চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়ের দ্বারা প্রমাণিত হলো কেউই আইনের ঊধের্্ব নয়। এ মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন সাবেক মন্ত্রী রয়েছেন। রয়েছেন একজন সাবেক সচিব, ডিজি এফআইয়ের সাবেক পরিচালক, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও পরিচালকের মতো ক্ষমতাধর ব্যক্তি। দায়িত্বে থাকার সময় নিজেদের হয়তো তারা আইনের ঊর্ধ্বে বলে ভাবতেন।
সেই ভ্রান্ত ভাবনা তাদের বিপথগামী হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ক্ষমতাধর এক মন্ত্রী চোরাচালানের অস্ত্র খালাস করার জন্য তার মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি জেটি ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন। আরেক মন্ত্রী নিজেদের অপরাধ যাতে ফাঁস না হয় সে জন্য উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর প্রয়াস চালিয়েছেন। কিন্তু অতি ক্ষমতাধর এ দুই ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত আইনের হাতকে এড়াতে পারেননি। চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় সরকারের যেসব শীর্ষ কর্মকর্তা অভিযুক্ত হয়েছেন তারা নিজেরা অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এটি হলফ করে বলার উপায় নেই।
বরং কর্তার ইচ্ছায় কীর্তন গেয়ে তারা মন্ত্রীদের হুকুম তামিল করেছেন। আইন অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের সেসব নির্দেশই পালন করতে বাধ্য, যা আইনানুগ বা বৈধ। মন্ত্রী দূরের কথা আরও ঊধের্্বর কেউ নির্দেশ দিলেও অবৈধ কিছু পালনে কেউ বাধ্য নন। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করার ক্ষেত্রে সবাই সতর্ক থাকবেন আমরা এমনটাই আশা করছি। মন্ত্রী কিংবা ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের অবৈধ নির্দেশ প্রত্যাখ্যানে এ মামলা অনুপ্রেরণা জোগালে তা হবে এক বিরাট অর্জন।
বলা হচ্ছে, দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল সাবেক জোট সরকারের আমলে। যারা এ অস্ত্র আটক করেছেন তাদের ধরে ধরে ফাঁসি দেওয়া হলো। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ এমন অর্বাচীন বক্তব্য রেখে আদালতের রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। সচেতনভাবে তারা যে সত্যটি গোপন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন তা হলো এ অস্ত্র যারা ধরিয়ে দিয়েছিল জোট সরকারের আমলে তাদের পুরস্কৃত করার বদলে শাস্তিই দেওয়া হয়েছিল। অস্ত্র আটকের জন্য তাদের লোকদেখানোভাবে অভিনন্দিত করা হলেও পরে অস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
পুলিশের দুই সার্জেন্টকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি গ্রেফতারও করা হয়। ২৭ মাস বিনা কারণে কারাভোগও করতে হয় তাদের। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় সে পাপের প্রায়শ্চিত্তই নিশ্চিত করল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।