্যাপারটা পুলিশকে জানাচ্ছি না। কিন্তু আমার কাছে তো এমন কোন প্রমান নাই যা দিয়ে সরাসরি ফারুককে দায়ী করা যায়।

একটা ফোল্ডার পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখা, ঘন ঘন ছুটিতে চলে যাওয়া অথবা অফিসে আনইউজুয়্যাল টাইমিং- নাহ, এসবের কোনোকিছুই ধোপে টিকবে না। তবে কি আমি নিশ্চুপ থাকব? আমার বিবেক এটাতেও সায় দিচ্ছে না। একজন দেশপ্রেমিক হয়ে বিষয়টা আমি চেপে যেতে পারি না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলাম পুলিশকে কল দিব। তার ফ্রিকোয়্যান্টলি ছুটিতে যাওয়া, সবার থেকে দূরে দূরে থাকা, কাস্টমার আর বসদের সাথে ‘হু কেয়ারস’ আচরণ, পিসিতে গোপন ফোল্ডার রাখা, অসময়ে অফিস, কোম্পানীর তাকে এক্সট্রা খাতির করা এসব বিষয় পুলিশকে বললে কিছুটা তো ইনভেস্টিগেট করবে।

আমি অফিসের একটা খালি জায়গায় পৌছালাম। পার্শ্ববর্তী র্যাব অফিসের নাম্বারে ডায়াল করলাম। একট রিং হতেই লাইনটা কেটে দিলাম। নাহ! আমার মোবাইল থেকে কল দেয়া উচিত হবে না। এটা বোকামী হবে।

চেম্বারে ফিরে আসলাম। কিছুক্ষণ পর নির্ধারিত উৎসব শুরু হল। আমাদের ব্রাঞ্চ এবছর সবচেয়ে বেশী প্রফিট করেছে তাই এই পার্টি। ফারুক এক কোনায় বসে কফি খাচ্ছিল, আমি তার পাশে গিয়ে টুকটাক গল্প করলাম। উদ্দেশ্য তার কাছ থেকে কোন তথ্য আদায় করা যায় কি না।

যখন তার পাশে বসেছিলাম তখন মোটেও বুঝতে পারিনি খুব তাড়াতাড়ি আমি একটা ভয়াবহ বিপদে পড়তে যাচ্ছি! বাড়ি যাওয়ার পথে অফিস থেকে অদূরে একটা ফোন সেন্টারের দিকে গেলাম। সেখান থেকে কল দিলাম র্যাব অফিসে। হ্যালো। ওপাশ থেকে সুরটা ধমক বলেই মনে হল। এমনিতেই গোপনে একটা কাজ করছি।

ধমক খেয়ে হার্টবিট আরো বেড়ে গেল। যেভাবে বলব বলে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছিলাম কথাগুলো, ভুলে গেলাম। প্রচন্ড ইচ্ছে হল ফোনটা কেটে দেই। কিন্তু উপায় নাই। কেউ একজন ওপাশ থেকে ওয়েইট করছে কথার।

স্যার... আমি একজন ইনফরমার। আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চাই। দিন। আরেকটি ধমক খেলাম! র্যাবরা কালো পোশাক পড়ে নিজেদের যে কি মনে করে, আল্লাহ মালুম! স্যার, মুরগী সফিক এখনো বেঁচে আছে। সে প্রাইম ব্যাংক ধানমন্ডি ব্রাঞ্চে ছদ্মবেশে ফারুক নামে কাজ করছে।

ওকে স্যার থ্যাংকস। বলে ফোনটা রেখে তড়িঘিড়ি বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। নিজের উপর ভয়াবহ রাগ হল। দেশের জন্য একটা ভাল কাজ করতে আমার এতোটা ভয় পাওয়া উচিত হয়নি। যাই হোক, বাসায় ফিরেই নিউজ চ্যানেলগুলা দেখার জন্য টিভি রিমোট হাতে নিতে গিয়ে দেখি ওটা আমার বউয়ের দখলে! আমি এ বেশ ভালভাবে জানি বউকে কনভিন্সড করার চাইতে অফিসের বসকে কনভিন্সড করা অনেক সহজ।

