আমার লেখা, একান্ত আমার ভাবনা খবরের সূত্র: প্রথম আলো
নিরস্ত্র তরুণ সরফরাজকে গুলি করে হত্যার দায়ে পাকিস্তানি আধা সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের এক সেনা সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। করাচির সন্ত্রাস দমন আদালতের বিচারক বশির আহমদ খোসো গতকাল শুক্রবার এ রায় দেন। পাকিস্তানের কোনো বেসামরিক আদালত এই প্রথম আধা সামরিক বাহিনীতে কর্মরত কাউকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিলেন।
সরফরাজকে লক্ষ্য করে গুলি করার দায়ে রেঞ্জার্স সদস্য শহীদ জাফরকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েমৃত্যুদণ্ড এবং দুই লাখ রুপি জরিমানার আদেশ দেন বিচারক। এ ছাড়া অভিযুক্ত আরও পাঁচ সেনা সদস্য ও এক বেসামরিক নাগরিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ওই বেসামরিক ব্যক্তি সরফরাজের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ এনে তাঁকে সেনাদের কাছে টেনে নিয়ে যান। যাবজ্জীবন ছাড়াও তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ রুপি করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার ওই অর্থ নিহত সরফরাজের পরিবারকে দেওয়া হবে। অপেক্ষাকৃত দ্রুত সময়ের মধ্যে এ মামলার বিচার সম্পন্ন হলো। হত্যাকাণ্ডের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
রায়ের পর সরফরাজের পরিবারের সদস্যরা স্বস্তি প্রকাশ করেন। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। সরকারি কৌঁসুলি মোহাম্মদ খান বুরিও বলেন, ঐতিহাসিক এই রায় প্রমাণ করে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেঞ্জার্স এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়। আদালতে এটি অপরাধীদের নিজেদের কাজ বলে প্রমাণিত হয়েছে।
সরফরাজের ভাই সালিক শাহ বলেন, এ রায়ে তাঁর পরিবার স্বস্তি পেয়েছে।
২২ বছর বয়সী সরফরাজ শাহকে গত ৮ জুন করাচির একটি উন্মুক্ত পার্কের খুব কাছে থেকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন রেঞ্জার্সের সদস্যরা। ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে ওই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য টেলিভিশনে প্রচার করা হলে দেশজুড়ে ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। সরফরাজকে একজন ডাকাত বলে দাবি করে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের সিন্ধু শাখা। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে সরফরাজের পরিবার।
ওই হত্যাকাণ্ডের ফুটেজে দেখা যায়, নিরস্ত্র সরফরাজ প্রাণ রক্ষার জন্য অনেক অনুনয়-বিনয় করার পরও তাঁকে পরপর দুবার গুলি করেন রেঞ্জার্সের এক সদস্য। এর পরও সরফরাজ সাহায্যের আবেদন করেন। কিন্তু নির্বিকার সেনারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন ধীরে ধীরে সরফরাজের নিস্তেজ হওয়ার দৃশ্য। ওই ভিডিওচিত্রে কোনো প্রমাণ না থাকলেও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক দাবি করেন, সরফরাজের কাছে বেআইনি অস্ত্র ছিল। তবে পাকিস্তানের সরকারও এ ব্যাপারে নজিরবিহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং করাচি থেকে পুলিশ ও রেঞ্জার্সের প্রাদেশিক প্রধানদের প্রত্যাহার করে নেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।