ভাবি অনেক - পড়ি কিছু - লিখি কম । সাধারণত ক্লাসের দুষ্টু ছেলে বা মেয়েটাই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে সবসময়। কিন্তু অতিরিক্ত রকম দুষ্টু অথবা অতিরিক্ত শান্ত বা নিভৃতচারী- এই দুই ধরণের মানুষকেই খুব চোখে পড়ে আমার। তবে যাকে নিয়ে ঘটনা সে এই দুই গ্রুপের কোনটাই ছিল না অথবা দুই শ্রেণীতেই তাকে ফেলা যেত। চুপচাপ অথচ দুষ্টুমিতে ভরপুর একটা ছেলে ছিল সে।
কথা কম বলতো কিন্তু তার চোখে-মুখে লেগে থাকতো দুষ্টুমির ছাপ। হয়তবা সে কারণেই আমার দৃষ্টি কেড়েছিল সে। প্রতিটা দিন ক্লাসে সে দেরি করে আসতো। আর বসতো একদম পেছনের বেঞ্চে। প্রতিদিন দেরি করে আসার জন্য স্যারের কাছে কতরকম টিপ্পনীও যে শুনতে হতো তাকে।
তার চোখের তারায় দুষ্টুমিটা ভীষণভাবে টানতো আমাকে। একটা সেমিস্টার ক্লাস করলাম তার সাথে কিন্তু সাহস করে কখনো কথা বলতে পারিনি। নামটা জানতাম শুধু আর জানতাম নারায়ণগঞ্জে বাড়ি তার। প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে ক্লাস করতো। ছেলেটাকে প্রায়দিনই স্যার পড়া জিজ্ঞেস করতেন।
যতবারই প্রশ্ন করতেন তার চোখমুখ দেখে মনে হতো বিভ্রান্ত, কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছে না। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেমিস্টার শেষে রেজাল্ট দেখতে গিয়ে দেখা গেল সেই কোর্সে A গ্রেড একজনই পেয়েছে এবং গ্রেডটার পাশে তার নাম। শুনেছিলাম পড়াশোনার পাশাপাশি সে তার ফ্যামিলি বিজনেসও দেখাশোনা করতো। ক্লাসে ওর উদাস উদাস ভাব দেখে স্যার প্রায়দিনই বলতেন, "কি? ব্যবসায় মন্দাভাব? ক্লাসে মনোযোগ নাই যে?" সেমিস্টার শেষে সবাইকে চমকে দিবে বলেই এই উদাস উদাস ভাব ধরে থাকত কি না কে জানে।
পাশ করেছি অনেকদিন হয়ে গেছে।
ছেলেটার সাথে সেই একটা কোর্সই করা হয়েছে আমার। হালকা গোল্ডেন কালারের যে Nissan Sunny তে করে আসতো প্রতিদিন তার নাম্বারটাও মুখস্ত । এখনো মাঝে মাঝে রাস্তায় অনেক গাড়ির ভিড়ে ঢাকা মেট্রো গ- ১৮-...... নাম্বারের গাড়িটাকে খুঁজি। বলা তো যায় না, হয়তবা আবারো দেখা হয়ে যেতে পারে কোনো এক দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।