একটা অতি অতিপরিচিত কৌতুক, একটু ধৈর্য ধরে পড়ে দেখুন, আলগা আলগা পড়লেও চলবে-
আদালতঃ তো জনাব রাহাসা, আপনি তখন কি করছিলেন?
রাহাসাঃ আমি ঘরের দরজাটা বাতাসের জন্য একটু খোলা রাইখ্যা কম্বল মুড়ি দিয়া মাচায় আলাদা শুইয়া ঘুমায়া পড়ছিলাম।
আদালতঃ তারপর?
রাহাসাঃ হঠাৎ একটা আওয়াজে ঘুম ভাইঙ্গা গেলে দেখি ওই ব্যাটা (কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ব্যাক্তিকে দেখিয়ে) আমার ঘরে ঢুইক্যা আলমারি খুইল্যা বউয়ের গয়না-গাটির বাক্স, আর ড্রয়ারে রাখা টাকা বাইর কইর্যাা নিতাছে…
আদালতঃ তখন আপনি কি করলেন?
রাহাসাঃ ভাবলাম, দেখি না ব্যাটা কি করে!
আদালতঃ তারপর?
রাহাসাঃ এই সময় আমার স্ত্রীর ঘুম ভাইঙ্গা আহাম্মকের মতো চিৎকার করতে নিলো, আর ওই ব্যাটা, সমাজের শত্রু, সে আমার বউয়ের উপর ঝাপায়া পইড়া তার মুখ চাইপ্যা ধরলো।
আদালতঃ তখন আপনি কি করলেন?
রাহাসাঃ ভাবলাম, দেখি না ব্যাটা কি করে!
আদালতঃ তো, সে কি করলো?
রাহাসাঃ আমার বউটা একটু দুর্বল। তো একটুতেই সে কাহিল হইয়্যা যাওয়াতে দেখি ওই ব্যাটা, নরপশু, আমার বউকে ধর্ষন করতাছে।
আদালতঃ ছিঃ ছিঃ… তা তখন আপনি তাকে বাধা দিতে গেলেন?
রাহাসাঃ না না, তা কেনো? ভাবলাম, দেখি না ব্যাটা কি করে!
আদালতঃ ও! তারপর?
রাহাসাঃ তারপর সে সেই কুকর্ম সাইর্যাল তাড়াতাড়ি পলাইয়া যাইতে নিলো।
আদালতঃ তো, তখন নিশ্চয়ই আপনি লাফ দিয়ে উঠে তাকে ধরতে গেলেন?
রাহাসাঃ আরে নাহ। এ সময় আমার বুইড়া বাপ আওয়াজ শুইন্যা আর আমার ঘরের দরজা খোলা দেইখ্যা আমাকে ডাকতে ডাকতে ঘরের দরজার সামনে চইল্যা আসছিলো।
আদালতঃ তারপর?
রাহাসাঃ তখন এই ব্যাটা নরঘাতক নরকের কীট, ওর হাতের গয়নার বাক্সটা দিয়া আমার বাপের মাথায় মারলো এক বাড়ি, বুইড়্যা ব্যাটা কিচ্ছু না বুইজ্ঝা ওইখানেই মইরা পইড়া গেলো।
আদালতঃ তারপর!?
রাহাসাঃ তারপর আর কি? সবই তো তখন শেষ। পৌষের ভোরবেলা, ঘুমটাও জাকায়া আসছিলো, আমার আর কিছু মনে নাই।
একটু ঘুমায়া পড়ছিলাম।
আদালতঃ হুমম… তারপর?
রাহাসাঃ তো সকালে উইঠ্যা বউরে কইলাম নাস্তা দিতে। হেরে কইয়্যা দিলাম সে যেনো গোসল না করে, কাপড় না পালটায়, নাইলে আবার সব আলামত যাইবো গা তো! ধর্ষন মামলা করতে গেলে তখন আবার এভিডেন্স পাওয়া যাইবো না। বাপের লাশের সামনে দাড়াইয়া দুঃখ প্রকাশ করলাম, পরিবার তথা সমাজ একজন ভালো মানুষ হারাইলো। লাশ ছুইয়্যা প্রতিশ্রুতি দিলাম, সন্তান হিসাবে আমি তার হত্যাকারীকে একদিন না একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাড়া করাবোই! হাতের কাছে সরকারি লোক বলতে একমাত্র চৌকিদার ছিলো, তার কাছে এর বিচার বিভাগীয় তদন্তও দাবী করলাম।
আদালতঃ বুঝছি… বুঝছি…। তারপর?
রাহাসাঃ তারপর গরম গরম নাস্তাটা সাইর্যার, বাইর হইয়া পড়লাম চোর, ধর্ষক, হত্যাকারী এই নরপশু, নরকের কীটকে খুজঁতে।
আদালতঃ বলেন কি! এতক্ষন পরে? এতো আয়েশ করে?
রাহাসাঃ স্যার, এই্টা কি কন? সাফল্যের প্রমানতো আপনার চোখের সামনেই কাঠগড়ায় খাড়ায়া রইছে!
আদালতঃ তাও ঠিক! তো কিভাবে কি হলো?
রাহাসাঃ আরে স্যার, আমি আমার বউকে কঠোর আদেশ দিছিলাম ওই গয়নার বাক্সে জিপিএস লাগায়া রাখতে! আমি ডিজিটাল মানসিকতার না!! প্রথমে রাজী হয় নাই, খরচের কথা কইতো, কইতো কি দরকার? তো দুই-চাইরটা চড়-থাপ্পড় লাগানোর পর সে নিজের আর বাচ্চার জামা না কিইন্যা, এক বছর বাপের বাড়ি না যাইয়্যা টাকা বাঁচাইয়্যা গয়নার বাক্সে জিপিএস লাগাইলো। তো ওই জিপিএস দিয়া ট্র্যাক কইর্যাল হারামজাদারে বাইর কইর্যার ফালাইলাম। তারপর ধইর্যাো আইন্যা এই যে এখন বিচারের সম্মুখীন করছি।
আপনি হুজুর এখন এর এমন একটা দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিবেন, যাতে ভবিষ্যতে শুধু সে কেনো, আর কেউ যেনো এইরকম অপরাধ করার সাহস না পায়!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।