তাই এই টেনশনের মধ্যেও তার শাড়ির প্রশংসাসহ রূপের বাড়তি কিছু প্রশংসা করতে হল রিমোটটি পাওয়ার জন্য। রিমোট নিয়ে বাংলা চ্যানেলগুলো তন্ন তন্ন করে পাল্টাতে থাকলাম মুরগী সফিক বেঁচে আছে এমন একটি ব্র্যাকিং নিউজের জন্য। কিন্তু হতাশ হতে হল আমাকে। এটা হতেই পারে। গোপনীয়তার জন্য হয়তোবা খবরটি প্রকাশ করা হচ্ছে না।

খেয়ে দেয়ে ঘুমোতে গেলাম । ঘুম আসল না। কাল অফিসে পৌছে নিশ্চয়ই র্যাব আর পুলিশের দল দেখতে পাব চারদিকে। কিন্তু না, পরদিন অফিসে পৌছে দেখলাম সবকিছু স্বাভাবিক, আগের মতোই। আমি আশাহত হলাম।

সারাদিন অফিসের দরজার দিকে চোখ রাখলাম, কিন্তু না পুলিশের পোশাক পরা কাউকেই দেখতে পেলাম না। তারা কি তবে আমার ইনফরমেশনটা বিশ্বাস করেনি? নাকি তারা আমার কথা ভালভাবে শুনতে পায়নি। এটা ঠিক, আমি তখন উত্তেজনা আর ভয়ে কাঁপছিলাম। কিন্তু আমি তো ঠিক নাম্বারেই কথা বলেছি। তবে কেন এতো বড় একটা খবরকে তারা পাত্তা দিল না? আমি কি তবে আবার কল দিব? এবার আমার পরিচয় দিয়ে তারপর সবকিছু জানাব? কি করব আমি? সন্ধ্যা হয়ে এল।

কর্মক্লান্ত সবাই একেএকে বের হয়ে যাচ্ছে। ও হ্যা, আজ কিন্তু ফারুক আসেনি। বোধহয় আবার ছুটিতে! মনে মনে ফারুকের নাম নিতেই একটা কল আসল মোবাইলে। হ্যালো, স্লামালিকুম। ওয়ালাইকুম।

এটা কি কায়েস আহমেদ? জ্বি, কায়েস বলছি। আমি ধানমন্ডি থানা থেকে ইন্সপেক্টর রাহুল বলছি। আমার হার্টবিট বেড়ে গেল। জ্বি, বলেন স্যার। আপনি কি একটু থানায় আসতে পারবেন।

আমি? কিন্তু কেন? আপনি আসেন। এক্ষুনি। ফোন কেটে গেল। আমি কেন যাব? আমি কি করলাম? আমি যে কল দিয়েছিলাম তা তো কিছুতেই তাদের ট্রেস করার কথা না। আমি তো খারাপ কোন কাজ করিনি! বরং আমি এ দেশ এবং জাতির উপকার করতে চেয়েছি।

এদেশের পুলিশরা কি এতোই ফুলিশ যে ভাল মন্দের ফারাকটা পর্যন্ত বুঝে না! আবার মনে হলো, এমন করে ভাবা আমার উচিত হচ্ছে না। এটাও তো হতে পারে যে তারা বুঝতে পেরেছ কলটি আমি করেছি, এখন ডিটেলস জানার জন্য আমাকে কল দিয়েছে। এইসব ভাবতে ভাবতে আমি থানায় পৌছালাম। ইনস্পেক্টর রাহুল আমাকে বসতে দিয়ে টেবিলে রাখা একটা ছবি হাতে নিয়ে বললেন এই লোকটাকে আপনি চেনেন? ছবিটা দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। এটা তো আমার ছবি, ফারুকের সাথে! ছবিটা গতকাল অফিস পার্টিতে তোলা! এ ছবি এখানে আসল কিভাবে? নির্ঘাত এরা আজ অফিসে সিভিল ড্রেসে গিয়েছিল।

কায়েস সাহেব। আপনার পাশের লোকটাকে আপনি চিনেন? ইন্সপেক্টরের চোখেমুখে প্রশ্ন। জ্বি। তার সাথে আপনার সম্পর্ক কি? সে আমার কলিগ। আমি দৃঢ়ভাবে বললাম।

