সাধারন ব্লগার বিখ্যাত গিটারিস্ট জিমি হেন্ড্রিক্স যেদিন মারা গেলেন সেদিন মাঠে ফুটবল খেলছিলেন এক ১৪ বছরের বালক। খবরটা শোনা মাত্র কোচের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সবার সামনে ঘোষণা করলেন - ভবিষ্যতে সে গিটারবাদকই হবেন। সেই বালকের ঘোষণা মাঠে মারা যায়নি। কেননা একসময়ে এই বালকই হয়ে ওঠেন বিশ্বখ্যাত গিটারিস্ট জো স্যাত্রিয়ানি।
১৯৮৬ সালে স্যাত্রিয়ানি নিজ উদ্যোগে ‘নট অফ দিস আর্থ’ নামে একটি ইন্সট্রুমেন্টাল অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
এটিই পরে ইন্সট্রুমেন্টাল রক সঙ্গীতের ধারা সৃষ্টি করে।
আমেরিকার নিউ ইয়র্কে ১৯৫৬ সালে জো স্যাত্রিয়ানি জন্ম নেন। কিশোর বয়সেই তিনি গিটার বাদক জিমি হেন্ড্রিক্স, জিমি পেজ ও জেফ বেক এর গিটারের ছয় তারের ব্যঞ্জনায় প্রভাবিত হন।
১৯৭৪ সাল থেকে স্যাত্রিয়ানি পাকাপোক্তভাবে গিটার নিয়ে মেতে ওঠেন। গিটার বাদক বিলি বেউয়ার ও জ্যাজ পিয়ানো বাদক লেনি ট্রিসাটনোর সাথে বাজাতে শুরু করেন বিভিন্ন পাব ও মোটেলগুলোতে।
এর কিছুদিন পরেই স্যাত্রিয়ানি গিটার শিক্ষার স্কুল খুলে বসেন। তার প্রথমদিককার ছাত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন এখনকার অন্যতম গিটার বাদক স্টিভভাই।
১৯৭৮ সালে স্যাত্রিয়ানি ক্যালিফোর্নিয়াতে চলে আসেন। উদ্যেশ্য সঙ্গীতে নিজের জীবনটা গুছিয়ে নেয়া। এখানেও তিনি গিটার শিক্ষাদান শুরু করেন।
উল্লেখযোগ্য ছাত্রদের মধ্যে আছেন কার্ক হ্যামলেনট (মেটালিকা), ডেভিড ব্যারসন (কাউন্ট ক্রস), কেভিন কোজগান (থার্ড আই ব্লাইন্ড), অ্যালেক্স স্কলনিক (টেস্টামেন্ট)।
১৯৮৬ সালে জো স্যাত্রিয়ানি প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তবে শ্রোতা সমাজ সেটা তেমন ভাবে গ্রহণ করেনি। এদিকে তার বন্ধু ও ছাত্র স্টিভভাই ডেভিড লি’র সাথে কাজ করে বেশ নাম ডাক কামিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে স্যাত্রিয়ানির নাম বলতেন।
এভাবেই শ্রোতাদের নজরে আসেন স্যাত্রিয়ানি।
জো’র দ্বিতীয় যন্ত্রসঙ্গীত নির্ভর অ্যালবাম ‘সার্ফিং উইথ দি অ্যালিয়েন’ মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। আর রেডিওতে ব্যাপক প্রচার পাওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই অ্যালবামটি জনপ্রিয়তা পায়। তাছাড়া এটিই প্রথম কোন যন্ত্রসঙ্গীতের অ্যালবাম যা টপচার্টে জায়গা করে নেয়।
একই বছরে রোলিং স্টোন ও মিক জ্যাগারের সাথে কনসার্টে অংশ নিতে তিনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে যান।
১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় স্যাত্রিয়ানির তৃতীয় অ্যালবাম ‘দি এক্সট্রিমিস্ট’। অ্যালবামটি সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি ব্যাণিজ্যিক ভাবেও ব্যবসা সফল হয়। আর এই সময়েই তিনি গিটার বাদক হিসেবে নিজের অবস'ানটি পোক্ত করে নেন।
এই কারণে ’৯২ সালের শেষের দিকে ‘ডিপ পার্পল’-এ অতিথি গিটার বাদক হিসেবে যোগ দেয়ার জন্য ডাক পরে তার। ওই সময় ব্যান্ডটি জাপান ট্যুর নিয়ে ব্যস- ছিল।
এই ভ্রমণে স্যাত্রিয়ানির গিটার কার্যকলাপে মুগ্ধ হয়ে ব্যান্ডের পক্ষ থেকে তাকে স্থায়ি গিটার বাদক হিসেবে থেকে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়।
তবে জো’র ভাবনা ছিল অন্যরকম। তিনি ব্যান্ডে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে সঙ্গীত প্রযোজনা সংস্থা সনি’র সঙ্গে একটি মাল্টি অ্যালবাম বের করার চুক্তি করে ফেলেন।
১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে স্যাত্রিয়ানির মোট ১২টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। আর এই মাসের প্রথম দিনে মুক্তি পেয়েছে তার ১৩তম অ্যালবাম ‘প্রফেসর সেটচাফানকিলাস অ্যান্ড দি মাসটেরিওন অফ রক’।
অ্যালবামের সঙ্গীতগুলো করা হয়েছে ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে। অ্যালবামে স্যাত্রিয়ানির ছেলে জোজু স্যাত্রিয়ানিও কাজ করেছে। সনি/বিএমজি’র ব্যানারে মুক্তি পাওয়া এই অ্যালবামে যন্ত্রসঙ্গীত রয়েছে ১০টি। উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছে- ‘মাসটেরিওন’, ‘ওভার ড্রাইভার’, ‘আই জাস্ট ওয়ানা রক’, ‘রেভ্যুলেশন’, ‘কাম অন বেবি’ ইত্যাদি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।