শূন্য ঢাকার ফুটবল মাঠে এখন আর আগের সেই জোস নেই। একটা সময় আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানে বিকেল হবার আগেই অফিস ছুটি। গ্যালারী ভরা দর্শক। স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটের জন্য হাহাকার। আর ব্ল্যাকারদের মুখে হাসি।
সেই সোনালী দিনগুলো এখন শুধু মধুর ইতিহাস। ৮০-৯০ দশকে ফুটবলের জনপ্রিয়তা এত বেশী ছিল যে, প্রায় সব পরিবারেরই একটা স্বপ্ন ছিল.. পরিবারে একজন ফুটবলার থাকবে। প্রয়াত মোনেম মুন্না যখন ৫০ হাজার টাকায় আবাহনীতে নাম লেখায় তখন আমার এক আত্মীয় তার ছেলের নাম রাখেন মুন্না। বলতেন সোনার ছেলে মুন্না। এসব গল্পও এখন রূপকথার গল্পে স্থান নিয়েছে।
তবে দীর্ঘ খরা কাটিয়ে অবশেষে একটু একটু করে আবার যখন ফুটবলের মাঠে মধ্যবিত্ত আর খেটে খাওয়া মানুষগুলো যাতায়াত শুরু করে একটু একটু অক্সিজেন দেয়া শুরু করেছে, এমনি একটা সময়ে দেশে বসতে যাচ্ছে এ যাবৎ কালের সর্ববৃহৎ ম্যাচ। যেখানে অংশ নেবে এদেশের তুমুল জনপ্রিয় আর্জেনটিনা এবং সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়া। ম্যারাডোনার দেশের হাই ভোল্টেজ সব খেলোয়াড়ই এখানে অংশ নেবেন। মেসী, তেভেজ কেউই বাদ পড়বেন না। শুধু বাদ যাবেন গত বছর দুই ধরে ফুটবলকে যারা বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট তারা।
মানে দেশের মধ্যবিত্ত আর খেটে খাওয়া মানুষগুলো। কারণ টিকিটের সর্বনিম্ন টিকিটের দাম সাড়ে সাত হাজার টাকা। যা অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের এক মাসের খাবার খরচ। যে পরিবারের মাসিক খরচ বার হাজার টাকা, সেই পরিবারের মানুষটি ৫০ টাকা খরচ করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসে দেশের খেলা দেখে মাঠের ফুটবলকে বাঁচালেও এবার তার আর দরকার নেই। কারণ বাফুফে এবার দায়িত্ব নিয়েছেন বাবুদের মাঠে আনার।
যারা কখনো মাঠে বসে খেলা দেখে না, যাদের জন্য কিছুদিন বাদে বাদে পাশের দেশের নায়ক নায়িকারা এদেশে এসে নেচে গেয়ে মনোরঞ্জন করে যান, তাদের জন্য এবারে বাফুফে নিয়ে আসছেন মেসীদের। এবার তারাই মাঠে আসবে, যারা রাত জেগে বার্সা আর মাদ্রিদের খেলা দেখে। আর দেশের মৃতপ্রায় খেলাটিকে একটু প্রাণ দিতে বললে নাক ছিটকায়, এবার তারাই মাঠে যাবে। কারণ তাদের আছে টাকা। সাদা না কালো সেটা কোন কথা নয়...।
টাকা টাকাই। তাই শাহরুখের নাচ যারা দেখার সুযোগ পায়, তারাই সুযোগ পাবে মেসীদের ফুটবল নৈপূন্য স্বচক্ষে দেখার।
আর এভাবেই বাবুদের মনোরঞ্জনে একটা ফুটবল ম্যাচ মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।