এছাড়া তার ব্যাপারে আর কিছুই জানি না আমি। সে কোথা থেকে এসেছে কি তার কাজ, তার সাথে আর কার কার সম্পর্ক আছে এসবের কিছুই আমি জানি না। কায়েস সাহেব । আমি তো কেবল জানতে চেয়েছি তাকে আপনি চিনেন কি না। আর তো কিছু জানতে চাই নি, তাই না? জ্বি স্যার।

তবু বলছি, তার সম্পর্কে আমি আর কিছুই জানি না। তার সাথে আমার আর কোন সম্পর্ক নেই। আমি আবারো নিশ্চিত করলাম পুলিশকে। কায়েস সাহেব, আপনি চিন্তা করে দেখুন। সময় নিন।

স্যার, চিন্তা করার কোন দরকার নেই স্যার। একটা মানুষের পাশে বসে ছবি তোলার মানে এ না যে তার সাথে আমার ঘনিষ্টতা অনেক বেশি। শুনেন কায়েস সাহেব। আজ আপনার অফিসে লোক পাঠিয়েছিলাম। তারা এই ছবি নিয়ে আসল।

এবং পিয়ন বয় থেকে আপনার ম্যানেজার সবাই বলেছে আপনার সাথে এই লোকটির সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক ছিল। হায় আমাদের পুলিশ ডিপার্টম্যান্ট! এদেরকে আমি কি করে বুঝাই যে একটা লোকের সাথে কথা বলা বা পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে আমি তার সহকারী হয়ে যেতে পারি না। বললাম, বিশ্বাস করুন স্যার, তার সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ নাই, আল্লাহর কসম। বিপদে পড়লে এমন কসম সবাই কাটে কায়েস সাহেব। আচ্ছা আমাকে কেবল এটা বলুন যে তাকে কেন আপনার কালপ্রিট বলে মনে হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত কখনো তো আমি বলিনি যে সে কালপ্রিট। এই পর্যায়ে এসে তাকে সবকিছু খুলে বলার সুযোগ পেলাম। সবকিছু বললাম ইন্সপেক্টরকে। সব শেষে বল্লাম, স্যার তাকে কেন জানি আমার মুরগী সফিকের মতো মনে হয়। একই রকম চেহারা স্যার! আচ্ছা ।

আপনার বুঝি তাই মনে হয়? ক্রর হাসি তার মুখে। তবে আপনি আমাদের বিষয়টা জানালেন না কেন? জানিয়েছি স্যার। গতকাল তো কলটি আমিই দিয়েছিলাম। ইন্সপেক্টরের উল্টানো ভ্রু দেখে মনে সাহস পেলাম খানিকটা। ইয়েস স্যার! আই ওয়াজ দা ইনফরমার।

বাহ! মিথ্যা বলার আর জায়গা পান না বুঝি! গতকাল যে কলটা আমাদের কাছে এসেছিল সেটা হচ্ছে একটা নারী কণ্ঠ, মি. কায়েস। নারী কণ্ঠ! বিষ্ময়ে বিমুঢ় হয়ে গেলাম। তবে কি আমার কলটি ঠিক জায়গায় পৌছায়নি? তবে কি আমার আগে আর কেউ জানিয়ে দিল সব কিছু! কে সে? সে কি নিলুফা? নাকি ইয়াসমিন? নাকি আর কেউ? কিছুই বুঝতে পারছি না আমি। মোবাইল বেজে উঠল। আমার স্ত্রী কল দিচ্ছে।

দেরী দেখে সে নিশ্চয়ই চিন্তা করছে। স্যার কে বললাম, স্যার আমার স্ত্রী কল দিচ্ছে। দেরী দেখে মনে হয় টেনশনে আছে। ওকে একটা কল করি। যাকে খুশী তাকে কল দেন।

তবে এখান থেকে যেতে হলে কেউ এসে সিগনেচার করে নিয়ে যেতে হবে। কি ঝামেলায় পড়া গেলরে বাবা! স্ত্রীর সাথে কথা বলা শেষ করলাম। তাকে বললাম ফিরতে দেরী হবে , যেন চিন্তা না করে। রাজীবকে কল দিয়ে, বিস্তারিত জানালাম। সে বলল, ভাববেন না বস।

দশ মিনিটের মধ্যে আসছি। রাজীব আসলে আমি বের হলাম। পরদিন অফিসে যেয়ে দেখি সবাই আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। অফিসে সবাই উপস্থিত কেবল ফারুক ছাড়া। চেয়ারে বসতেই এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের ডাক।

কি ব্যাপার কায়েস সাহেব। এসব আপনি কি করেছেন? বিশবাস করুন স্যার, আমি কিছু করিনি। আমি নির্দোষ। তবে ফারুকের সাথে কি লেনদেন ছিল আপনার? তার সাথে এতো মেলামেশা কি ছিল? ওর ব্যাপারে কিছু জানতে চেয়েছিলাম স্যার। আমার সন্দেহ হচ্ছিল ওকে।

তবে আগে তো আপনি আমার সাথে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করতেন। আমাকে আপনার সন্দেহের কথা বলতেন। আমি সাহায্য করতাম আমাকে। স্যরি স্যার। মনে মনে বললাম, থুরাই সাহায্য করতি।

এখন তো ব্যাপারটা ঘোলাটে হয়ে গেছে অনেক। দেখা যাক। একটু পরে পুলিশ ইন্সপেক্টর আসবে। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। যান, ডেস্কে যান।

দেখা যাক কি হয়। একটু পরে পুলিশের একটা দল আসল। একে একে সবাইকে ম্যানেজারস চেম্বারে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন শুরু করল। এক ফাঁকে রাজীব আমার চেম্বারে ঢুকল। স্যার কোন এক সুযোগে দেখেন ইন্সপেক্টরকে কিছু টাকা দেয়া যায় কিনা।

আমি কি করসি? কেন টাকা দেব রাজীব? স্যার, এটা যুক্তি তর্কের সময় না। ওকে রাজীব। দেখা যাক। এমন সময় ইন্সপেক্টরকে ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছে দেখে রাজীব বলল, যান স্যার, যান। এই সুযোগ।

আমি রীতিমতো দৌড়ে তার কাছে গেলাম। শুরুতেই পাঁচ হাজার টাকা তার পকেটে গুঁজে দিয়ে বললাম, স্যার, আমাকে একটু সেভ করুন স্যার। অমি আসলেই কিছু জানি না। ইন্সপেক্টরকে মনে হল এমন কিছুই আশা করছিলেন। বললেন, ঘাবড়াবেন না।

আমি দেখব। কিন্তু ভয়ের বিষয় কি জানেন, সবাই আপনার এগেন্সটে বলছে। সবাই বলছে, কেবলমাত্র আপনার সাথেই ফারুককে গল্প করতে দেখা গেছে। স্যার একটা প্রশ্ন করব? হ্যা, করুন। স্যার যে কল করেছিল তার ভয়েসটা কি রেকর্ড করা আছে? হ্যা, আমাদের অফিসের টিএনটিতে আসা সব কলই রেকর্ড করা থাকে।

স্যার, অমি কি শুনতে পারি? ঠিক আছে বাইরে চলুন। তিনি আমাকে তাদের গাড়ির ভেতর নিয়ে গেলেন। গাড়িতেই রেকর্ডারটি রাখা ছিল। ভয়েসটি শুনে আমি অবাক। এটা তো স্যার আমার কণ্ঠ।

আমি ঠিক এ কথা গুলোই বলেছিলাম, স্যার। টেনশনে ছিলাম বলে গলা এমন শুনাচ্ছে স্যার। বিশ্বাস করুন। এক নিঃশ্বাসে কথাগুলা বললাম। হতে পারে।

দেখা যাক। চলেন। ভেতরে চলেন। পুলিশের দল চলে যেতেই, আমাকে ম্যানেজারের রুমে ডাকা হল। আমি এসিসট্যান্ট ম্যনেজার এবং ম্যানেজারের সাথে আরেকজন লোককে দেখতে পেলাম।

ম্যানেজার পরিচয় করিয়ে দিলেন, আমাদের ক্লাস্টার হ্যাড। আমাকে বসতে বললেন স্যারেরা। ম্যানেজার স্যার শুরু করলেন, শুনুন কায়েস সাহেব। আপনি দেখতে পারছেন দুদিন ধরে কি সব কান্ড ঘটছে অফিসে। কিন্তু স্যার আমি তো এর... কায়েস সাহেব, আগে স্যারের কথা শুনুন।

এসিস্ট্যান্ট ম্যনেজার থামিয়ে দিলেন আমাকে। ম্যানেজার স্যার আবার শুরু করলেন, কায়েস সাহেব, যে ঘটনাগুলা ঘটে গেল তা খুবই হতাশাজনক এবং একইসাথে লজ্জাজনক। । বিষয়টা আমাদের ব্যাংকের জন্য একেবারে নতুন। আজ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক সহ সবার নজর আমাদের ব্যাংকের দিকে পড়বে।

আমাদের ব্যাংকের জন্য খুব খারাপ হবে ব্যাপারটা। ঘটনাটা কেবল আপনার কারনেই ঘটল। আমাদের হায়্যার অথোরিটি সহ মালিকপক্ষের সবাই আপনার উপর রুষ্ট। প্রচন্ড রেগে আছেন তারা। জানেন তো, তারা খুব প্রভাবশালী।

তারা ফারুককে খুঁজছেন। তাদের দাবী ফারুকের ব্যাপারে তারাও তেমনটা জানেন না। ফারুক যেহেতু উধাও তাই লাইমলাইট পুরোটাই আপনার উপর। আমরা সবাই এ থেকে নিষ্কৃতি চাই, কায়েস সাহেব। ক্লাস্টার ম্যানেজার এবার মুখ খুললেন, কাযেস, আপনার প্রতি আমাদের রিকোয়েস্ট থাকবে, আপনি এক্ষুনি রিজাইন করুন।

কে দোষী, কে নির্দোষ এটা পরে দেখা যাবে। আমি জানতাম এমনটাই ঘটবে এখন। ক্রুয়েল করপোরেট ওয়ার্ল্ড! তোমাকে ছেলেবেলা থেকেই আমার অপছমদ। কেবল ভাগ্যের ফেরেই আজ আমিও তোমাদের জগতে । স্যার, আপনারা যা বলবেন তা করতেই হবে, আমি জানি।

কিন্তু আমাকে ফারুকের ব্যাপারে বলুন। সে কি আসলেই মুরগী সফিক ? ব্যাপারটা এখনো ক্লিয়ার না। এই মুহুর্তে সে পলাতক। পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করছে। দেখা যাক।

************************************************** এরপর আমার চাকুরী জীবনে একটা লম্বা বিরতি নিতে গ্রামের বাড়ি চলে গেলাম। জীবনের এ অধ্যায় একেবারে ভুলে যাবার জন্য এ পদক্ষেপ। এক বছর পর আরেকটি ব্যাংকে জয়েন করলাম। এবার রাজধানী থেকে দূরে সিলেটে। এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আমাকে সব ইনচার্জদের সাথে একে একে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

মি. সাইফুল, ক্রেডিট ইনচার্জ, বডি বিল্ডার টাইপ শারীরিক গঠন। মিস নন্দিতা, রেমিটেন্স ইনচার্জ, বনলতা সেন টাইপ চোখের জন্য সহজেই নজর কাড়ে। মি. রবিউল, জিবি ইনচার্জ। ককোরানো চুল, পুরুষ্ট গোঁফের অধিকারী। বয়েস চল্লিশ পেরিয়েছে নিশ্চিত।

এবং মি. মোশাররফ, ক্যাশ ইনচার্জ। ন্যাড়া মাথা ও ফ্র্যাঞ্চ কাট দাড়ি। সবার সাথে পরিচিত হয়ে চুপচাপ নিজ ডেস্কে ফিরে আসলাম। গুগল করে মুরগী সফিকের ছবি বের করলাম। ফটোশপ খুললাম।

ছবি থেকে লম্বা চুল ভ্যানিশ করে দিলাম একেবারে। লম্বা দাড়ি সরিয়ে ফ্র্যাঞ্চকাট দাড়ি পরালাম চেহারায়। যা ভেবেছিলাম তাই। কে বলবে, ছবির লোকটা আমাদের ক্যাশ ইনচার্জ মোশাররফ না? (গল্পের সব চরিত্র এবং প্রতিষ্ঠান কাল্পনিক। ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।